রাজ্যে দ্বিতীয় দফায় বৃহস্পতিবার ছিল দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও রায়গঞ্জে ভোট। দার্জিলিং লোকসভা আসনের অন্তর্গত চোপড়ায় ভোট শুরুর কিছু পর থেকে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ ওঠে ভোটারদের ভোট দিতে যেতে দেওয়া হচ্ছেনা। তাঁদের পথ আটকাচ্ছে দুষ্কৃতিরা। ভোট দিতে যেতে না পেরে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ ছিল শুধু পুরুষ বলেই নয়, মহিলা ও বয়স্কদেরও ভোট দিতে যেতে দেওয়া হচ্ছেনা। তাঁদের মারধর করা হচ্ছে। ১৮০ নম্বর বুথে ভোট দিতে যেতে দেওয়া হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করে বিক্ষোভে সামিল হন ভোটারদের একাংশ। সাফ জানিয়ে দেন কেন্দ্রীয়বাহিনীর ঘেরাটোপে তাঁরা ভোট দিতে যাবেন। নচেৎ ভোট দেবেননা।
উত্তেজনা বাড়তে থাকায় চোপরার বড় অংশে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। চড়তে থাকে অশান্তির পারদ। পথ অবরোধ তুলতে এসে পুলিশ সকলকে আশ্বাসও দেয় তারা প্রহরা দিয়ে সকলকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাবে। কিন্তু পুলিশের সামনেই অবরোধকারীরা জানিয়ে দেন তাঁরা কেবলমাত্র কেন্দ্রীয়বাহিনী এলে তবেই ভোট দিতে যাবেন। কিছুক্ষণ পরে অবশ্য ভোটারদের নিয়ে ভোটকেন্দ্রের দিকে রওনা হয় পুলিশ।
যদিও চোপড়ায় অশান্তি থামেনি। অবস্থা আয়ত্তে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। দুষ্কৃতিদের আটকাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। এদিকে পাল্টা বোমা পড়ে কয়েকটি। উড়ে আসতে থাকে পাথর। বেশ কিছুক্ষণ এমন চলার পর ব়্যাফের প্রবল লাঠিচার্জের পর অবস্থা শান্ত হয়।
গ্রাম থেকে যাঁরা ভোট দিতে পারেননি তাঁদের কড়া প্রহরায় ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। ১৮০ নম্বর বুথে কেন্দ্রীয়বাহিনী দাঁড়িয়ে থেকে ভোটারদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করে। বেলায় তাই ১৮০ নম্বর বুথে ফের বিশাল লাইন নজর কাড়ে। এদিকে চোপড়ায় যে অশান্তি এদিন সকাল থেকে বেলা পর্যন্ত হয়েছে তা মাথায় রেখে গোটা ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন।
এদিন চোপড়া ছাড়াও কিছু জায়গায় অশান্তির ঘটনা ঘটে। ইসলামপুরে রায়গঞ্জের বাম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। গোয়ালপোখরে একটি বাংলা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিকে খবর সংগ্রহে বাধা দেওয়া হয়। তাঁকে বাঁশ, লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। মারধরে তাঁর মাথা ফেটে যায়। তাঁর সঙ্গে থাকা চিত্রসাংবাদিককেও মারধর করা হয়। এছাড়া কিছু জায়গায় ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ উঠেছে। কিছু জায়গায় বুথের সামনে কথা কাটাকাটির জেরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।