World

মায়ের গর্ভ থেকে বোনকে টেনে বার করল ৮ বছরের দিদি

বাবার সাথে হাত মিলিয়ে ছোট্ট বোনের মাথা মায়ের গর্ভ থেকে সাবধানে বার করে আনে সে। এমনকি মায়ের নাড়িও চিকিৎসকের বদলে অনভিজ্ঞ ২ খুদে হাতে কাটে সেই।

মা বাবা আর সে। মাত্র ৩ জনের সংসারটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগত ছোট্ট ব্রুকের। একটা খেলার সঙ্গী পেলে মন্দ হত না। ভাই বা বোন থাকলে কি ভালোই না হত।

ব্রুকের সেই স্বপ্ন পূরণও হতে যাচ্ছিল। মা সন্তানসম্ভবা। তাই ভাই বা বোন পাওয়ার আনন্দে বিভোর হয়ে গিয়েছিল ৩ বছরের ব্রুক। কিন্তু অচিরে সেই আনন্দের তার ছিঁড়ে যায়। ভেঙে যায় তার বড়দিদি হওয়ার স্বপ্ন। ব্রুক জানতে পারে মা কেলসি ডেভিসের গর্ভপাতের কথা। নিমেষে মন ভেঙে যায় তার। তবুও ব্রুক স্বপ্ন দেখতে থাকে ফের বড় দিদি হওয়ার।


সেই সুযোগ আরও ২ বার আসে তার সামনে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ব্রুকের দিদি হয়ে ওঠার স্বাদ রয়ে যায় অপূর্ণ। পরপর ৩ বার স্বপ্ন ভেঙে গেছে। তবুও কিন্তু আশা ছাড়েনি ব্রুক। অবশেষে ২০১৫ সালে ঈশ্বরের কৃপায় ইচ্ছাপূরণ হয় ৬ বছরের ব্রুকের। একটা ফুটফুটে ছোট্ট বোন এলির দিদি হয়ে ওঠে ব্রুক।

২ বছর পার হতেই আবার খুশির খবর পায় ৮ বছরের ব্রুক। তার মা আবার সন্তানের জন্ম দিতে চলেছেন। সেই আনন্দে আত্মহারা ব্রুক এবার জেদ ধরে মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে যাওয়ার। সে দেখতে চায় কিভাবে তার আরেকটা ভাই বা বোন পৃথিবীর বুকে আসছে। ব্রুকের নিষ্পাপ জেদের কাছে হার মানেন তার মা, বাবা ও চিকিৎসকেরা।


২০১৭-র বড়দিনের দিন প্রসব যন্ত্রণায় কাতর মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর কপাল গায়ে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে ব্রুক। টানা ৩৬ ঘণ্টায় একবারের জন্যেও মায়ের পাশ থেকে তাকে সরাতে পারেননি কেউই। ৩৬ ঘণ্টা পর মাকে আরেকটা ‘বোন’-এর জন্ম দিতে দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়ে নির্ভীক ব্রুক।

বাবার সাথে হাত মিলিয়ে ছোট্ট ‘বোন’ সামার টাটুমের মাথা মায়ের গর্ভ থেকে সাবধানে বার করে আনে সে। এমনকি মায়ের নাড়িও চিকিৎসকের বদলে অনভিজ্ঞ ২ খুদে হাতে কাটে সেই। তারপরেই কান্নায় ভেঙে পড়ে ব্রুক।

মাত্র ৮ বছরের মেয়ের এমন মানবিক অনুভূতির কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান ৩ কন্যাসন্তানের জননী। তৃতীয় কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার সময়ের বেশ কিছু ছবিও আপলোড করেন তিনি। আর সেইসব ছবি ভাইরাল হতেই ব্রুকের স্পর্শকাতর আবেগের কাহিনি চোখে জল এনে দিয়েছে নেটিজেনদের। পরিবারের সাথে এইটুকু বয়স থেকেই এতটা মনের টানে কার্যত বাকরুদ্ধ বিশ্ববাসী।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button