SciTech

টানা ১৪ ঘণ্টা সেক্স-এর পর মৃত্যুই জীবন

জন্মের কিছুকাল পর শুক্রথলিতে শুক্রাণুর পরিমাণ বেড়ে যাওয়াতেই কামনা জর্জর হয়ে ওঠে তারা। ফলে তারা একাধিক স্ত্রী অ্যান্টিচিনুসের সঙ্গে রতিক্রিয়ায় লিপ্ত হয়।

নারী ও পুরুষের যৌন মিলনের স্বাভাবিক সময়সীমা কত হতে পারে? নিশ্চই একটানা ১৪ ঘণ্টা নয়। কিন্তু কোনও কোনও প্রাণির অন্ততপক্ষে ১৪ ঘণ্টার টানা শারীরিক মিলন নাহলে ঠিক যেন পূর্ণতা আসেনা। লাগাতার যৌন সুখেই সুখ! এই বিশ্বাসে একটানা ‘সেক্স’ করতে গিয়ে নিজের পায়ে কুড়ুল মেরে বসে পৃথিবীর বিশেষ প্রজাতির এক প্রাণি।

অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা তারা। নাম অ্যান্টিচিনুস। এক নারী সম্ভোগে মজা পায় না কালো লেজ ও রূপোলী মাথার ধূসর রঙা পুরুষ অ্যান্টিচিনুসগুলি।


জন্মের কিছুকাল পর শুক্রথলিতে শুক্রাণুর পরিমাণ বেড়ে যাওয়াতেই কামনা জর্জর হয়ে ওঠে তারা। ফলে তারা একাধিক স্ত্রী অ্যান্টিচিনুসের সঙ্গে রতিক্রিয়ায় লিপ্ত হয়। একনাগাড়ে ১৪ ঘণ্টা ‘সেক্স’ করে যেতেই থাকে। তাদের সেই প্রবল কামপ্রবৃত্তি ডেকে আনে বিপদ।

একাধিক সঙ্গিনীর সঙ্গে শরীরী মিলনের ধকল প্রচুর। এইসময় মাত্রাতিরিক্ত টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণে দুর্বল হয়ে আসে শরীর। ধীরে ধীরে অকেজো হতে থাকে সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ।


প্রচুর পরিমাণে লোম উঠতে শুরু করে। বাড়তে থাকে শারীরিক অস্বস্তি। ক্রমাগত দেহের ভিতর চলতে থাকে চোরা রক্তক্ষরণ। সারা শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ। দেহে পচন ধরা শুরু হয়।

বহুগামী পুরুষ অ্যান্টিচিনুস বুঝতে পারে যে তার দিন ফুরিয়ে আসছে। তাই মৃত্যুর আগে কামার্ত প্রাণিটি শেষবারের জন্য যৌন মিলনের জন্য ফের উন্মুখ হয়ে ওঠে। হন্যে হয়ে মিলন সঙ্গিনী খুঁজে বেড়ায় সে। কিন্তু নিয়তির কি অদ্ভুত পরিহাস! পচন ধরা মরণাপন্ন পুরুষ অ্যান্টিচিনুসের ডাকে সাড়া দেয় না কোনও সঙ্গিনীই।

বছর ঘুরতে না ঘুরতেই অকালে জীবন ঝরে যায় কতশত পুরুষ অ্যান্টিচিনুসের। অস্বাভাবিক কামক্ষুধার তাড়নাই কীটপতঙ্গ, উদ্ভিদ ভুক প্রাণিটিকে ঠেলে দিয়েছে বিলুপ্তির পথে।

যে হারে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই হাজার হাজার অ্যান্টিচিনুসের মৃত্যু হচ্ছে, সেই হারে বংশবৃদ্ধি করতে ব্যর্থ স্ত্রী অ্যান্টিচিনুসগুলি। একের পর এক পুরুষ সঙ্গী হারিয়ে বন্ধ্যা হওয়ার উপক্রম তাদের। বিজ্ঞানীদের কপালে তাই পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।

মত্ততায় লাগাম টানতে না পারলে উচ্চ অক্ষাংশীয় অরণ্যের বাসিন্দারা একদিন সভ্যতা থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে অচিরেই। এই বিষয়ে একমত অস্ট্রেলিয়ার প্রাণিবিজ্ঞানীরা।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button