Kolkata

অশোক ঘোষের জীবনাবসান

Ashoke Ghosh

চলে গেলেন বর্ষীয়ান ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা অশোক ঘোষ। ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই ভর্তি ছিলেন বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়। মাল্টি অর্গান ফেলিওয়ের কারণে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।


প্রবীণ এই বাম নেতার মৃত্যুতে রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই হাসপাতালে একে একে হাজির হন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেবের মত বাম নেতারা। হাজির হন ফরওয়ার্ড ব্লকের সব নেতা। শুধু বাম নেতারাই নন, অশোক ঘোষকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে হাজির হন ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে, কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া সহ আরও অনেকে। বাম রাজনীতিতে অশোক ঘোষের মৃত্যু একটা যুগের অবসান বলে ব্যাখ্যা করেন মানসবাবু। অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অশোক ঘোষের প্রয়াণকে রাজনৈতিক জগতে ইন্দ্রপতন বলে জানিয়েছেন। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর বলেন, বয়সের কারণে অশোক ঘোষকে তিনি বারবার বিভিন্ন আন্দোলন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু অনেক সময়ই সেসব কথা শুনতে চাইতেন না বর্ষীয়ান এই মনেপ্রাণে লড়াকু ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা। তাঁর মৃত্যুকে এক অভিভাবকের মৃত্যু বলে ব্যাখ্যা করেন বিমানবাবু। অনেক সময়ই গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ নিতে তিনি অশোকবাবুর দ্বারস্থ হতেন বলে জানিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ফরওয়ার্ড ব্লক রাজ্য সম্পাদক ছিলেন অশোক ঘোষ। অশোক ঘোষের মৃত্যুতে ট্যুইটারে শোক ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। অশোকবাবুর পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানান তিনি।

আপাতত পিস হাভেনে রাখা থাকবে প্রয়াণ এই বাম নেতার মরদেহ। আগামী ৫ মার্চ কলকাতা থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হবে পুরুলিয়ায়। ওদিন পিস হাভেন থেকে দেহ শ্যামবাজারে নিয়ে আসা হবে। সেখানে নেতাজি মূর্তির সামনে রাখা হবে দেহ। তারপর বিটি রোড হয়ে পুরুলিয়ার পথে পাড়ি দেবে শোক‌যাত্রা। আগামী ৬ মার্চ পুরুলিয়ার সুভাষ আশ্রমে তাঁর দেহ সমাধিস্থ করা হবে।


১৯২১ সালে চুঁচুড়ায় জন্ম হয় অশোক ঘোষের। যুবাবস্থায় স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। স্বদেশী হওয়ার কারণে তিন বছর জেলও খাটতে হয় তাঁকে। স্বাধীনতার পর থেকেই বামপন্থী আন্দোলনে এক অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন অশোক ঘোষ। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত একজন দক্ষ রাজনীতিবিদ হিসাবে দল নির্বিশেষে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা সর্বজনবিদিত।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button