এক মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। তার ফল তাঁকে জীবন দিয়ে চোকাতে হয়। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজউদ্দৌলা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে নুসরত জাহান রফি নামে ওই তরুণীকে অগ্নিদগ্ধ করে হত্যার ছক কষে বলে অভিযোগ ছিল। এই কাজে তাকে সাহায্য করে আরও ১৫ জন। এই ঘটনায় প্রবল জনরোষ আছড়ে পড়ে জনপথে। দোষীদের শাস্তির দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। মাত্র ৭ মাসের মধ্যেই এই মামলার রায় ঘোষণা করল আদালত। সর্বোচ্চ সাজার নির্দেশ দিল আদালত।
গত ৬ এপ্রিল বাংলাদেশের একটি ছোট শহর ফেনিতে একটি সেমিনারে যোগ দিতে যান নুসরত। তার আগেই তিনি একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন। সেই মামলা চলছিল। ওইদিন ওই সেমিনারের মাঝেই তাঁকে যে বাড়িতে সেমিনার হচ্ছিল তার ছাদে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। ছাদে ওঠার পর বোরখা পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি তাঁকে ঘিরে নেয়। তারপর তাঁকে সিরাজউদ্দৌলার ওপর থেকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিতে থাকে। নুসরত তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে দেয় তারা। তারপর নুসরতের গায়ে আগুন দিয়ে দেওয়া হয়। পুড়ে মৃত্যু হয় তাঁর। গোটা ঘটনা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তত্ত্বাবধান করে সিরাজউদ্দৌলা।
এই ঘটনায় বাংলাদেশ জুড়ে প্রবল প্রতিবাদ আছড়ে পড়ে। বিক্ষোভ দেখান বহু মানুষ। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি ওঠে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে আশ্বাস দিয়ে দেশবাসীকে জানান, যারা এই ঘটনায় দোষী তাদের কঠোর শাস্তি হবে। সেই মামলা এতদিন চলছিল ফেনির মহিলা ও শিশু দমন নিরোধক ট্রাইব্যুনালে। সেই মামলার শেষে বৃহস্পতিবার সকালে বিচারক মামুনূর রশিদ সিরাজউদ্দৌলা সহ ১৬ জনকেই মৃত্যুদণ্ড দেন। সাজা ঘোষণার সময় ১৬ জনই আদালতে উপস্থিত ছিল। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা