রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপের মধুর প্রতিশোধ নিল ভারত
ভারত পাকিস্তান ম্যাচ মানেই একটা টানটান উত্তেজনা। আর সেই ম্যাচে রবিবার দুবাইয়ের মাঠে বিশ্বকাপের মধুর প্রতিশোধ নিল রোহিত শর্মার ভারত।
বিশ্বকাপে হারের যন্ত্রণায় প্রলেপ দিলেন রোহিত শর্মার ছেলেরা। বাবর আজম, মহম্মদ রিজওয়ানের পাকিস্তানকে রবিবার রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হারিয়ে দিল ভারত। এশিয়া কাপের এই ম্যাচ ঘিরে টানটান উত্তেজনা ছিলই। এশিয়া কাপে এই নিয়ে পাকিস্তানকে ৯ বার হারাল ভারত।
এদিন প্রথমে ব্যাট করে ভারতীয় বোলিং আক্রমণের মুখে পাকিস্তান ১৪৭ রান করে উঠতে পারে। প্রথমে এই রান তোলা সহজ হবে বলে মনে হলেও পাকিস্তানের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের মুখে কার্যত এক সময় ভারতের জয় আসবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরাও।
কিন্তু রবীন্দর জাদেজার মাটি আঁকড়ে লড়াই এবং শেষে হার্দিক পাণ্ডিয়ার চোখ ঝলসানো ব্যাট খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। শেষ ৩ ওভার হয়ে ওঠে রুদ্ধশ্বাস। আর তাতে শেষ হাসি হাসে ভারতই।
টস জিতে প্রথমে পাকিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠান রোহিত শর্মা। দুবাইয়ের বড় মাঠে বড় রানের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামে পাকিস্তান। বাবর আজম আর মহম্মদ রিজওয়ান জুটি বিশ্বকাপে ভারতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল। তাই সেই জুটি ভাঙাটাই ছিল চ্যালেঞ্জ। আর সেটা ভেঙে দেন ভুবনেশ্বর কুমার।
বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যান বাবর আজমকে ফিরিয়ে দেন প্যাভিলিয়নে। যা অবশ্যই পাকিস্তানের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। অন্যদিকে ভারতের জন্য স্বস্তির।
এরপর ফখর জামানও প্যাভিলিয়নে ফেরেন। তবে রান কিছুটা হলেও গতিতে তুলতে থাকেন পাকিস্তানের আর এক ভরসা রিজওয়ান।
হার্দিক বল করতে এসেই ফেরান রানের গতি ফেরানোয় মরিয়া ইফতিকার আহমেদকে। তবে পাকিস্তানের জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসে ১৪ তম ওভারে। এক ওভারে রিজওয়ান ও খুশদিল শাহকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে খেলার মোড় ভারতের দিকে ঘুরিয়ে দেন হার্দিক।
এরপর আসিফ আলি ও মহম্মদ নওয়াজ ফিরলেও আরও এক ধাক্কা আসে ১৯ তম ওভারে। পরপর ২ বলে শাদাব খান এবং নাসিম শাহকে ফিরিয়ে দেন ভুবনেশ্বর। তবে ইনিংসের শেষে শাহনওয়াজ দাহানির আগুনে ব্যাটে ভর করে পাকিস্তান পৌঁছয় ১৪৭ রানে। ১ বল বাকি থাকতেই সব উইকেট পড়ে যায় পাকিস্তানের।
জয়ের জন্য ১৪৮ রান দরকার ছিল ভারতের। যা খুব কঠিন লক্ষ্য মোটেও ছিলনা। ব্যাট করতে নেমে কিন্তু ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই কেএল রাহুলকে বোল্ড করে ফেরান নাসিম শাহ।
এরপর বিরাট ও রোহিত খেলা ধরার চেষ্টা চালান। বিরাট কয়েকবার বাঁচলেও রানের গতি ধরে রাখার চেষ্টা চালান। কিন্তু পরপর রোহিত ও বিরাট ফেরেন মহম্মদ নওয়াজের বলে। ফলে চাপ বাড়ে ভারতের ওপর।
১০ ওভারের শেষে ভারত ৩ উইকেট হারিয়ে করে ৬২ রান। এরপর জাদেজা ও সূর্যকুমার যাদব লড়াই দিলেও সূর্যকুমারকে বোল্ড করে ফেরান নাসিম শাহ। এরপরই রবীন্দর জাদেজা এবং হার্দিক পাণ্ডিয়া খেলার ক্রমশ মোড় ঘোরাতে থাকেন।
শেষ ৩ ওভার হয়ে ওঠে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে পাকিস্তানের সবচেয়ে সফল বোলার নাসিম শাহ-র বলকে আক্রমণ করা দিয়ে শুরু হয় ভারতের অন্য ব্যাটিং। যেখানে মূল দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন হার্দিক।
মাত্র ২ ওভারে হার্দিকের আগুনে ব্যাট খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। শেষ ওভারে জাদেজা আউট হলেও হার্দিক ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে দেন। ভারত জেতে ৫ উইকেটে।