কেউ কোথাও নেই, তবু বরফের বুক চিরে এখানে রক্তপাত হতেই থাকে
বহু দূর দূর পর্যন্ত কেউ কোথাও নেই। চারিদিকে বরফের পুরু চাদর। সেই বরফের বুক চিরে এখানে রক্তপাত চলতেই থাকে।
এখানে কোনও প্রাণির থাকার কথা নয়। এমনই ঠান্ডা এখানে সারাবছর বিরাজ করে। চারিদিকে যেদিকেই তাকানো যায় শুধু বরফ আর বরফ। অ্যান্টার্কটিকার পূর্ব প্রান্তে ম্যাক মুরদো ড্রাই ভ্যালি জুরে শুধু পুরু বরফের চাদর। সেই পাণ্ডববর্জিত এলাকায় রয়েছে টেলর হিমবাহ। সেই হিমবাহের একটি অংশে বরফের বুক চিরে বেরিয়ে আসে রক্ত।
শুধু ওই অংশের বরফ লাল হয়ে যায়। আর লাল হয়েই থাকে। কারণ রক্তপাত তো চলতেই থাকে। এমন প্রাণি বর্জিত জায়গায় এ কিসের রক্ত? বিস্ময়কর তো বটেই।
আসলে এটা রক্ত নয়। আবার জলের সঙ্গে মিশে অ্যালগি যেমন অনেক জায়গায় জলের রং বদলে দেয় তেমনটা এ ক্ষেত্রে ঘটেনি। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এ রক্ত আসলে এক নোনতা হ্রদের কাণ্ড।
কোটি কোটি বছর আগে এই পুরু বরফের চাদরের তলায় ঢাকা পড়ে গিয়েছিল একটি প্রবল নোনতা হ্রদের পুরো জলটা। তারপর তা বরফের তলায় আটকেই ছিল।
পরে কোনও একটি ফাঁক হওয়ায় সেখান দিয়ে তা চুঁইয়ে বার হতে শুরু করে। কিন্তু ততদিনে তাতে এমন কিছু পরিবর্তন হয় যে জলটি অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে এমন লালচে মরচে রংয়ের জলে পরিণত হয়।
সেটাই ফাটল দিয়ে চুঁইয়ে বার হতে থাকে। আর হাওয়ার সংস্পর্শে এসে এমন লাল হয়ে গড়াতে থাকে। যা দেখে স্পষ্ট মনে হয় রক্ত গড়িয়ে পড়ছে হিমবাহের গা বেয়ে।
অ্যান্টার্কটিকায় অনেক দেশের গবেষণার জন্য বেস করা আছে। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে উড়ে এই রক্তপাত দেখে আসেন অনেক বিজ্ঞানী, গবেষকেরা।