অমল আলোয় নামল অন্ধকার, চলে গেলেন বাংলার কিংবদন্তি কার্টুনিস্ট অমল চক্রবর্তী
বাংলার ক্ষুরধার বুদ্ধির কার্টুনিস্ট হাতেগোনা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম অবশ্যই অমল চক্রবর্তী। সেই কিংবদন্তি কার্টুনিস্ট চলে গেলেন দুর্গাপুজোর মুখেই।
ক্ষুরধার বুদ্ধির ছাপ রেখে কয়েকটা আঁকিবুঁকি যে মানুষকে কতটা ভাবাতে পারে তা এ দেশের গুটিকয়েক কার্টুনিস্ট দেখিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের একজন অবশ্যই অমল চক্রবর্তী। বাংলার সংস্কৃতি চর্চার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যাঁরা প্রথিতযশা এবং কিংবদন্তি তাঁদের একজন অবশ্যই এই মানুষটি। যাঁর সৃষ্টি মানুষকে ভাবতে বাধ্য করত। অন্য আঙ্গিকে রাজনীতি থেকে সমাজকে দেখতে শেখাত।
একটি বিশাল প্রবন্ধও যে দাগ মানুষের মনে কাটতে পারত না, তা অমল চক্রবর্তীর কয়েকটা পেনসিলের আঁকিবুঁকি পারত। একটি ছোট্ট আয়তক্ষেত্র বাক্সের মধ্যে কয়েকটি রেখার সংযোগে তৈরি একটি কার্টুন অনেক বৃহত্তর ভাবনার খোরাক দিত।
অমল চক্রবর্তীর পেনসিলের দাগে সেই শান ছিল। যার ধারে কাবু হত অনেক রাজনৈতিক দল থেকে ব্যক্তিত্ব, সমাজের অনেক অন্ধকার দিক। মধ্যবিত্তের দৈনন্দিন জীবনের যন্ত্রণাও অমলবাবু বারবার তুলে ধরেছেন তাঁর অমল আলোয়।
অমল আলোয় একটা যুগ ধরে প্রতিটি বাঙালির অবশ্য পাঠ হয়ে উঠেছিল খবররে কাগজের পাতায়। এটাই একজন কার্টুনিস্টের সাফল্য।
সেই মানুষটি এদিন চলে গেলেন ইহলোক ত্যাগ করে। বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে এসেছিল। তাও পেনসিল ছাড়েননি আমৃত্যু। বুধবার আরজি কর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
অমৃতবাজার পত্রিকা ও যুগান্তর-এ তাঁর কার্টুন নিয়মিত প্রকাশ হত। এছাড়াও নানা পত্রপত্রিকায় তাঁর কার্টুন প্রকাশিত হয়েছে। নীলকণ্ঠ ডট ইন ওয়েবসাইটেও তাঁর কার্টুন প্রকাশিত হয়েছিল।
অমল চক্রবর্তী এমন এক কিংবদন্তি যিনি হয়তো বাংলায় তাঁর সৃষ্টির জন্য যোগ্য সম্মানটুকু পাননি। পাননি তাঁর কর্মকাণ্ডের জন্য কোনও বড় পুরস্কার।
বাংলার কার্টুনিস্টরা এভাবেই বঞ্চিত থেকেছেন। সেই প্রথমসারির কয়েকজন কার্টুনিস্টের একজন এদিন চিরবিদায় নিলেন এ পৃথিবী থেকে। তবে তিনি চলে গেলেও তাঁর কাজ চিরদিন মানুষের মনে থেকে যাবে। মানুষকে নতুন করে ভাবতে শেখাবে।