অঝোর বর্ষণ। কিন্তু বিশ্বকাপের পুরস্কার বিতরণী তো তার জন্য থেমে থাকবে না। তাই মঞ্চে হাজির রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ, ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্রাবার কিতরোভিচ। সঙ্গে দাঁড়িয়ে ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। সকলেই ভিজছেন। কেউ হাসছেন, কেউ হাসির তলায় কান্না লুকচ্ছেন। কারণ দিনের শেষে কাপ যাচ্ছে ফ্রান্সে। ফাইনালে পৌঁছেও অধরা রয়ে গেল কাপ ছোঁয়ার স্বপ্ন। এর মাঝেই কিন্তু বৃষ্টিতে ভিজে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে হাসি মস্করা করে নিজের দুঃখ চেপে রাখলেন এক ৫০ বছরের সুন্দরী। ফ্রান্স জিতলেও তাঁকে দেখতেই ব্যস্ত ছিল সবার চোখ।
বৃষ্টির মধ্যেই নিজের দেশের খেলোয়াড়দের জড়িয়ে ধরেছেন। আদর করে দিয়েছেন। হয়তো বলেছেন, কষ্ট পেয়োনা, তোমরা ভাল খেলেছ। কিন্তু সেই হাসির তলার অনেক কষ্ট লুকিয়ে রেখেছিলেন তিনি। কেবল তা একবারই প্রকাশ পেয়ে গেল। যখন দেশের ফুটবল দলের অধিনায়ক লুকা মারদিচকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি। আর পারলেন না। কেঁদে ফেললেন। অন্যদিকে লুকা ফাইনালে হারতে পারেন। কিন্তু তিনি জিতে নিয়েছেন প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁর মুখে একবারও সামান্য হাসির ছোঁয়া পর্যন্ত দেখতে পাওয়া যায়নি।
এরপরও রেফারি থেকে কোচ এবং অবশ্যই ফ্রান্সের প্রতিটি খেলোয়াড়কে জড়িয়ে ধরে অভিনন্দন জানিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার জার্সি গায়ে দেশের প্রেসিডেন্ট কিতরোভিচ। আর সবশেষে যখন ফিফা প্রেসিডেন্ট বিশ্বকাপ হাতে এগিয়ে যাচ্ছেন ফ্রান্সের খেলোয়াড়দের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য তখন আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি সুন্দরী প্রেসিডেন্ট। একমুখ হাসি নিয়ে একবার কাপটা হাতে ধরে চুম্বন করেই ফেললেন তাতে। সকলেই হেসে উঠলেন তাঁর কাণ্ড দেখে। তিনিও তাঁর কাণ্ডে কিছুটা লজ্জিত। কিন্তু এই চুম্বন যে কত কষ্টের তা হয়ত তখন কেউ বুঝলেন, কেউ বুঝলেন না। অনেক আশা ছিল এই কাপ নিয়ে, ছেলেদের নিয়ে দেশে ফিরবেন তিনি। ৪২ লক্ষ মানুষের দেশটার সামনে সদর্পে তুলে ধরবেন কাপটা, এঁকে দেবেন চুম্বন। দেখিয়ে দেবেন মাত্র ২৭ বছর আগে স্বাধীন দেশের তকমা পাওয়া এই ছোট্ট দেশটা ফুটবলে গোটা দুনিয়া কাঁপানোর ক্ষমতা রাখে। সেই সাজানো স্বপ্নভঙ্গের দুঃখ তো থেকেই যায়। তাই হয়তো দুধের স্বাদটা কিছুটা প্রোটোকল ভেঙেই বিশ্বকাপটা একবার ছুঁয়ে দেখে, একটা গভীর চুম্বনে সেরে নিলেন সোনালি চুলের এই মেমসাহেব প্রেসিডেন্ট।