দেশ জুড়ে এখন ম ম করছে ভোটের গন্ধ। একের পর এক ভোটের দফা শেষ হচ্ছে। যেখানে পরে ভোট সেখানে প্রচার চলছে। এমনকি যেখানে ভোট হয়ে গেছে সেখান থেকেও ভোটের হাওয়া বিদায় নেয়নি। ফলে গোটা দেশ এখন ভোটময়। আর ভোট মানেই মানুষজন নিজের শহর ছেড়ে পরিবার নিয়ে বাইরে যেতে ভরসা পাননা। যদি কিছু হয়! তখন বিদেশ বিভূঁইয়ে মহা মুশকিল হবে! এমন একটা ভাবনা অনেকের মধ্যেই কাজ করে। ফলে দেশের অধিকাংশ পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের ভিড় লাটে উঠেছে। যেমন ভিড় নেই হরিদ্বারে।
পাহাড় হোক বা সমুদ্র, আধ্যাত্মিক স্থান হোক বা গহন জঙ্গল, কোথাও পর্যটক নেই। ফলে মার খাচ্ছে হোটেল ব্যবসা। মার খাচ্ছে দোকান। মার খাচ্ছে পর্যটনের ওপর বেঁচে থাকা মানুষের রোজগার। হরিদ্বারে সারা বছরই পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। এখানকার আধ্যাত্মিক টানেই হোক বা হিমালয়ের কোলে গঙ্গাতীরের এই প্রাচীন শহরের টানেই হোক। মানুষ বারবার ছুটে আসেন এখানে।
হর কি পৌরি ঘাট, গঙ্গার ধার, মানুষে মানুষে ছয়লাপ হয়ে থাকে। বিদেশি পর্যটক থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা মানুষের ভিড়ে হরিদ্বার সবসময়েই রমরম করে। সেই হরিদ্বার এখন ফাঁকা ধু ধু করছে। তাও আবার যাকে বলে একেবারে সিজন টাইমে!
হরিদ্বারের হোটেল মালিক থেকে বিভিন্ন দোকান মালিক, চায়ের দোকান থেকে স্থানীয় বাসিন্দা, সকলেই মেনে নিচ্ছেন এই সময়ে যে ভিড় হরিদ্বারে থাকে তার সিকি ভাগও এবার নেই। কেন নেই? তাঁদের সকলের একমত। ভোটের হাওয়া ভাটা ফেলেছে হরিদ্বারে। ফলে হোটেল মাছি তাড়াচ্ছে, দোকান ধু ধু করছে। খাবার দোকানে ভিড় নেই। চায়ের দোকানে ভিড় নেই।
যে হর কি পৌরি ঘাটে সন্ধ্যারতি তো বটেই এমনকি দিনভর মানুষের ভিড় জমে থাকে সেখানে পর্যন্ত হাতে গোনা মানুষ ইতি উতি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সেদিক থেকে দেখলে হরিদ্বার শহরটাকে খুঁটিয়ে দেখার বোধহয় এটাই সবচেয়ে ভাল সময়। তাও আবার কম খরচে!
গঙ্গার ধারেও মানুষের ভিড় নেই। ভিড় নেই হরিদ্বারের রাস্তাঘাটে। ফলে অনেক হোটেলই এখন রেট কমিয়ে দিয়েছে। এই সময়ে ঘরের যে রেট থাকে তার অর্ধেক হয়ে গেছে ঘর ভাড়া। তবু মানুষের দেখা নেই। ফলে সকলেই এখন চেয়ে আছেন কবে ভোট মিটবে তার দিকে। ভোট মিটলে ফের হরিদ্বার ভরে উঠবে মানুষের ভিড়ে। চেনা ছবিটা ফের ফিরে পাবেন স্থানীয়রা। হাসি ফুটবে পর্যটনের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এই শহরটার মুখে। সেই আশাতেই বুক বাঁধছেন সকলে।