সকালে আসানসোলের বারাবনিতে বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়-র গাড়ি ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। একটি বুথে ঢুকে তৃণমূল এজেন্টকে কড়া কথা শোনান বাবুল। তারপরই তাঁর গাড়ি ভাঙচুর হয়। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। সব মিলিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। এই নিয়ে শুরু হয় রাজ্যের ৮ কেন্দ্রে চতুর্থ দফার নির্বাচন। তারপর বেলা যত বেড়েছে ততই বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর এসেছে। বুথে মোবাইল ফোন নিয়ে ঢোকাকে কেন্দ্র করে দুবরাজপুরে প্রবল অশান্তি ছড়ায়। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কেন্দ্রীয়বাহিনীর সংঘর্ষ বাঁধে।
অশান্তি হয় নানুরেও। নানুরে এদিন সকাল থেকেই ভোটকে কেন্দ্র করে চাপা উত্তেজনা ছিল। বেলা বাড়লে ২১৭ নম্বর বুথে ভোটারদের বুথে যেতে বাধার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা দাবি করেন তাঁদের ভোটারদের বুথে যেতে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল। এভাবে কিছুক্ষণ চলার পর পাল্টা বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা চালান। উত্তেজনা চরমে ওঠে। বাঁশ, লাঠি, চেলাকাঠ নিয়ে বিজেপি সমর্থকেরা তৃণমূল কর্মীদের তাড়া করেন। ছিলেন বহু মহিলাও।
তাড়া খেয়ে সেখান থেকে চম্পট দেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। তাতে অবশ্য অশান্তি থামেনি। ভোটের দিন তৃণমূলের তরফে মুড়ি, তরকারি সহ বিভিন্ন পদ রান্না করে খাওয়া দাওয়ার বন্দোবস্ত ছিল। তৃণমূলের নির্বাচনী কার্যালয়ের কাছেই এই রান্নাবান্নার ব্যবস্থা হয়েছিল। সেখানে হামলা চালায় মারমুখী জনতা। খাবারদাবার লণ্ডভণ্ড করে গ্যাস সিলিন্ডার, গ্যাস স্টোভ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী এসে অবস্থা আয়ত্তে আনে।
নলহাটিতেও অশান্তি ছড়ায়। এখানে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। হাবিসপুরে বিজেপি সমর্থকদের ভোট দিতে না দেওয়া অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অনেক ভোটার ভোট দিতে পারেননি। পরে বিজেপি পাল্টা চড়াও হয়। দুপক্ষে সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশের বিশাল বাহিনী এসে অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে। অবস্থা সামাল দিতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। পরে বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা একসঙ্গে হয়ে ভোট দিতে যান।
ভোটে অশান্তি হয়েছে পাণ্ডবেশ্বরেও। এখানে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগে উত্তেজনা ছড়ায়। বর্ধমানের রায়নাতেও বুথ জ্যামের অভিযোগ সামনে এসেছে। অভিযোগের আঙুল ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। এছাড়া মুর্শিদাবাদের সালার, বহরমপুরেও অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ভোটের শেষ লগ্নে পৌঁছে নদিয়ার হাঁসখালিতে ব্যাপক বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। বোমার আঘাতে আঘাত পান ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরা এক মহিলা। বীরভূমের রামপুরহাট ও পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থেকেও সকাল থেকেই বুথ দখল ও ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ সামনে এসেছে।
বহরমপুরে কংগ্রেস প্রার্থী অধীররঞ্জন চৌধুরী অভিযোগ করেন বুথে আসতে ভোটারদের বাধা দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। কৃষ্ণনাথ কলেজের বুথে ভুয়ো ভোটারদের তাড়া করেন তিনি। পরে তাঁর অনুগামীরা ১ জনকে ধরে মারধরও করেন। পরে যদিও তৃণমূল কর্মীরা এসে ওই যুবককে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। বীরভূমের ল বাগানে তাঁরা যাতে ভোট দিতে যেতে না পারেন সেজন্য গ্রামবাসীদের একটি বাড়িতে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পরে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের হস্তক্ষেপে ভোটাররা ভোট দেন।