Sports

নীল সাদার বিশ্বজয়, মারাদোনার পর মেসির হাতে বিশ্বকাপ

যে কোনও ফুটবলারের জীবনের স্বপ্ন হয় বিশ্বকাপে হাত ছোঁয়ানো। আর তারকা হলে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকে গোটা দেশ। অবশেষে মারাদোনার পর দেশকে নিরাশ করলেন না লিওনেল মেসি।

ফ্রান্স পরপর ২ বার বিশ্বজয় কি করতে পারবে? নাকি মেসি ফুটবলকে বিদায় জানানোর আগে দেশকে বিশ্বকাপটা উপহার দিয়ে যেতে পারবেন? এটাই ছিল লাখ টাকার প্রশ্ন।

রবিবার ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্তও এই প্রশ্নটা নিয়ে চলছিল চাপানউতোর। ভারতের সিংহভাগ অবশ্য তাকিয়েছিল মেসির বিশ্বজয়ের দিকে। মনেপ্রাণে সকলে অপেক্ষায় ছিলেন মেসির হাতে উঠুক বিশ্বকাপ। কাতারে শেষ হাসি হাসুক আর্জেন্টিনা।


রোনাল্ডো, লুকা মদ্রিচ বা নেইমারের আশাভঙ্গ হলেও লিওনেল মেসির স্বপ্নটা পূরণ হোক। তাঁদের সেই আশা খেলা শুরুর পর থেকেই মনে হতে শুরু করে সফল হবে।

কারণ খেলা শুরুর পর থেকেই মাঠ জুড়ে রাজত্ব করতে থাকে আর্জেন্টিনা। ফ্রান্সকে আক্রমণে যেতেই দেখা যায়নি। অন্যদিকে আর্জেন্টিনা বারবার আক্রমণ হানতে শুরু করে ফ্রান্সের গোলমুখে।


খেলার ২৩ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। শট নিতে এসে কিন্তু ভুল করেননি মেসি। জালে বল জড়াতে কোনও অসুবিধা হয়নি। গোলের হাত ধরে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।

প্রথম গোলের ১৩ মিনিট পর মেসির থ্রু করা একটি বল নিয়ে পাল্টা আক্রমণে যাওয়া আর্জেন্টিনা দি মারিয়ার শট থেকে ফের গোল পায়। ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।

বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালের ললাটলিখন প্রায় স্পষ্ট হয়ে যায় খেলার ৩৬ মিনিটের মাথাতেই। আন্দাজ করতে পারে কলকাতাও। ফলে শুরু হয়ে যায় অকাল দিওয়ালী। খেলা যদিও তখনও অনেকটা বাকি। ঢাকঢোল নিয়ে রাস্তাতেও বেরিয়ে পড়েন অনেক তরুণ।

খেলার প্রথমার্ধে ফ্রান্সকে লড়াই করতেও দেখা যায়নি। দ্বিতীয়ার্ধে তারা কিছুটা হলেও আক্রমণ বাড়ানোর চেষ্টা করে। তবে তার ধার তেমন ছিলনা।

অন্যদিকে ২ গোলে এগিয়ে থেকেও আর্জেন্টিনা আক্রমণ থামায়নি। খেলার সব ছবি বদলে যায় ৮০ মিনিটের মাথায় এসে। ম্যাচের তখন আর ১০ মিনিট বাকি। আর্জেন্টিনা ২ গোলে এগিয়ে। সেখানে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স।

জালে বল জড়াতে ভুল করেননি এমবাপে। ২-১ হয় ফল। এটাও ট্যুইস্ট ছিলনা। ট্যুইস্ট আসে ঠিক ১ মিনিট পর। ৮১ মিনিটের মাথায় বাড়ানো পাসে শরীরটাকে অনেকটা মুচড়ে সপাট শটে বল আর্জেন্টিনার জালে ফের জড়িয়ে দেন এপবাপে। যে খেলাটা ৭৯ মিনিটের মাথায় ২-০ ছিল। সেই খেলা ৮১ মিনিটের মাথায় ২-২ হয়ে যায়।

খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ১০৮ মিনিটের মাথায় ফ্রান্সের গোলকিপারের হাতে লেগে ফেরা বলে শট করে গোল করে ফের আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন মেসি।

কিন্তু খেলা শেষ হওয়ার ঠিক ২ মিনিট আগে পেনাল্টি থেকে গোল করে আবার খেলায় সমতা ফেরান সেই এমবাপে। খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকারের জন্য ফ্রান্সের প্রস্তুতিতে যে ঘাটতি ছিল তা স্পষ্ট ধরা পড়ে এদিন। আর্জেন্টিনা যেখানে তাদের ৪টি শটই জালে জড়ায় সেখানে ফ্রান্স মাত্র ২টি শট গোলে জড়াতে সক্ষম হয়। ২টি মিস। এখানেই স্পষ্ট হয়ে যায় ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের জয়ী দল।

১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন মারাদোনা। তারপর ২০২২ সালে ফের মেসির হাতে উঠল বিশ্বকাপ। নীল সাদার জয় আর্জেন্টিনার সঙ্গে প্রায় সমান আনন্দে পালন করল ভারতের নানা প্রান্তও।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button