প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় সকাল থেকে যেভাবে নানা জায়গায় অশান্তির খবর পাওয়া যাচ্ছিল তৃতীয় দফায় কিন্তু তেমনটা হচ্ছিল না। বরং মঙ্গলবার সকাল থেকে তৃতীয় দফায় রাজ্যে ৫ কেন্দ্রে ভোট চলছিল মোটের ওপর শান্তিতেই। বেলা পর্যন্ত ছোটখাটো ঝঞ্ঝাট বাদ দিলে এমন শান্তিপূর্ণভাবে ভোট চলায় অনেকেই মনে করছিলেন তৃতীয় দফা শান্তিতেই উতরে গেল রাজ্যে। কিন্তু তাঁদের ভুল ভাঙল দুপুরে। প্রথম ও দ্বিতীয় দফাকে ছাপিয়ে তৃতীয় দফায় রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে বলি হলেন ১ জন। রক্তাক্ত হল মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের ভগবানগোলা।
মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের ভগবানগোলার বালিগ্রামের ১৮৮ নম্বর বুথের সামনে সকাল থেকেই একটা চাপা উত্তেজনা ছিল। সেই উত্তেজনা মারামারির পর্যায়ে পৌঁছয় দুপুরে। সরাসরি সম্মুখসমরে নামেন কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকেরা। স্থানীয় মানুষ জানাচ্ছেন, ওই সময় সংঘর্ষ চলাকালীন পুলিশ যথেষ্ট সংখ্যায় ছিলনা। দেখা মেলেনি কেন্দ্রীয়বাহিনীরও।
বুথের কিছুটা দূরেই সংঘর্ষ শুরু হয়। সেইসময় ছেলেকে নিয়ে ভোট দিতে গিয়েছিলেন টিয়ারুল শেখ। তাঁর ছেলে এবারই প্রথম ভোট দিচ্ছেন। কেরালায় কর্মরত ছেলে কদিন হল বাড়ি এসেছেন। ছেলে জীবনের প্রথম ভোট দিতে গিয়েছিলেন বাবার সঙ্গে। সেই সময় সংঘর্ষের মাঝে পড়েন তাঁরা।
স্থানীয়দের কয়েকজনের দাবি, সে সময়ে টিয়ারুল শেখের সঙ্গে সংঘর্ষরত কয়েকজনের কথা কাটাকাটি হয়। আর তখনই ছেলের সামনেই টিয়ারুলের পেটে হাঁসুয়ার কোপ মারা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটেন ছেলে। হাসপাতালেই মৃত্যু হয় টিয়ারুলের। ঘটনার পর অবশ্য স্থানীয় কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয় টিয়ারুল তাদের কর্মী। কিন্তু টিয়ারুলের পরিবারের দাবি তিনি সাধারণ ভোটার। কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত নন। এদিকে সংঘর্ষে কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের ১ জন করে কর্মীও গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।
রাজ্যে ভোটের বলি হলেন ১ জন। রক্তাক্ত হল লোকসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার রিপোর্ট জেলা প্রশাসনের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে ঘটনার জেরে বেশ কিছুক্ষণ ভোট প্রক্রিয়া কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় বালিগ্রামে। পরে প্রচুর পুলিশ এলাকায় হাজির হয়। ফের ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
(সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা)