প্রথম ম্যাচে হারার পর শনিবার জিততেই হত জার্মানিকে। প্রতিপক্ষ সুইডেন। যাদের বড় দলকে আটকে দেওয়ার ইতিহাস সকলের জানা। সেই সুইডেনকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে শেষে ষোলোর পথ খুলে রাখল বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে হারাতে পারলেই শেষ ষোলোর টিকিট পাকা। এদিন কিন্তু বল দখলে জার্মানি অনেক এগিয়ে ছিল সুইডেনের থেকে। অন্যদিকে দ্বিস্তরীয় ডিফেন্স তৈরি করে এক ভয়ংকর রক্ষণাত্মক খেলা খেলে গেছে সুইডেন।
শনিবার খেলা শুরুর প্রথম মিনিট থেকেই তীব্র আক্রমণের পথে হাঁটেন জোয়াকিম লো-র ছেলেরা। ছোট ছোট পাসে বল দখলে রেখে প্রতিপক্ষের গোলে ২টি উইং থেকে ক্রস পাসে আক্রমণ হারতে থাকেন তাঁরা। বুঝিয়ে দেন তাঁদের পরিকল্পনাই অল আউট আক্রমণ। অন্যদিকে খেলার শুরু থেকেই সুইডেনকে প্রবল ডিফেন্সিভ স্টাইলে খেলতে দেখা গেছে। যেখানে প্রায় গোটা জার্মান দলটাই মাঝমাঠ পার করে উঠে আসছিল সুইডেনের গোলের দিকে, সেখানে গোটা সুইডেন দলটাই পরতে পরতে রক্ষণ সাজিয়ে তাদের রুখে দিতেই ব্যস্ত থেকেছে। সুইডেন রক্ষণাত্মক খেলার জন্যই পরিচিত। তবে এদিন বলই তো দখলে রাখতে পারছিল না তারা। কেবল প্রতিপক্ষকে রোখাই ছিল উদ্দেশ্য। প্রথম ১৫ মিনিটেই জার্মানি গোল পেয়ে যেতে পারত। কিন্তু একটুর জন্য মিস হয়েছে সুযোগ। জার্মানির এই আক্রমণ কিন্তু কিছুটা থিতিয়ে পড়ে ১৫ মিনিটের পর। প্রথম ম্যাচে ছন্নছাড়া জার্মানি দলটার রক্ষণের দুর্বলতা সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছিল। এদিনও জার্মানি যখন সুইডেনের গোলমুখে আক্রমণ হানতে উঠে আসছিল তখন তক্কে তক্কে ছিল সুইডেন। আর সুযোগ পেতেই কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে আসছিল তারা। মাঝেমধ্যে আসছিল। কিন্তু যে কটা এসেছে সবটাই ভয়ংকর হয়েছে। ৩২ মিনিটের মাথায় সেই কাউন্টার অ্যাটাকেই সুইডেনের হয়ে গোল করেন ওলা তোইভোনেন। এগিয়ে যায় সুইডেন। ফের চাপে পড়ে যায় জার্মানি। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১ গোলে পিছিয়ে থেকেই।
দ্বিতীয়ার্ধে কিন্তু কিছুটা হলেও ধরণ বদলায় জার্মানি। তবে আক্রমণ থামেনি। আর সেই আক্রমণেই সোচির সবুজ গালিচায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সুইডেনের গোলে বল জড়িয়ে দেন জার্মানির মার্কো রিয়াস। সমতা ফেরে খেলায়। এবার ছিল জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপানো। আরও ১টা গোল। জার্মানি সেই চেষ্টা চালিয়ে গেলেও সুইডেনের গোলমুখ আর খুলছিলনা। ৮২ মিনিটের মাথায় আরও বড় ধাক্কা আসে জার্মানির জন্য। জার্মান ডিফেন্সে খারাপ ট্যাকলের জন্য খেলার দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন জেহোম বোয়াটেং। ২টি হলুদ কার্ড মানেই লাল কার্ড। ফলে তাঁকে মাঠের বাইরে যেতে হয়। বাকি সময়টা জার্মানি ১০ জনের দলে পরিণত হয়। কিন্তু খেলা দেখে তা বোঝা যাচ্ছিলনা। সুইডেনের যে মাঠে ১টা খেলোয়াড় বেশি তা জার্মান আক্রমণে ঢাকা পড়ে যায়। অবশেষে ইনজুরি টাইমে আসে জার্মানির অতি প্রয়োজনীয় গোল। তাও আবার বাঁশি বাজার ঠিক আগের মুহুর্তে। এসময়ে একটি ফ্রি-কিক পায় জার্মানি। সুইডেনের গোলমুখে সেই ফ্রি কিক থেকে বুলেটের মত শটে টোনি ক্রুস জালে বল জড়িয়ে দেন। স্বপ্নের গোল আসে। জার্মানি জেতে ২-১ ব্যবধানে।