মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তির অন্যতম ঈর্ষা। তারই নিশানায় এল এক পরিশ্রমী প্রাণি। নাম ঘোড়া। ভাবছেন, ঘোড়াকে হঠাৎ ঈর্ষা করার মত কি হল! সম্প্রতি ঘোড়ার বিশ্রামের ঠিকানা বদলাতেই ঘটেছে বিপত্তি! দুরন্ত দৌড়বাজদের বিশ্রামাগার বলতে এতদিন শুনে এসেছি খড়ের গাদা বিছানো আস্তাবলের কথা। এখন তারাই যদি পাঁচতারা হোটেলে শুয়ে বসে, থুড়ি দাঁড়িয়ে বিলাসের স্রোতে গা ভাসায়, তবে ঈর্ষা হওয়া খানিকটা স্বাভাবিক। কাতারের একটি রিসর্ট এজন্য দায়ী।
ঘোটকদের আরাম দিতে এই হোটেলে রাখা হয়েছে এলাহি বন্দোবস্ত। কি নেই হোটেলটিতে! সারাদিনের দৌড় ঝাঁপে ক্লান্ত অশ্বকুলের মনোরঞ্জন করতে রিসর্টটি সাজানো হয়েছে সুইমিং পুল, বিউটি পার্লার দিয়ে। পরিশ্রমী ঘোড়াদের ঝকঝকে করে তুলতে স্পায়ের ব্যবস্থা আছে সেখানে। ঘোড়াদের তাগড়াই করতে আছে জিমখানা। সেখানে ঘোড়াদের প্রশিক্ষণ দিতে আছেন বেশ কয়েকজন জিম প্রশিক্ষক। প্রতিদিন নিয়ম করে ঘোড়াগুলিকে ‘গ্রুম’ করাই তাঁদের কাজ। ঘোটকদের পরিচর্যার উদ্দেশ্যে নির্মিত ‘আল শাকাব’ নামে বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেলটির আকারও তাই ঘোড়ার পায়ের ক্ষুরের মত।
এমনিতে মরুপ্রদেশীয় কাতার দিনেরবেলা মারাত্মক দাবদাহ জ্বলতে থাকে। সূর্যের প্রখর তেজ অনেকসময় কাবু করে দেয় ঘোড়াদের। তাই প্রায় ৭৪০টির মত ঘোড়ার শরীরমন জুড়োতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের ব্যবস্থা আছে হোটেলে। আছে ঘোড়াদের পেট ও প্রাণ ভরে খাওয়াদাওয়ার সুন্দর ডাইনিং হল। এটুকুতেই থেমে নেই ঘোড়াদের খাতিরযত্ন। সব কিছু ঠিকঠাক চললে আর কিছুদিনের মধ্যে ঘোটক, ঘোটকী ও তাদের পরিবারের জন্য সবুজ গালিচায় মোড়া সাততারা হোটেল খোলার ইচ্ছা আছে আল শাকাবের। এসবের পাশাপাশি হর্স রাইডিং, ঘোড়ার প্রতিপালন পদ্ধতি ইত্যাদি সম্পর্কে আগামী প্রজন্মকে প্রশিক্ষণ দিতেও উদ্যোগ নিয়েছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। সবমিলিয়ে কাতারের রাজধানী দোহার উপকণ্ঠে অবস্থিত হোটেলটি এককথায় হয়ে উঠেছে ঘোড়াদের নন্দন কানন। — ছবি – সৌজন্যে – আল শাকাব