পঞ্চম দফায় রাজ্যে ৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হল। যারমধ্যে রয়েছে ব্যারাকপুর, আরামবাগ, শ্রীরামপুর, বনগাঁ, হুগলি, হাওড়া ও উলুবেড়িয়া। সকাল থেকেই ব্যারাকপুর কেন্দ্র ছিল খবরেরে শিরোনামে। একের পর এক অশান্তির ঘটনা ঘটে এখানে। বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে খোদ পুলিশেরই ধস্তাধস্তি লেগে যায়। অন্যত্র হুগলির কয়েক জায়গায় ছাপ্পা ভোটের অভিযোগে সরব হন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া ছোটখাটো ঝামেলা-ঝগড়া, বুথের সামনে ভিড়, ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ এসব আসছিল। কিন্তু দুপুরের দিকে অশান্তি ছড়ায় বনগাঁ কেন্দ্রের হিংলি ও তার আশপাশে।
বনগাঁর হিংলিতে বুথের সামনে বোমা পড়ে। পরে যারা বোমা মারে তারা আরও কয়েক জায়গায় বোমা ফাটিয়ে পালায়। বোমার ঘায়ে জখম হন এক প্রৌঢ় তৃণমূল কর্মী। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরই এলাকায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল সমর্থকেরা। তাঁদের দাবি, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতিরাই একাজ করেছে। দ্রুত সেখানে হাজির হয় কেন্দ্রীয়বাহিনী ও পুলিশ। ততক্ষণে হিংলির চারধার থেকে একের পর এক বোমার আওয়াজ আসতে থাকে। অবস্থা সামাল দিতে সেখানে রুটমার্চ শুরু করে পুলিশ। বোমার আঘাতে এক পুলিশকর্মীও জখম হন।
দুপুরে শ্রীরামপুর কেন্দ্রের জগদীশপুরে একটি বুথের সামনে হাজির হন বিজেপি প্রার্থী দেবজিৎ সরকার। সঙ্গে ছিলেন বেশ কয়েকজন। বিজেপিকর্মীদের দাবি ওই বুথে তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতা অনেক ছেলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বলে তাঁরা জানতে পারেন। সেখানে পৌঁছলে দেবজিতবাবুর গায়ে হাত না পড়লেও তাঁর এক সহকারীকে আক্রমণ করেন কয়েকজন। এতে তাঁর মুখ ফেটে যায়। পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে অবস্থা সামাল দেয়। পরে দেবজিৎ সরকার নিজেই এগিয়ে এলে ওখান থেকে তৃণমূলকর্মীরা চলে যান।
হাওড়ার ২৬১ নম্বর বুথে বিজেপির এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তাঁর নাক ফেটে যায়। ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এদিকে হাওড়াতেই এদিন বুথে ঢুকতে বাধা পান তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে বিজেপির উত্তরীয় গলায় ঝুলিয়ে ঠাকুরনগরের একটি বুথে ভোট দেওয়ায় বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরকে ঘিরে বিতর্ক ছড়ায়। এখানে প্রিজাইডিং অফিসারকে সরিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন।
হুগলির ধনেখালির মুইদিপুরে একটি বুথে সোমবার দুপুরে ঢুকে সেখানে ছাপ্পা ভোট হচ্ছে বলে দাবি করেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। সেখানে উত্তেজিত হয়ে পড়েন তিনি। সে সময়ে আচমকাই এক ব্যক্তি ঢুকে ইভিএমটি আছাড় দিয়ে ভেঙে দিয়ে যায়। সেখান থেকে লকেট চট্টোপাধ্যায় বেরিয়ে যান। তারপরই তৃণমূলকর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলির ওপর গিয়ে পড়ে রোষ। যেখানে সংবাদমাধ্যমের গাড়িও ভাঙচুর হয়। এদিকে ধনেখালিতেই লকেট চট্টোপাধ্যায় বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তাঁর সঙ্গে রীতিমত উচ্চস্বরে কথা কাটাকাটি শুরু হয় কয়েকজনের।