আস্ত মিউজিয়ামে পাউরুটির ইতিহাস
মিউজিয়ামটির কোনায় কোনায় ছড়িয়ে আছে পাউরুটির পায়ের ছাপ। অর্থাৎ সুস্বাদু খাবারটির জন্মবৃত্তান্ত ও তার বিবর্তনের নিদর্শন।
আগুনে সেঁকা নরম পাউরুটি, আর সঙ্গে মাখন বা ঘুগনি। দিনের যে কোন সময়ে এমন দিলখুশ করা খাবার পেলে মেজাজ হয়ে ওঠে ফুরফুরে। পৃথিবীর যে কোনও দেশে রুটির পাশাপাশি পাউরুটিরও ভালোই কদর। চটজলদি এই খাবারটিকে সম্মান জানাতে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় তাই গড়ে উঠেছে আস্ত একটা পাউরুটির মিউজিয়াম। সেখানে একবার ঢুকে পড়লে বাহারি পাউরুটির চিত্ররূপময় ঘ্রাণে প্রাণমন ভরে উঠবে।
‘পানেউম’ নামের মিউজিয়ামটির কোনায় কোনায় ছড়িয়ে আছে পাউরুটির পায়ের ছাপ। অর্থাৎ সুস্বাদু খাবারটির জন্মবৃত্তান্ত ও তার বিবর্তনের নিদর্শন। কাঁচের শোকেসের ভিতরে, মিউজিয়ামের দেওয়াল বা সিলিং, যে দিকে চোখ যায়, শুধু পাউরুটিকেন্দ্রিক প্রদর্শনী চোখে পড়ে। পাউরুটির আদি যুগ, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তা তৈরির প্রক্রিয়া, মানুষের সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় জীবনে পাউরুটির প্রভাব, সব কিছুকেই নিপুণভাবে ধরা হয়েছে প্রায় ১২০০ রকমের সংগ্রহের মধ্যে দিয়ে।
মিউজিয়ামটির স্থাপত্যশৈলী বিষয়ভাবনার মতই স্মার্ট, ঝকঝকে, আকর্ষণীয়। মিউজিয়ামের কেন্দ্রে আছে একটি বিশেষ কক্ষ। যা মূলত প্রদর্শনশালা হিসেবে খুলে দেওয়া হয়েছে দর্শকদের জন্য। কক্ষটির নামটিও ভারি অদ্ভুত, ‘পাউরুটির বিস্ময়ঘর’। সেই ঘরের মাঝখান দিয়ে উঠে গেছে সর্পিল সিঁড়ি পথ। যা দর্শকদের নিয়ে যাবে একটি কাঠের কামরায়। সেখানে পাউরুটি সম্পর্কিত নানা তথ্য কাঠের ভাস্কর্যের মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
৯০০০ বছরের প্রবীণ পাউরুটির গুরুত্ব মানব জীবনে অপরিসীম। এমনটাই মনে করেন এক খ্যাতনামা বেকিং কোম্পানির মালিক পেটার আউগেনডপলার। তাই সাধের পাউরুটির ঐতিহাসিক যাত্রাপথের চড়াই-উৎরাইয়ের সঙ্গে সাধারণ মানুষের পরিচয় করাতে মিউজিয়াম গড়ার পরিকল্পনা মাথায় আসে তাঁর। তবে পাউরুটির মত নয়, বরং একটুকরো জমাট বাঁধা মেঘের চেহারায় মিউজিয়ামটিকে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন তিনি। আর তাঁর সেই ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিয়েছে ভিয়েনার বিখ্যাত নির্মাণকারী সংস্থা কোয়প হিমেলবাউ।