তৃণমূলে চালু এক ব্যক্তি এক পদ, নেতাদের কড়া বার্তা নেত্রীর
তৃণমূলের ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে ঝোড়ো জয়ের পর শনিবার দলের সাংগঠনিক বৈঠক করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন পদে বসালেন অনেক নতুন মুখকে।
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে দুরন্ত জয় পেয়েছে তৃণমূল। তারপর করোনা থেকে যশ বা আলাপন কাণ্ড, একের পর এক চাপে দলের সাংগঠনিক বৈঠক করে উঠতে পারছিলেন না তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবশেষে শনিবার সেই সাংগঠনিক বৈঠক করলেন তিনি।
এবার থেকে তৃণমূলে এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি চালু হল। জেলা সভাপতি পদে থাকা কেউ মন্ত্রী হতে পারবেননা। এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক করেন মমতা।
তৃণমূলের বিভিন্ন সংগঠনে এবার একগুচ্ছ নতুন মুখের ভিড়। ভোটের ময়দানে হারলেও সায়নী ঘোষ পেলেন যুবা সভানেত্রীর পদ।
দলের সাধারণ সম্পাদক হলেন ভোটে হেরে যাওয়া টলিউড তারকা সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলের শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি করা হয়েছে।
ব্যারাকপুর থেকে জিতে আসা চিত্রপরিচালক রাজ চক্রবর্তী পেলেন দলের সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি পদ।
সর্বভারতীয় মহিলা তৃণমূলের সভাপতি হলেন কাকলী ঘোষ দস্তিদার। কুণাল ঘোষকে দেওয়া হল দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ।
এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়েছেন ত্রাণ বণ্টন বা গরু পাচারের মত ঘটনায় যদি দলের কোনও নেতার নাম জড়ায় তাহলে কড়া ব্যবস্থা নেবে দল। রাজ্যের কোনও মন্ত্রী লালবাতি গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেননা। সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নেও রাখতে হবে স্বচ্ছতা।
তিনি যে দলের কোনও নেতা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ শুনতে নারাজ তা এদিন স্পষ্ট করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলে যে তিনি শুদ্ধিকরণের পথে হাঁটছেন, সেটাও এদিন স্পষ্ট করেন মমতা।
কামারহাটির বিধায়ক তথা তৃণমূলের অন্যতম মুখ মদন মিত্র এদিন নেত্রীর কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়েন। গত কয়েকদিনে বারবার ফেসবুক লাইভে আসছিলেন মদন মিত্র।
মদনবাবুকে সামনে রেখে এদিন মুখ্যমন্ত্রী দলের সব নেতাদের একসঙ্গে বার্তা দেন যে সোশ্যাল সাইটে যখন তখন লাইভ করা, যা ইচ্ছে তাই বলা যাবে না। মদন মিত্রকেও এমন করতে মানা করেছেন নেত্রী বলে সূত্রের খবর।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে অনেক নেতানেত্রীই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন রাতারাতি। তাঁরা এখন বিজেপি নির্বাচনে ধরাশায়ী হওয়ার পর তৃণমূলে ফেরত আসতে চাইছেন। অনেকে ক্ষমাও চেয়েছেন তাঁদের দল বদলের সিদ্ধান্তের জন্য।
এবার কী তাহলে তাঁদের দলে ফেরানো হবে? এই প্রশ্ন বারবার সামনে আসছে। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল নেতৃত্ব সাফ জানিয়ে দিয়েছে এ বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন। এদিনের বৈঠকে এ বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।