সংক্ষিপ্ত। তবে দুর্দান্ত। এটাই এককথায় রাশিয়ায় ২০১৮ সালে ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মোদ্দা কথা। যেখানে রূপকথা ছিল। সঙ্গীতের মূর্ছনা ছিল। স্বপ্নের রং ছিল। আর ছিল রাশিয়ার একান্ত নিজস্ব সংস্কৃতির ঝলক। কোনও একঘেয়েমি নেই। সামান্য সময়ে একটা পূর্ণাঙ্গ পারফর্মেন্স। পরে দু’চার কথায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভাষণ। ফিফা প্রেসিডেন্টের হাসিমুখে ২ মিনিটের বক্তব্য। যারপরই শুরু হল বিশ্বকাপের ফুটবল যুদ্ধ।
বিশ্বকাপের প্রথম দিনে ছিল একটাই ম্যাচ। গ্রুপ এ-র ২টি দল হোস্ট কান্ট্রি রাশিয়া ও সৌদি আরব এদিন মুখোমুখি হয়েছিল। শুরুতে সৌদি আরব ম্যাচে দখল নেওয়ার চেষ্টা করলেও বেশিক্ষণ মাঠে নিজেদের দক্ষতা ধরে রাখতে পারেনি তারা। ১২ মিনিটের মাথায় রাশিয়ার ইউরি গাজিনস্কির গোলে এগিয়ে যায় রাশিয়া। মাঠ ভরা সিংহভাগ সমর্থক তখন লাল-নীল-সাদার জন্য গলা ফাটাচ্ছেন। তাঁদের দেশেই যে খেলা। গোটা মাঠ চিৎকার করছে রাশিয়ার জন্য। খেলায় এরপর কিন্তু আধিপত্য বিস্তার করতে সময় নষ্ট করেনি রাশিয়া। যেটা তারা ধরে ফেলে তা হল সৌদি আরবের ডিফেন্সের দুর্বলতা। গোলের কাছে বড়সড় ফাঁক। ম্যান মার্কিংয়ের অভাব। আর সেইসব ফাঁক গলে রাশিয়ার আক্রমণ বারবার আছড়ে পড়তে থাকে সৌদি গোলমুখে।
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ২ মিনিট আগে ৪৩ মিনিটের মাথায় আসে দ্বিতীয় সাফল্য। ডেনিস চেরিশেভের গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় রাশিয়া। দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় ফেরার মরিয়া চেষ্টা চালাতে থাকেন সৌদি খেলোয়াড়েরা। কিন্তু রাশিয়ার শক্ত রক্ষণভাগ ও ফাঁক খোঁজা আক্রমণের পেশাদারিত্বের সামনে বারবার অসহায় হয়ে পড়তে থাকে সৌদি দলটা। খেলার ৭১ মিনিটের মাথায় আরতেম ডিজুবার গোলে ৩-০-তে লিড নেয় রাশিয়া। এখানেই খেলা শেষ বলে মনে হয়েছিল সকলের। মূল সময় ৯০ মিনিটে এরপর গোল আসেনি। ইনজুরি টাইম মেলে ৫ মিনিট। আর সেই ৫ মিনিটের প্রথম ৪ মিনিটে রাশিয়া রুশ রূপকথা লিখে দিয়ে যায় মস্কোর মাঠে।
৯১ মিনিটের মাথায় ডেনিস চেরিশেভের পা থেকে আসে দ্বিতীয় গোল। যা রাশিয়ার গোল ব্যবধানকে ৪-০-তে পৌঁছে দেয়। এর ঠিক ৩ মিনিট পর গোল লাইনের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় রাশিয়া। আর সেখানেই ফ্রি কিকে আলেকজান্ডার গোলোভিনের মাপা শট বারের গা ঘেঁষে সৌদি জালে জড়িয়ে যায়। আসে পঞ্চম গোল। প্রথম ম্যাচে ৫-০-এ সৌদি আরবকে হারিয়ে দেয় রাশিয়া। এদিন শুধু স্বপ্নের জয় বলেই নয়, রাশিয়া দলটা বুঝিয়ে দিল কতটা পরিশ্রম করে তারা তৈরি হয়েছে। বিশ্বমানের ফুটবলে প্রথমসারির দলগুলোকে টক্কর দিতে তারা যে সম্পূর্ণ তৈরি তা এদিন সৌদি বধের স্কিলেই পরিস্কার করে দিল তারা।
(ছবি – সৌজন্যে – ক্রেমলিন)