ছিল সবুজের অস্তিত্ব, তুষার রাজ্যে অরণ্য জীবাশ্মের হদিশ
তখনও এই পৃথিবীতে ডাইনোসরের পা পড়েনি। আজ যেখানে শুধুমাত্র বরফ, সেসময় সেখানে মাইলের পর মাইল জুড়ে জন্ম হয় সবুজ গুল্ম অরণ্যের।
বছরভর হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডা। দিবারাত্রি ঝোড়ো শৈত্যপ্রবাহের দাপট। পায়ের তলায় মাটি বলতে যা বোঝায় তা উধাও। যে দিকে তাকাও, খালি তুষারশুভ্র বরফ আর বরফ। উষ্ণতার ছোঁয়া এখানে ডুমুরের ফুলের মত।
আধুনিক বিবর্তিত অ্যান্টার্কটিকার রূপ এমনই। আজ থেকে ২৬০-২৮০ মিলিয়ন বছর আগে অবশ্য মোটেই এমনতর ছিলনা পৃথিবীর এই প্রান্তটি।
তখনও এই পৃথিবীতে ডাইনোসরের পা পড়েনি। ডাইনোসরের পূর্বজরাও নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে কোনও এক অগ্ন্যুৎপাতের আক্রমণে। সেই ধ্বংসস্তূপের ওপর মাইলের পর মাইল জুড়ে একসময় জন্ম হয় সবুজ গুল্ম অরণ্যের।
টাইম মেশিনে পাড়ি জমালে পৌঁছন যেত গন্ডোয়ানাল্যান্ডের এক রহস্যময় রাজ্যপাটে। এখনকার বরফ সাদা অ্যান্টার্কটিকা থেকে যার চরিত্র ছিল একেবারেই আলাদা। এমনটাই দাবি করছেন সম্প্রতি অ্যান্টার্কটিকা অভিযানে গিয়ে ৫টি অরণ্য জীবাশ্মের সন্ধান পাওয়া অভিযানকারী দলের গবেষকরা।
অ্যান্টার্কটিকার বরফের তলায় পাথুরে জমিতে খনন চালিয়ে ১৩টি মস ও ফার্ন জাতীয় গুল্ম উদ্ভিদের জীবাশ্ম হাতে আসে মার্কিন গবেষকদের। এখন যে জায়গা নিষ্প্রাণ, নির্জীব, যেখানে উর্বরতার চিহ্নমাত্র নেই, একসময় সেখানেই ছিল সবুজের অস্তিত্ব!
কিন্তু কিভাবে সৃষ্টি হয়েছিল তারা? কি ছিল তাদের প্রকৃতি? যখন ৬ মাস অন্ধকারে ঢেকে থাকত অ্যান্টার্কটিকা, তখন তারা কিভাবে বেঁচে ছিল? কত বছরই বা টিকে ছিল সেই অরণ্য?
বিশ্ব উষ্ণায়ন নাকি সমুদ্রের জলস্তরের উচ্ছ্বাস, অ্যান্টার্কটিকার সবুজ ধ্বংসের জন্য দায়ী কে? পার্মিয়ান যুগের সেই আদিম রহস্যের জটই এখন ছাড়ানোর মরিয়া চেষ্টা করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা।