বলিউডে অ্যাঙ্গরি ইয়ং ম্যান ইমেজ দিয়ে জীবন শুরু। আর সেখান থেকে ক্রমে কিংবদন্তী হয়ে ওঠা। অমিতাভ বচ্চন নিজেই ভারতীয় সিনেমায় একটা প্রতিষ্ঠান। তাই তাঁরা ভক্তের সংখ্যাও কম নয়। একটা বিশেষ প্রজন্ম বলেই নয়, আধুনিক প্রজন্মও অমিতাভ বচ্চনের সমান ভক্ত। অমিতাভ যখন হিরো হিসাবে পর্দা কাঁপাচ্ছেন তখনই ১৯৮২ সালে কুলি সিনেমার শ্যুটিং করতে গিয়ে তাঁর পেটে চোট লাগে। যার জেরে প্রায় মৃত্যুর মুখে চলে গিয়েছিলেন তিনি। সেসময় তাঁর আরোগ্য কামনা করে অগণিত ভক্ত প্রার্থনা শুরু করেন। যারমধ্যে কলকাতায় থাকা তাঁর অনেক ভক্ত ছিলেন।
সেই চোট সামলে ফিরে আসেন অমিতাভ বচ্চন। আর কলকাতার ভক্তরা সে সময় স্থির করেন তাঁরা তাঁদের গুরু বা প্রভু-র জন্য একটি মন্দির স্থাপন করবেন। সেইমত শুরু হয় মন্দির তৈরির কাজ। ২০০১ সালে বন্ডেল গেটের কাছে মন্দিরটি সম্পূর্ণ হয়। সেখানে বিগ্রহ হিসাবে পূজিত হন অমিতাভ বচ্চন। সকাল সন্ধে তাঁর আরতি হয়। ভোগ দেওয়া হয়। অন্য ঠাকুর মন্দিরে যেমন হয়ে থাকে।
শুধু মন্দিরে নিত্য পুজো করেই অমিতাভ ভক্তরা ইতি টানেন না। তাঁর সারা বছর ধরেই সামাজিক কাজকর্ম করেন। তবে সবই তাঁদের গুরুর নামে। প্রতি উৎসবেই বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। আর গুরুর জন্মদিন তো ধুমধাম করে পালিত হয়ই। তবে অমিতাভ বচ্চন যেহেতু কেক খেতে পছন্দ করেন না তাই তাঁর মন্দিরেও ভক্তরা জন্মদিনে তাঁকে কেক প্রসাদ দেন না। দেন মেওয়া। গুরুর দীর্ঘায়ু ও সুস্থ জীবন কামনা করেই মেওয়া প্রসাদ দেন তাঁরা। এবার তাঁর জন্মদিনে ৭৭টি শিশুকে খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়েছিল। খাওয়ানোর পাশাপাশি তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বই, খেলনা, পোশাক সহ নানা জিনিস।
অমিতাভ বচ্চন মন্দিরে অমিতাভকে ঈশ্বররূপেই পুজো করা হয়। আর বিভিন্ন বিশেষ দিনে এ বছর থেকে তাঁর বাবা, মায়েরও পুজো হচ্ছে। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা সঞ্জয় পাতোদিয়া বলেন, তাঁদের প্রভুর বাবা হরিবংশ রাই বচ্চন ও মা তেজি বচ্চনের তাঁরা পুজো করছেন এমন এক কোহিনূর তাঁদের উপহার দেওয়ার জন্য। কিন্তু যাঁকে নিয়ে এতকিছু সেই অমিতাভ বচ্চন কী তাঁর মন্দির বা মূর্তি দেখেছেন? উত্তরটা কিন্তু না। অমিতাভ বচ্চন তাঁর এই মন্দির সম্বন্ধে ভালই জানেন। সঞ্জয় পাতোদিয়া ও তাঁর পরিবারের সঙ্গেও তাঁর ভাল আলাপ। কিন্তু তাঁর মন্দির বানিয়ে তাঁর পুজোতে অমিতাভ বচ্চনের আপত্তি আছে। তাই এতদিন কেটে গেলেও কখনও তিনি তাঁর মন্দিরে পা দেননি। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা