বলিউডের কিংবদন্তী তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকটিভ। তাঁর সুচিন্তিত বক্তব্যকে গুরুত্ব দেন নেটিজেনরা। যথেষ্ট দায়িত্বশীল মন্তব্য করে থাকেন তিনি। নিজের আভিজাত্য, মর্যাদা, সামাজিক দায়বদ্ধতা রেখেই মন্তব্য করেন সোশ্যাল সাইটে। সেই অমিতাভ বচ্চনই কিনা তোপের মুখে পড়লেন! বুধবার সকাল থেকেই আছড়ে পড়ছে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা। অমিতাভ বচ্চন নামটাই রীতিমত তোপের মুখে পড়েছে। এদিন অমিতাভ বচ্চন ট্যুইট করে জানান, তাঁর এক বন্ধুর তখনই চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল। তিনি ঠিক করলেন তাঁর গাড়িতে না গিয়ে মেট্রোতে যাবেন। ফিরে এসে খুশি মনে তিনি জানান মেট্রো দ্রুত, সুন্দর ও সুবিধাজনক। যা দূষণের এক সমাধানও। আরও গাছ বড় করা যায়। তিনি তাঁর বাগানে করেন।
আপাত দৃষ্টিতে একটি সহজ, সরল পোস্ট হলেও আসলে এই পোস্টটি মুম্বই মেট্রোর সমর্থনে লেখেন অমিতাভ বচ্চন। যে মেট্রো তৈরি করতে মুম্বইয়ের বিশাল বনভূমি আরে কলোনির ২ হাজার ৭০০ বড় গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এর বিরুদ্ধে সমাজের সাধারণ মানুষ থেকে প্রতিষ্ঠিত মানুষজন সকলেই হ্যাশট্যাগ সেভআরে-এ তে একজোট হয়েছেন। প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। এত গাছ কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন তাঁরা। এখানে গাছ কেটে মেট্রোর একটি কারশেড তৈরির কথা হয়েছে যা বিক্ষোভে মুখর মানুষজন চাইছেন আরে কলোনির গাছ কেটে নয়, দ্বিতীয় কোনও জায়গায় তৈরি হোক। সেখানে অমিতাভ বচ্চনের ট্যুইট করে মানুষের সুবিধার্থে গাছ কাটা মেনে নেওয়ার বার্তা মেনে নিতে পারছেন না হ্যাশট্যাগ সেভআরে-এ লড়াইয়ে যুক্ত মানুষজন।
অমিতাভ বচ্চনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে যেমন সিনেমা পরিচালক অশোক পণ্ডিত লিখেছেন, অমিতাভ বচ্চন কী এই ট্যুইটের মধ্যে দিয়ে আরে কলোনির গাছ কাটাকে সমর্থন জানিয়েছেন? ২ হাজার ৭০০ বড় গাছ কেন কাটা হবে, যখন দ্বিতীয় রাস্তা খোলা আছে? প্রকৃতির বিনিময়ে উন্নয়ন মানব সভ্যতার জন্য ভয়ংকর। এদিকে অমিতাভের ট্যুইটকে লুফে নিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তারা পাল্টা ট্যুইট করে অমিতাভ বচ্চনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। জানিয়েছে অমিতাভ তাঁর বন্ধুর অভিজ্ঞতা মুম্বইয়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে শেয়ার করায় তারা আনন্দিত।
হ্যাশট্যাগ সেভআরে-এর বিক্ষোভকারীরা কিন্তু অমিতাভ বচ্চনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেই গেছেন দিনভর। কেউ লিখেছেন মানবতার পক্ষে থাকুন কারণ সম্পত্তি চিরকাল থাকেনা। এমন নানাভাবে অমিতাভকে নিশানা করেছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত এই অমিতাভ বচ্চনই ২০১০ সালে মেট্রোর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। তিনি চরম বিরোধী ছিলেন মুম্বই মেট্রোর। কারণ মেট্রোর লাইন পাতা হচ্ছিল তাঁর বাংলো প্রতীক্ষার সামনে দিয়ে। অমিতাভের দাবি ছিল এতে তাঁর গোপনীয়তা বিনষ্ট হবে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা