রঙিন পাথরের এ শহরে বাড়িঘর সবই আছে, কেবল দেখতে পাওয়া যায়না
এ শহরে বাড়িঘর সবই আছে। বহু মানুষের বাস। কিন্তু বাড়িঘর কিছুই দেখতে পাওয়া যায়না। সবই অদৃশ্য। এমনকি দোকানপাট, হোটেল, রেস্তোরাঁও রয়েছে লুকিয়ে।

এই জায়গায় কেউ পৌঁছলে প্রথমেই তাঁর মনে হবে এতো এক ধুধু প্রান্তর আর পাহাড়ে ঘেরা জায়গা। চারধারে গাছপালাও তেমন নেই। কেবল লালচে বাদামি রংয়ের বেলে পাথরের অপার প্রান্তর। ধুলো ধূসরিত চারধার। বড় রুক্ষ এ স্থান।
প্রথমে দেখে মনে হবে এখানে মানুষের বসবাস নেই। কারণ এখানে মানুষ থাকতে পারেনা। এমন প্রবল গরম সেখানে। রোদের প্রখর অগ্নিবাণ গা পুড়িয়ে দেয়। কিন্তু এই শহরে সাড়ে ৩ হাজার মানুষের বাস।
সকালের দিকে কাউকে দেখা যায়না বড় একটা। কিন্তু তাঁরা সবই করেন। বাজার করেন। দোকানপাটও রয়েছে অনেক। রেস্তোরাঁ রয়েছে। হোটেল রয়েছে। মিউজিয়াম রয়েছে। সবই সুসজ্জিত। কিন্তু চোখে দেখা যায়না।
এ শহরের সবচেয়ে বড় পরিচিতি তার রঙিন পাথর। পৃথিবীর ৭০ শতাংশ দামি নানা রংয়ের পাথর কেবল এখান থেকেই পাওয়া যায়। আর সেখানেই লুকিয়ে আছে এখানে বসবাসের রহস্য।
এখানে রঙিন পাথরের জন্য মাটি খনন হয়। পাহাড়ের তলায় গর্ত করে সেখানে বিশাল করে খুঁড়ে ফেলা হয় পাথর সংগ্রহের জন্য। সেই সব ফাঁকেই মানুষ পাথর তুলে নেওয়ার পর তৈরি করে নেন তাঁদের থাকার বাসস্থান।
কারণ মাটির তলায় এই সুড়ঙ্গ গুহায় পারদ থাকে অনেক নিচে। বাইরে যখন রোদে জ্বলছে চারধার, তখন মাটির তলায় মনোরম পরিবেশ। তাই অধিকাংশ বাসিন্দাই মাটির তলায় সংসার পেতেছেন। সেখানেই তাঁদের পরিবার নিয়ে বাস।
মাটির তলাতেই রয়েছে দোকানপাট। সেখানে যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস তাঁরা পেয়ে যান। রয়েছে হোটেল। রয়েছে রেস্তোরাঁও। আবার মিউজিয়ামও রয়েছে। অথচ এ শহরের সামনে দাঁড়ালে মনে হবে এ এক জনহীন প্রান্তর।
অস্ট্রেলিয়ার কুবার পেডি এমনই এক আজব শহর। যে শহরের এই বিশেষত্বের কারণে ১৯৮৫ সালের বিখ্যাত সিনেমা ‘ম্যাড ম্যাক্স বিয়ন্ড থান্ডারডম’-এর শ্যুটিং হয়েছিল এখানে।