শেষ ষোলোয় যেতে পারবে তো? শোচনীয় হার ভুলে এখন এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে মেসি অন্ত প্রাণ আর্জেন্টিনার বঙ্গ ভক্তকুল সহ গোটা বিশ্বের। মারাদোনাকে সামনে রেখে যে দলটা বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম ত্রাস হয়ে উঠেছিল, যে দলে মেসি রয়েছেন, সে দলের এমন লজ্জাকর পরিস্থিতি মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই।
বিশ্বকাপের ডি গ্রুপে প্রথম ম্যাচে আইসল্যান্ডের সঙ্গে ড্র। তারপর বৃহস্পতিবার ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০ ব্যবধানে হার! আর্জেন্টিনার এমন দশায় হতাশ অনেকেই। শুরু থেকে খুব যে খারাপ আর্জেন্টিনা খেলছিল, তা কিন্তু নয়। বরং আক্রমণের ধরণে ক্রোয়েশিয়াকে বিপদেই ফেলছিল বারবার। একবার তো মেসি বলে পা ছোঁয়াতে পারলেই সামনে ছিল ফাঁকা গোল। ক্রোয়েশিয়া যে আক্রমণ হানছিল না তা কিন্তু নয়। তবে তাতে শুরুর দিকে ধার ছিল কম। কিন্তু রণকৌশলে তারা কোনও ভুল করছিলনা। মেসিকে রুখে দেওয়া কাজে এসেছে। বাদ বাকি সময় যত গড়িয়েছে ততই ক্রোয়েশিয়া তাদের খেলার ধার বাড়িয়েছে। প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনা চোখে পড়লেও দ্বিতীয়ার্ধে কিন্তু ক্রোয়েশিয়া খেলাকে আরও গুছিয়ে ফেলে।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলার ৫৩ মিনিটে প্রথম গোলটা আগে ক্রোয়েশিয়ার। রিবিক গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। অনেকটা আত্মবিশ্বাস সঞ্চয় করে ফেলে ক্রোয়েশিয়া। গোল খাওয়ার পর আক্রমণের গতি বাড়ানোর চেষ্টা যে আর্জেন্টিনা করেনি তা নয়। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার হোমওয়ার্কের সামনে গোলমুখে বারবার ব্যর্থ হতে থাকে তাদের সব চেষ্টা। ৮০ মিনিটের মাথায় ফের গোল পায় ক্রোয়েশিয়া। এবার গোল করেন মডরিক। ২-০-তে এগিয়ে যাওয়া ক্রোয়েশিয়ার সমর্থকেরা তখন বুঝে গেছেন আর্জেন্টিনা বধের স্বপ্ন বাস্তব হয়েছে। সেই সঙ্গে শেষ ষোলোয় পৌঁছনোর টিকিটও পাকা তাদের। ২ গোলে পিছিয়ে পড়া আর্জেন্টিনা তখন শেষ কামড় দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যর্থতা তাদের পিছু ছাড়েনি। মেসিকে মেসির মত করে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং ইনজুরি টাইমে ফের আর্জেন্টিনার জালে বল জড়িয়ে দেয় ক্রোয়েশিয়া। গোল করেন রাকিটিক।
ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০-তে হারার পর একদিকে যেমন আর্জেন্টিনার শেষ ষোলোয় পৌঁছনো বড় প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল। তেমনই ২ টো ম্যাচ খেলে ২ টো জিতে নিজেদের শেষ ষোলোর টিকিট পাকা করল ক্রোয়েশিয়া। এখন যা পরিস্থিতি তাতে আর্জেন্টিনাকে শেষ ষোলোয় পৌঁছতে নাইজেরিয়াকে হারাতেই হবে। তারপরও অঙ্কের হিসেব থেকে যাবে।