বিপদ এলে অন্য গাছকে সতর্ক করে দেয় এই গাছ, কীভাবে সেটাও চিত্তাকর্ষক
দরজায় বিপদ সম্বন্ধে কোনও প্রাণি জানতে পারলে সে অন্যদেরও সতর্ক করে। কিন্তু একটা গাছও যে অন্য গাছকে সতর্ক করতে পারে এটা ভাবতেও অবাক লাগতে পারে।
প্রাণিদের পক্ষে অন্য প্রাণিদের বিপদ সম্বন্ধে সতর্ক করা সহজ। সে ছোটাছুটি, অঙ্গভঙ্গি, চিৎকার, নানা রকম ডাক এবং এমন নানা ভাবে তারা সতর্ক করার পথ খুঁজে নেয়। কিন্তু আপাত স্থবির গাছ, যে ডাকতেও পারেনা, নড়তেও পারেনা, সে কীভাবে বিপদ এলে অন্য গাছকে সতর্ক করতে পারে এটা ভাবতে অনেকের অবাক লাগতেই পারে। কিন্তু এটাই হয়। আফ্রিকায় এক ধরনের গাছ যথেষ্ট নজর কাড়ে, যারা একে অপরকে আসন্ন বিপদ টের পেলে আগেই সতর্ক করে দেয়।
আফ্রিকার সাভানা প্রান্তরে অত্যন্ত পরিচিত গাছ হল আকাসিয়া। সাভানা জুড়েই ছড়িয়ে আছে অগুনতি আকাসিয়া। যখন হরিণ বা এমন কোনও প্রাণি এই আকাসিয়া গাছের পাতা খাওয়া শুরু করে তখন গাছ তার পাতা রক্ষা করতে দ্রুত তৎপর হয়ে ওঠে। তারা ট্যানিন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ট্যানিন এমন এক বিষাক্ত পদার্থ যা গাছটি উৎপাদন বাড়িয়ে দিলে হরিণ বা এ ধরনের তৃণভোজী প্রাণিরা এর থেকে দূরে চলে যায়।
কোনও আকাসিয়া গাছে হানা হলে সে নিজেকে রক্ষা করতে যেমন ট্যানিন উৎপাদন বাড়ায় তেমনই আশপাশের অন্য আকাসিয়া গাছকে সতর্ক করতে শুরু করে। যে তারাও এবার আক্রমণের মুখে পড়তে পারে। কীভাবে সতর্ক করে?
হরিণের এই পাতা খাওয়ার হানায় আক্রান্ত আকাসিয়া গাছটি ইথিলিন গ্যাস বাতাসে ছাড়া শুরু করে দেয়। যা দ্রুত বাতাসের সঙ্গে মিশে আশপাশের সব আকাসিয়া গাছ পর্যন্ত সহজে পৌঁছে যায়।
এই গ্যাস অন্য আকাসিয়া গাছের সংস্পর্শে এলে সেই গাছ বুঝে যায় যে বিপদ আসছে। তাই বিপদ আসার আগেই তারা তখন ট্যানিন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়।
ফলে তাদের পাতা খেতে অন্য প্রাণি এলেও অতিরিক্ত ট্যানিনের উপস্থিতি বুঝতে পেরে দ্রুত সে গাছ থেকে দূরত্বে চলে যায়। এভাবেই নিজে বিপদে পড়লে অন্যকে আগেই সতর্ক করে দেয় আকাসিয়া গাছ।