অসমের পর বাংলায় এনআরসি হতে পারে। এমন ভেবে অনেকেই তড়িঘড়ি পুরনো দলিল-দস্তাবেজ ধুলো ঝেড়ে বার করেছেন। পুরনো সেসব কাগজ না পেলে চিন্তায় পড়ছেন। সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরে ছোটাছুটিও করছেন। সব মিলিয়ে তাড়া করে বেড়াচ্ছে এনআরসি আতঙ্ক। বহু বছর ধরে এখানে থাকা মানুষও ভাবছেন কাগজের অভাবে যদি বলে তাঁরা দেশের নাগরিক নন। প্রমাণ নেই! এসব চিন্তায় যখন বাংলার অনেক মানুষের কপালের ভাঁজ দেবীপক্ষেও পুরু হয়ে আছে তাঁদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এনআরসি নিয়ে যে বিজেপির বিরুদ্ধে এ রাজ্যে একটা বিরূপ বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে তা হয়তো আন্দাজ করতে পারছেন তিনিও। ফলে এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বিজেপির জন জাগরণ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে অমিত শাহ বলেন শরণার্থী যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের দেশ ছাড়তে হবে না। তবে অনুপ্রবেশকারীদের তিনি এ দেশে থাকতে দেবেন না।
এনআরসি করা যে অনুপ্রবেশকারী হঠাতেই তা বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেন তিনি। পাশাপাশি জানিয়ে দেন আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আসবে। তারপর এনআরসি। সেই বিলে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সেখানে হিন্দু শরণার্থীদের কোনও চিন্তা নেই বলেই কার্যত আশ্বস্ত করেন অমিত শাহ। তবে অনুপ্রবেশকারীদের যে তিনি এখানে থাকতে দেবেন না তা স্পষ্ট করেছেন। পাশাপাশি মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এক সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে বার করতে সরব হয়েছিলেন। খোঁচা দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোটব্যাঙ্ক অনুপ্রবেশকারীরা ছিলনা, এখন আবার অনুপ্রবেশকারীরাই ভোটব্যাঙ্ক। তাই এনআরসি বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল নেত্রী।
তৃণমূল নেত্রী এনআরসি-র নামে রাজ্যে আসা শরণার্থীদের উস্কানি দিচ্ছেন বলেও দাবি করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন এনআরসি নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। এখান থেকে অনুপ্রবেশকারীদের হঠানো দরকার দেশের স্বার্থে। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে। মঙ্গলবার দুপুরে দমদম বিমানবন্দরে নামেন অমিত শাহ। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিতি ছিল বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। আর হাজির ছিলেন বিজেপি সমর্থকেরা। তাঁরা ফুল দিয়ে অমিত শাহকে অভ্যর্থনা জানান।