স্ত্রীকে বাঁচাতে হাঙরকে ঘুষির পর ঘুষি মেরে সায়েস্তা করলেন স্বামী
স্ত্রীকে বাঁচাতে হাঙরের সঙ্গে লড়ে গেলেন স্বামী। বাঁচিয়েও আনলেন নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে।
সিডনি : সুন্দর দিনে সমুদ্রের বুকে ভেসে বেড়াচ্ছিলেন স্বামী-স্ত্রী। সার্ফিং করছিলেন ঢেউয়ের তালে তালে। তাঁরা বলেই নয়, আরও বেশ কয়েকজন আশপাশে সার্ফিং করছিলেন মনের আনন্দে। ঠিক সেই সময়ই ওই বছর ৩৫-এর মহিলা পায়ে একটা যন্ত্রণা অনুভব করেন। টান পড়ে পায়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ততক্ষণে ২ বার ব্লেডের মত ধারাল দাঁতের কামড় পড়ে গেছে তাঁর ডান পায়ে। মুহুর্তে তিনি বুঝতে পারেন তাঁর পা কামড়ে ধরেছে একটি অতিকায় হোয়াইট শার্ক বা সাদা হাঙর। তার ধারাল দাঁত এবং শক্তিশালী চোয়াল থেকে পা ছাড়ানো তাঁর পক্ষে অসম্ভব। আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠেন তিনি।
পাশেই সার্ফিং করছিলেন তাঁর স্বামী। কি হয়েছে বুঝতে তাঁর সময় লাগেনি। তিনি বুঝতে পারেন স্ত্রীর পা যদি দ্রুত ছাড়ানো না যায় তাহলে তাঁকে টেনে গভীর জলে নিয়ে চলে যাবে হাঙরটি। ফলে সময় নষ্ট না করে হাঙরের কাছে গিয়ে ১০ ফুটের বিশাল চেহারার হাঙরটিকে শরীরের সব শক্তি দিয়ে ঘুষি মারতে শুরু করেন। হাঙরের মুখে পড়তে থাকে তাঁর একের পর এক ঘুষি। তাতেও সে ছাড়বার পাত্র নয়। আর ওই মহিলার স্বামীও হাঙরকে ছাড়বার পাত্র নন। অবশ্যই এই লড়াইতে ওই ব্যক্তির অসীম সাহসই জয় পায়।
একসময় ঘুষির পর ঘুষি খেয়ে বিরক্ত হয়েই হোক বা আঘাত পেয়েই হোক হাঙর ওই মহিলার পা ছেড়ে পালায় সমুদ্রের আরও ভিতরে। পা ছাড়তেই রক্তাক্ত অবস্থায় অন্যান্যদের সাহায্যে স্ত্রীকে তীরে নিয়ে আসেন ওই মহিলার স্বামী। সেখানে বালির ওপরই তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। তারপর সেখান থেকে চপারে মহিলাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ততক্ষণে অবশ্য ওই সমুদ্রতটে হিরো-র সম্মান পাচ্ছেন তাঁর স্বামী।
ঘটনাটি ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে কিছুটা দূরে পোর্ট ম্যাকুয়ারির সমুদ্রতটে। এখানে সার্ফিং অত্যন্ত প্রচলিত এক সমুদ্র বিনোদন। আবার অস্ট্রেলিয়া হল এমন জায়গা যেখানকার সমুদ্রতটের কাছে হাঙরের দেখা প্রায়শই মেলে। এদিকে ওই ব্যক্তি স্ত্রীকে বাঁচিয়ে হিরো হয়ে ওঠার পর সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি এমন কিছুই করেননি। ওই অবস্থায় পড়লে যে কেউ যা করতেন, তিনিও সেটাই করেছেন।