পক্ষী জগতে বয়সে প্রবীণতম সে। বয়স হয়েছে ৬৭ বছর। তবে বন্ধ্যা হয়নি তার মাতৃজঠর। এই বয়সেও নিশ্চিন্তে ডিম পেড়ে চলেছে সে। সেই ডিমে তা দিয়ে সুস্থ সন্তানের জন্ম দিয়ে চলেছে ‘জ্ঞানী’। এটাই তার নাম। ৬৭ বছরেও সন্তান ধারণ ক্ষমতা তো দূর, অনেক পাখি তো বেঁচেই থাকে না। তবু এই বয়সেও দিব্যি সুন্দর সুস্থ ‘ফিগার’ ধরে রেখেছে জ্ঞানী।
আলবাট্রস প্রজাতির সদস্য জ্ঞানীর বয়স হলেও কমেনি তার ডানার জোর। ৬৭ বছরেও সে ২-৩ লক্ষ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ফেলে বলে বিশ্বাস বিজ্ঞানীদের। ১৯৫৬ সালে প্রথম তাঁর হদিশ পান প্রাণিবিজ্ঞানীরা। উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের নিরিবিলি দ্বীপ মিডওয়ে অ্যাটল জ্ঞানীর শীতকালীন আস্তানা। সে তার সঙ্গীদের সঙ্গে ডিম পাড়তেই কেবল শীতের মরসুমে ওই দ্বীপে এসে হাজির হয়। পক্ষী সমাজের নিয়ম মেনে দল বেঁধে সকলে একসঙ্গে কিছুকাল শান্তিতে বাস করে ওই দ্বীপে। মজার বিষয়, প্রতি বছর জ্ঞানী একটি করেই ডিম পাড়ে। গত ৬৭ বছর ধরে কমপক্ষে ৩০-৩৫টি আলবাট্রসের মা হয়েছে সে। তার বর্তমান মিলন সঙ্গীর নাম আকিয়াকামাই। দুজনের মাঝে কি অদ্ভুত বোঝাপড়া। যখন জ্ঞানী সদ্যোজাত সন্তানকে ছেড়ে খাবারের সন্ধানে বার হয়, তখন বাচ্চার দেখাশোনা করে পুরুষ সঙ্গীটি। খিদে পেলেও কোথাও নড়ে না সে।
আবার যখন আকিয়াকামাই খাবার খুঁজতে পাড়ি দেয় সমুদ্রের বুকে, তখন মা জ্ঞানী আগলে রাখে তার সবেধন নীলমণিকে। প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝে জ্ঞানীর এতদিন সুস্থ সবলভাবে বেঁচে থাকা তাক লাগিয়ে দিয়েছে বিজ্ঞানীদের।