সন্দেহ হলে ছুটে যাওয়া যাবে সাইড লাইনে ড্রেসিং রুমে ঢোকার মুখের কাছে রাখা একটি টিভির দিকে। সেখানে দেখে নেওয়া যাবে ঠিক কী হয়েছে। তারপর ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির পরামর্শমত বদল করা যাবে সিদ্ধান্ত। দেওয়া যাবে পেনাল্টিও। এবারের বিশ্বকাপে এটা একটা বড় চমক। ক্রিকেটের মতই থার্ড আম্পায়ারের পরামর্শ নিতে পারবেন রেফারি। এমন হতেই পারে জটলার মধ্যে দূরে থাকা রেফারির কোনও ঘটনা নজর এড়িয়ে গেল। আর সেখানেই ঘটে গেল প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের সঙ্গে চোরাগোপ্তা কোনও অন্যায়। সে অন্যায়ের ফলে হতে পারত পেনাল্টিও। কিন্তু রেফারির তা নজর এড়ালে একটি দলের জন্য অবশ্যই তা হতাশার। অন্যায়ও। তাই এবার সেই সমস্যা মেটাতে রেফারিরা সন্দেহ হলে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির পরামর্শ নিতে পারবেন। ওই অংশটি টিভিতে দেখে নিতে পারবেন কাছ থেকে।
গত শনিবার বিশ্বকাপে এমন ২টি ঘটনা ঘটল। প্রথমে নজরে না পড়ায় খেলা রেফারি চালিয়ে যেতে বলেন। পরে অবশ্য ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির পরামর্শে সিদ্ধান্ত বদলে ২টি পেনাল্টিই দেন রেফারি। প্রথম পেনাল্টি হয় ফ্রান্স-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে। যেখানে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির পরামর্শে নজর এড়ানো চোরা ট্যাকলের মাশুল গুনতে হয় অস্ট্রেলিয়াকে। ফ্রান্স পেনাল্টি পায়। গোল করেন ফ্রান্সের স্ট্রাইকার গ্রিজম্যান।
একই ঘটনা ঘটে এর পরের পরের ম্যাচে। খেলা চলছিল ডেনমার্ক ও পেরুর মধ্যে। ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়া পেরু এদিন শুরু থেকেই ছন্দে খেলছিল। সবই করছিল। কিন্তু গোলটা করতে পারছিল না। ফিনিশারের অভাব বারবার নজর কাড়ছিল। খেলার প্রথমার্ধের প্রায় শেষে প্রতিপক্ষের গোললাইনের মধ্যে পেরুর ক্রিশ্চিয়ান কুয়েভাকে ফাউল করেন ডেনমার্কের স্টপার। কিন্তু রেফারি তা দেখতে পাননি। খেলা চালিয়ে যেতে বলেন। এর মিনিট খানেক পর রেফারি খেলা থামিয়ে ছুটে যান টিভির সামনে। পরামর্শ নেন ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির। তারপর সিদ্ধান্ত বদলে পেরুর পক্ষে পেনাল্টি দেন। যদিও সেই সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে পেরু। ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপে গোল করার সুযোগ হারান কুয়েভা। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ৫৯ মিনিটের মাথায় ডেনমার্কের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন ইউসুফ ইউরারি পলসেন।
এই পেনাল্টি কাহিনি বাদ দিলেও এদিন আরও একটি ঘটনা ঘটল রাশিয়ার মাঠে। আর্জেন্টিনা এদিন খেলতে নেমেছিল অপেক্ষাকৃত অনামী দল আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে। মেসির দলের জয়ের সম্ভাবনা ৯০ ভাগ ধরেই সকলে খেলা দেখতে বসেছিলেন। কিন্তু খেলায় যে দুর্বল আর্জেন্টিনাকে দেখা গেল তা নিয়ে কিন্তু রীতিমত জল্পনা শুরু হয়েছে। তার ওপর দলের তারকা খেলোয়াড় তথা গোটা দলের ভরসা লিওনেল মেসির পেনাল্টি মিস করা নিয়ে তো শোরগোল পড়ে গেছে। খেলায় আইসল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে আর্জেন্টিনা। প্রশ্ন উঠছে মেসির মত তারকার পেনাল্টি মিস নিয়ে। কথা উঠছে আর্জেন্টিনার এমন ম্যাড়ম্যাড়ে পারফর্মেন্স নিয়ে। এই দল নিয়ে বিশ্বকাপ জেতা যে মুশকিল তা মেনে নিচ্ছেন আর্জেন্টিনার অতি বড় সমর্থকও। গত শনিবারের খেলায় চরম হতাশ তাঁরা।