পাকিস্তানকে কয়েকদিনের মধ্যে ২ বার গোহারান হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল ভারত। রবিবার দুবাইতে পাকিস্তানকে ৯ উইকেটে হারিয়ে দেয় মেন ইন ব্লু। ৬৩ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে যায় তারা। ১৫ মাস পর এক সপ্তাহের মধ্যে ২ বার মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান। ফলে একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ২ দেশের ক্রিকেট প্রেমীরা। কিন্তু ২ বারই আশাহত হলেন তাঁরা। নেহাতই একতরফা ম্যাচ দেখতে হল তাঁদের। যেখানে একাই রাজত্ব করল ভারত। পাকিস্তান শুধু নিয়ম মেনে খেলা সম্পূর্ণ করল। কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, ভারত একতরফা খেলে জিতে নিল সুপার ফোরের ম্যাচ। পৌঁছে গেল এশিয়া কাপের ফাইনালে।
এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। দুবাইয়ের পাটা পিচে দূরবীন দিয়ে খুঁজলেও ঘাস মেলা দায়। পিচ দেখে যে কেউ বলে দেবে এটা বোলারদের জন্য কেবল বল করার জায়গা। আর ব্যাটসম্যানদের স্বর্গরাজ্য। কিন্তু সেই পিচেও পাকিস্তান শুরু থেকে ভারতীয় বোলিং আক্রমণের সামনে নাকানি চোবানি খেতে থাকে। প্রথম ৩ উইকেট হারানোর পর শোয়েব মালিক (৭৮) ও অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ (৪৪) খেলার হাল ধরেন। কার্যত এই ২ ব্যাটসম্যানের দৌলতেই পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে একটা লড়াই দেওয়ার মত টোটাল খাড়া করে। ৫০ ওভার খেলে পাকিস্তান করে ২৩৭ রান। এদিনও বোলিংয়ে সফল হন কুলদীপ, বুমরাহ ও চাহল। ৩ জনেই ২টি করে উইকেট পান।
বিশাল টোটাল নয়। তাই রান তাড়া করতে নেমে নিশ্চিন্তেই শুরু করেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান। ২ জনেই জানতেন তাড়াহুড়ো করে নয়, ধীরে সুস্থে রান তুললেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছনো সম্ভব। যদিও রোহিত একটা সহজ ক্যাচ তুলে ফেলেন, যা মিস করে পাকিস্তান। সেটাই রোহিতের মত খেলোয়াড়ের জন্য যথেষ্ট। একবার প্রাণ ফিরে পাওয়া রোহিত এরপর ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। অন্যদিকে আরও ভয়ংকর রূপ নেন শিখর ধাওয়ান। ২ জনেই প্রায় যখন শতরানের দোরগোড়ায় তখন ফের রোহিত ক্যাচ তোলেন। ফের তা ফস্কায় পাকিস্তান। এরপর চার মেরে সেঞ্চুরি হাঁকান শিখর। রোহিতও সেঞ্চুরি করেন। জীবনের ১৯ তম সেঞ্চুরি করেন রোহিত। তবে বাজে ভাবে রান আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে শিখর ধাওয়ানকে। এরপর রোহিতের সঙ্গে জুটি বেঁধে খেলা শেষ করেন আম্বাতি রাইডু। রোহিত শর্মা ১১১ রান করে অপরাজিত থেকে দেশকে ম্যাচ জিতিয়ে ফেরেন। এদিকে ভারতীয় ওপেনিং জুটি হিসাবে এদিন রেকর্ড গড়েন রোহিত-শিখর। ২০১৭ সালে ১৩৬ রানের জুটি বানিয়েছিলেন ২ জনে। এদিন বানালেন ২১০ রানের জুটি। যা এতদিন ধরে রাখা সৌরভ-শচীনের ১৯৯৮ সালে গড়া ১৫৯ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপের রেকর্ড ভেঙে দিল। গড়ল নতুন রেকর্ড।
এদিন পাকিস্তান কার্যত দাঁড়াতেই পারেনি ভারতের সামনে। প্রতিভাবান খেলোয়াড়ে ভরা পাকিস্তানের চেয়ে অনেকটাই পেশাগত ক্রিকেটে এগিয়ে থেকেছে ভারতীয় দল। যার ফলও হাতে গরম পেয়েছে তারা। এদিন পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল ভারত। যদিও সুপার ফোরে তাদের এখনও আফগানিস্তানের মুখোমুখি হওয়া বাকি। তবে আফগানিস্তানের সঙ্গে ফলাফল ভারতের ফাইনালে ওঠাকে কোনও সমস্যায় ফেলবে না। এখন দেখার ফাইনালে ভারতের সামনে ফের পাকিস্তানই পড়ে কিনা।