কলা আর মৃতদেহ মেখে ভোজের মধ্যে বেঁচে থাকেন মৃত মানুষ
কলা আর মৃতদেহ একসঙ্গে মেখে খাওয়ার মধ্যে দিয়ে তাঁরা খুঁজে নেন চিরদিনের মত হারিয়ে যাওয়া মানুষটিকে। এ এক আজব বিশ্বাস।
এঁদের মধ্যে মানুষের মৃত্যু হলেও তাঁকে এক বিশ্বাসের জোরে নিজেদের মধ্যে বেঁধে রাখা হয়। আর তা করতে তাঁরা যা করেন তাকে তথাকথিত সভ্যসমাজ নরখাদকের তকমা দেয়। যদিও তাতে অ্যামাজন অরণ্যের ওই জনজাতির কিছু যায় আসেনা। তাঁদের এই প্রথা বহু প্রাচীন। আর তা এখনও চলে আসছে পরম্পরার পর পরম্পরা ধরে।
ইয়ানোমামি জনজাতির এই মানুষদের মধ্যে কারও মৃত্যু হলে তাঁরা ওই দেহকে পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে চিতায় চাপান। তাঁকে চিতায় পোড়ানো হয়।
মৃতদেহটি প্রায় ছাই হয়ে যায়। পড়ে থাকে ছাই আর কিছু হাড়গোড়ের টুকরো। হিন্দু সৎকারেও এইভাবে দেহকে পঞ্চভূতে বিলীন করে দেওয়া হয়। কিন্তু এই জনজাতি কেবল পুড়িয়েই থেমে যান না।
চিতায় দগ্ধ দেহের হাড় ও ছাই সংগ্রহ করে আলাদা করে রাখা হয়। তারপর কলা রান্না করেন তাঁরা। সেই কলা চটকানো হয়। এবার সেই চটকানো কলার সঙ্গে মাখা হয় মৃত মানুষটির দগ্ধ দেহের ছাই ও পোড়া হাড়ের টুকরো।
মাখা হয়ে গেলে এই মাখাটি গ্রামের সকলের হাতে একটু একটু করে তুলে দেওয়া হয় খাওয়ার জন্য। এই জনজাতির মানুষরা বিশ্বাস করেন এভাবেই মৃত ব্যক্তির আত্মা তাঁদের মধ্যেই থেকে যান। তিনি কোথাও হারিয়ে যান না।
এভাবে তাঁদের জনজাতির মানুষকে তাঁরা চিরদিন তাঁদের কাছে নিজের করে রেখে দেন। এটাই রীতি, এটাই বিশ্বাস। আর এই বিশ্বাসে ভর করেই এই প্রথাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন ইয়ানোমামি জনজাতির মানুষজন।