চলে গেলেন বাংলা ফুটবলের অন্যতম স্তম্ভ অমল দত্ত। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন অমলবাবু। শেষের দিকে বাগুইআটির বাড়িতে লোকচক্ষুর অন্তরালে পরিবারের সঙ্গেই কাটাতেন তিনি। শরীরও সাথ দিচ্ছিল না। অবশেষে ৮৬ বছর বয়সে চলে গেলেন তিনি। বেশ কিছুদিন ধরে বাইরের কারও সঙ্গে তেমন যোগাযোগও রাখতেন না।
ভারতীয় ফুটবলে বিদেশি ঘরানার ছাপ প্রথম অমল দত্তের কোচিং থেকেই এসেছিল। ফুটবলার হিসাবে খেলতেন সেন্টার হাফে। নিজের জায়গায় অনবদ্য ফুটবলার ছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে বিদেশ থেকে ঘুরে আসার পর কোচ হিসাবে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের মত বাংলার অন্যতম দুই প্রধান দলের কোচিংয়ের দায়িত্ব সামলেছেন। তাঁর হাত ধরেই বাংলার ফুটবলে ‘ডায়মন্ড সিস্টেম’ এক সময়ে ময়দানে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল। তাঁর নামই হয়ে গিয়েছিল ‘ডায়মন্ড কোচ’।
ভারতের প্রথম পেশাদার কোচ অমল দত্ত সবসময়ে চেয়েছেন নতুন নতুন খেলোয়াড় ময়দানে দাপিয়ে বেড়াক। বিভিন্ন সময়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন। কিন্তু নিজের ভাবনার জায়গায় অবিচল ছিলেন তিনি। সবসময় ফুটবল নিয়ে ভাবতেন। ভালবাসতেন তবলা বাজাতে, গান গাইতে। এমন এক মানুষের প্রয়াণে ময়দানে শোকের ছায়া নেমে আসে। রবিবার রাতেই অমল দত্তর বাড়িতে শ্রদ্ধা জানাতে যান ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, সঙ্গে ছিলেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্ল ও রাজ্যের অপর মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। সোমবার সকাল থেকে অমল দত্তর মরদেহ রাখা থাকবে রবীন্দ্র সদনে। সেখানেই তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমল দত্ত চলে গেলেন। তবে রয়ে গেল তাঁর স্মৃতি, তাঁর কাজ, বাংলার ফুটবলে তাঁর অনন্য অবদান। যা বাংলার ফুটবল হয়তো কোনওদিন ভুলতে পারবেনা। নীলকণ্ঠের পুরো পরিবারের তরফ থেকে রইল তাঁর আত্মার প্রতি শান্তি কামনা।