কালো মেঘে ঢাকা আকাশ কেড়ে নিল ৬১৭ মেট্রিক টন মাছের প্রাণ
এমন কাণ্ড এর আগে তেমন একটা শোনা যায়নি। কালো মেঘে আকাশ ঢাকা পড়ার জেরে ৬১৭ মেট্রিক টন মাছের প্রাণ গেল একদিনে।
ঢাকা : বেশ কিছুদিন ধরে টানা গরমের পর আকাশ ছেয়ে গিয়েছিল কালো মেঘের পুরু আস্তরণে। আকাশ মেঘে ঢাকলেও বৃষ্টি নামেনি। বরং একটা ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস করছিলেন মানুষজন। রীতিমত কষ্টকর একটা দমবন্ধ পরিস্থিতি। মানুষ তার কষ্ট বুঝলেও মাছের কথা আর কে ভাবে! কিন্তু ওই অস্বাভাবিক ভ্যাপসা গরমে ক্রমে পুকুর, খাল, বিল সর্বত্র কিলবিল করা মাছের দলের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন কমতে থাকে। আর সেই অক্সিজেনের অভাব কেড়ে নিতে থাকে এক এক করে মাছের জীবন।
ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের রাজশাহী জেলায়। রাজশাহী জেলার একটা বড় অংশ জুড়েই এমন এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় গত মঙ্গলবার। এমন দমবন্ধ পরিস্থিতি দেখা যায়না বলেই জানিয়েছেন সেখানকার মানুষজন। আর সেই দমবন্ধ পরিস্থিতি সেখানে একদিনে প্রাণ কেড়েছে ৬১৭ মেট্রিক টম মাছের। সংখ্যায় কত মাছ তা গোনা মুশকিল। কিন্তু রাজশাহী জুড়েই এই মাছের মড়ক প্রাথমিকভাবে আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
মাছচাষ বাংলাদেশের এক অন্যতম অর্থনৈতিক ভরসা। বহু মানুষের জীবন, পরিবার চলে এই মাছচাষের ওপর ভরসা করে। কিন্তু সেই মাছের মড়ক তাঁদের আপাতত মাথায় হাতের কারণ হয়েছে। সরকারিভাবে জানানো হয়েছে ক্ষতির অঙ্ক বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ কোটি টাকা।
অক্সিজেনের অভাবে মারা যাওয়া মাছের মধ্যে কিছু মাছ বিক্রেতারা বুধবার সকালেই বিক্রি করেছেন কম দামে। বাংলাদেশের মুদ্রায় ৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে ২ থেকে ৩ কেজি ওজনের রুই, কাতলা। যা সেখানে সাধারণত ৯০ টাকা দামে বিক্রি হয়।
বাজারে কিছু মরা মাছ নিয়ে বিক্রির চেষ্টা করেন মৎস্য চাষিরা। যা দাম পেয়েছেন তাতেই ছেড়ে দিয়েছেন মাছ। কিন্তু অধিকাংশ মাছ বিক্রি হয়নি। সেই বিপুল পরিমাণ মাছ মাটি খুঁড়ে পুঁতে দেওয়া হয়। আর্থিক ক্ষতির মুখে এখন কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকেই। তবে কিছু পুকুরে বাড়তি অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার জন্য মেশিন থাকায় সেখানকার মাছ বেঁচে গেছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা