অন্নপূর্ণা পুজো করলে পরিবারে কী লাভ হয়
কৈলাসে শিব-পার্বতীর বিয়ের পর চরম অর্থাভাবের কারণে শিবকে ভিক্ষা করতে বার হতে হয়। কিন্তু কোথাও ভিক্ষা না পেয়ে ফিরে আসেন দেবাদিদেব।
তিথি মেনে শনিবার নীলষষ্ঠীর সঙ্গে সঙ্গে পড়েছে অন্নপূর্ণা পুজো। অনেক বাড়িতেই অন্নপূর্ণা পুজোর আয়োজন হয়। নিষ্ঠার সঙ্গে বহু বছর ধরেই শহর কলকাতার অনেক পরিবারে অন্নপূর্ণা পুজো চলে আসছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে।
পুজোর সঙ্গে থাকে বহু মানুষের সমাগম। খাওয়া দাওয়া। যেসব পরিবারে অন্নপূর্ণা পুজোর আয়োজন হয় সেখানে শনিবার দিনভর ছিল একদম উৎসবের মেজাজ। আমন্ত্রিতরাও মেতে ওঠেন আনন্দে।
অন্নপূর্ণার এক হাতে থাকে অন্নপাত্র। অন্য হাতে চামচ জাতীয় বস্তু। শিবকে অন্ন ভিক্ষা দিচ্ছেন তিনি। এটাই অন্নপূর্ণার রূপ। ভিক্ষারত মহাদেবকে অন্ন দান করার রূপ থেকেই তিনি অন্নপূর্ণা।
চৈত্র মাসের শুক্লাষ্টমী তিথিতে অন্নপূর্ণা পুজো হয়। যেসব পরিবারে অন্নপূর্ণা পুজো হয় সেসব পরিবারে কখনও অন্নের অভাব হয়না। এমনই মনে করা হয়। দেবী অন্নপূর্ণার কথা বিভিন্ন পুরাণে পাওয়া যায়।
পুরাণ বর্ণিত কাহিনিতে অবশ্য অন্নপূর্ণাকে নিয়ে বিভিন্ন কাহিনি পাওয়া যায়। কথিত আছে কৈলাসে শিব-পার্বতীর বিয়ের পর চরম অর্থাভাবের কারণে শিবকে ভিক্ষা করতে বার হতে হয়। কিন্তু কোথাও ভিক্ষা না পেয়ে ফিরে আসেন দেবাদিদেব। তখন পার্বতীই অন্নপূর্ণা রূপে শিবকে অন্ন দেন।
এরপর শিব পরম সন্তুষ্ট হয়ে কাশী তৈরি করেন। সেখানে একটি অন্নপূর্ণার মন্দির প্রতিষ্ঠা করে দেন। সেই থেকেই কাশীর অন্যতম মন্দির দেবী অন্নপূর্ণা মন্দির।
সেখানে অন্নপূর্ণা পুজোর দিন বিশাল উৎসবের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বহু পুণ্যার্থী হাজির হন অন্নপূর্ণা পুজো দেখতে। ভোগ পেতে। কাশীর দেবী অন্নপূর্ণার বিগ্রহ সম্পূর্ণ স্বর্ণ নির্মিত। পুরো মূর্তিটি বছরে কেবল ২ দিনই দর্শন করা যায়। একটি হল অন্নপূর্ণা পুজোর দিন। অন্যটি অন্নকূটের দিন।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এদিন অন্নপূর্ণা পুজোয় মাতোয়ারা। টিটাগড়ে একটি অন্নপূর্ণার মন্দির রয়েছে। তবে অন্নপূর্ণার মন্দিরের সংখ্যা কমই।
দেবী অন্নপূর্ণা কিন্তু বাংলা সাহিত্যেও বিভিন্ন সময়ে বর্ণিত হয়েছেন। অন্নদামঙ্গল কাব্য রচিত হয়েছে। রায়গুণাকর ভারতচন্দ্রের সেই সৃষ্টি চিরদিন বাংলা সাহিত্যের অমূল্য রত্ন হয়ে থেকে যাবে।