
ওই শয়তান আমাকে ওর সেক্স টয় হিসেবে ব্যবহার করত। ওর জন্য আমি নিজেকে শেষ করে দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। এমন কোনও দিন যায়নি যে দিন আমি ওর যৌন হেনস্থার যন্ত্রণায় ভুগিনি। ও আমার ভাল ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে। একের পর এক এভাবেই আছড়ে পড়ছিল কিছু মানুষের প্রবল ঘৃণা। আর সেই ঘৃণার লক্ষ্য ছিল এক জনই। একসময়ে তাদের ফুটবল কোচ!
১৯৭৯ থেকে ১৯৯১, ১২ বছর ধরে গুরুর হাতে নানাভাবে, নানা সময়ে যৌন হেনস্থার শিকার হওয়ায় ছাত্ররা এই ভাষাতেই তাদের অসহনীয় যন্ত্রণার সাক্ষ্য দিলেন লিভারপুল আদালতে। গত সোমবার ফুটবল কোচের শাস্তির বিধান শুনতে লিভারপুল আদালতে হাজির হন তাঁরা। তাঁদের সামনে প্রাক্তন ফুটবল কোচ ব্যারি বেনেলকে এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। কুকীর্তির পর্দা ফাঁস হওয়ার মুহুর্তে ছাত্রদের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল ব্যারি বেনেল। ব্যারির শীতল দৃষ্টি যদিও বন্ধ করতে পারেনি তার বিকৃত লালসার ফাঁদে পড়া ছাত্রদের মুখ।
ষাটোর্ধ ব্যারি একসময় ম্যাঞ্চেস্টার সিটি যুব দলের প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিল। ক্রু আলেকজান্দ্রা দলের কোচের পদও বেশ কয়েক বছর সামলেছে সে। প্রতিভাবান আঞ্চলিক ফুটবলারদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের জাত ফুটবলার গড়ে তোলাই ছিল ক্লাবগুলির লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যপূরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ব্যারিকে। অভিযোগ, বাস্তবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে যৌন লালসা পূরণের দিকেই ব্যারি ঝুঁকে পড়ে। উঠতি ফুটবলারদের বড় সুযোগ দেওয়ার নামে দিনের পর দিন তাদের ওপর যৌন নিপীড়ন করতে থাকে সে। ব্যারির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, কোচ থাকাকালীন বহুবার তার যৌন লালসার মুখে পড়তে হয়েছিল একাধিক নাবালক, কিশোর ফুটবলারদের। ১৯৯৪ সালে প্রাক্তন ফুটবল কোচের হাতে বেশ কয়েকজন কিশোর ফুটবলারের যৌন হেনস্থার কথা প্রথম প্রকাশ্যে আসে। সেবার ৪ বছরের হাজতবাসের ওপর দিয়ে ফাঁড়া কেটেছিল ব্যারি বেনেলের। এবারে সেই একই অপরাধের পুনরাবৃত্তির সাজা কিন্তু হল দৃষ্টান্তমূলক। নাবালক, কিশোর ফুটবলারদের কেরিয়ার গড়ার স্বপ্নকে এভাবে দুঃস্বপ্নে পরিণত করার অভিযোগে গত সোমবার থেকে আগামী ৩০ বছর জেলের কুঠুরিকে প্রাক্তন ফুটবল কোচের আস্তানা করে দিলেন লিভারপুল আদালতের বিচারক।