রবিবার এমনিতেই ছুটি। আর বর্তমান নিয়মে মাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ শনিবার ব্যাঙ্ক বন্ধ। ফলে ২২ ও ২৩ তারিখ এমনিতেই ব্যাঙ্ক বন্ধ। তার ঠিক আগের দিন শুক্রবার কার্যত হিসেব কষেই যেন ডাকা হল ব্যাঙ্ক ধর্মঘট। তাতে টানা ৩ দিন ছুটি পেয়ে গেলেন ব্যাঙ্ককর্মীরা। এমন হিসাবে কষে ধর্মঘটের সঙ্গে এ রাজ্য পরিচিত। কারণ রাজনৈতিক ধর্মঘটগুলোও এভাবেই ছুটি বুঝে টানা ছুটির বন্দোবস্ত করেই ডাকা হত। এখানেই শেষ নয়। ব্যাঙ্ক সোমবার খুললেও খুব স্বাভাবিক নিয়মে ২৫ ডিসেম্বর ছুটি। অর্থাৎ মঙ্গলবার ছুটি। সেই ছুটির রেশটা পরদিনও উপভোগের সুযোগ করে দিতেই যেন বুধবার ফের রয়েছে ব্যাঙ্ক ধর্মঘট। ফলে টানা ২ দিন ছুটি হয়ে গেল এই বছর শেষের শীতের দিনে। যদি সিএল হাতে থাকে তাহলে তো কথাই নেই! সোমবারটা সিএল করে নিতে পারলেই টানা ৬ দিনের একটা দুরন্ত ছুটি ব্যাঙ্ক কর্মীদের। বেশ চুটিয়ে কাছে পিঠে ঘুরে আসা যায় অনায়াসে। ব্যাঙ্ক সংগঠনগুলির বিভিন্ন দাবি দাওয়াকে সামনে রেখে এমন হিসেব কষা ধর্মঘটে কিন্তু কার্যত বছর শেষে নাভিশ্বাস উঠেছে আমজনতার। এদিন অনেক এটিএমের শাটার নামানো অবস্থায় দেখা গেছে। প্রয়োজনে টাকা তোলার জন্য না আছে ব্যাঙ্কের দরজা খোলা, না পাওয়া যাচ্ছে ঠিকঠাক করে এটিএম পরিষেবা। সব এটিএম বন্ধ এমন নয় ঠিকই। কিন্তু অনেক এটিএম-ই প্রভাবিত হয়েছে। যদিও শুক্রবারের ধর্মঘট থেকে খাতায় কলমে বাদ দেওয়া হয়েছে এটিএম পরিষেবাকে।
তাঁদের মাইনে সংক্রান্ত যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ২০১৭ সালে হয়েছিল তা কার্যকর করার দাবিতে এদিন দেশের প্রায় ৩ লক্ষ ২০ হাজার ব্যাঙ্ক আধিকারিক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। তাঁদের ধর্মঘট সফল বলেও দাবি করেছে সংগঠন। বড়দিনের পর দিন ২৬ ডিসেম্বর আবার অন্য ইস্যুকে সামনে রেখে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক ইউনিয়নস। বিভিন্ন ব্যাঙ্ককে মিলিয়ে দেওয়া বন্ধ করার দাবিতেই তাদের এই ধর্মঘট। ধর্মঘট কর্মী বা ব্যাঙ্ক আধিকারিক সংগঠন করবে কিনা তা তাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু এমন হিসেব কষে দিন বেছে বেছে ধর্মঘটে কার্যত আমজনতার জীবন ওষ্ঠাগত। এটা বোধহয় ধর্মঘট ডাকার সময় তাদের মনে রাখা দরকার ছিল। অন্তত এমনই মনে করছেন এদিন টাকার জন্য হন্যে হয়ে ঘোরা বহু মানুষ।
(সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা)