সপ্তম ও শেষ দফার নির্বাচনেও অশান্তি পিছু ছাড়ল না। সকালে ভোট শুরুর পর থেকই বিভিন্ন জায়গা থেকে টুকটাক অশান্তির খবর আসতেই থেকেছে। এদিন সকলকে অবাক করে অনেকদিন পর খোদ কলকাতার বুকে ভোটের দিন বোমা পড়ল। বোমা পড়ে রবীন্দ্র সরণির ওপর। কাছেই জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি। পুরনো কলকাতা। সেখানে ট্রামলাইনের ওপর বোমা পড়ে। বাইকে করে এসে দুষ্কৃতিরা ২টি বোমা মেরে পালায়। দ্রুত পুলিশ এলাকা ঘিরে ফেলে। ভোটারদের মধ্যেও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পরে অবশ্য ফের আশপাশের বুথগুলিতে ভোটারদের স্বাভাবিক ভোটদান শুরু হয়। পার্ক সার্কাসের একটি বুথে রবিবার ভোট কেমন হচ্ছে তা দেখতে প্রবেশ করেছিলেন বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহা। কলকাতা উত্তরের বিজেপি প্রার্থী সেখান থেকে বার হতেই তাঁকে লক্ষ্য করে উড়ে আসে ইট। ইটের ঘায়ে আহত হন এক সাংবাদিক। তবে রাহুল সিনহা অক্ষতই ছিলেন। পরে সেখান থেকে তিনি নিশ্চিন্তেই বার হয়ে যান।
যাদবপুরের বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরার দাবি একটি বুথে হাতে কালি লাগানোর পর ভোটারদের ভোট দিতে না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাঁর হয়ে ভোট দিচ্ছেন অন্য কেউ। এই অভিযোগ পেয়ে সেখানে হাজির হলে তাঁকে ঘিরে মহিলারা বিক্ষোভ দেখান। অনুপমবাবুকে বুথ ছেড়ে চলে যেতে বলেন। শান্তিপূর্ণ ভোট প্রক্রিয়ায় তিনি অশান্তি পাকাচ্ছেন বলে অভিযোগ করতে থাকেন। এই অবস্থায় বাইরে বেরিয়ে আসেন অনুপম হাজরা। বিজেপির একটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘিতে এদিন দুপুরে প্রবল বোমাবাজি শুরু হয়। তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে এই বোমাবাজি হয় বলে খবর। খোলা মাঠের ২ ধারে ২ পক্ষ দাঁড়িয়েছিল। মাঝে মাঠটা ছিল বদ্ধভূমি। সেখানে ২ দিক থেকে বোমা পড়তে থাকে। শুরু হয় ছোটাছুটি। আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। ডায়মন্ডহারবারের বিজেপি প্রার্থী নিরঞ্জন রায়ের গাড়িও এদিন আক্রান্ত হয়। বজবজে তাঁর গাড়ির ওপর চড়াও হয় দুষ্কৃতিরা। তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
অশান্তির খবর এসেছে যাদবপুর লোকসভা আসনের অন্তর্গত ভাঙর থেকেও। ভাঙরের একটি বুথে সিপিএম এজেন্টকে বসতে দেওয়া নিয়ে সিপিএম প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ হয়। বিকাশবাবু সিপিএম এজেন্টকে বুথে বসিয়ে আসার পরই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়।
খাস কলকাতার ফুলবাগান এলাকাতেও দুপুরের দিকে একটি আবাসনের সামনে বেশ কয়েকটি বোমা ফেলে যায় দুষ্কৃতিরা। কিন্তু কোনও কারণে বোমাগুলি ফাটেনি। পরে পুলিশ এসে বোমাগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এছাড়া মিনাখাঁয় বিজেপি কর্মীরা সকালে পথ অবরোধ করেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল তাঁদের ভোট দিতে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় বুথ জ্যাম, মন্থর গতিতে ভোটগ্রহণ, ইভিএমের সমস্যা, ভোট আগে পড়ে যাওয়া নিয়ে অসন্তোষ, এসব ঘটনার ছবি উঠে এসেছে। এসব অশান্তির বাইরে ভোট হয়েছে মোটামুটি শান্তিতেই।