ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিংবা কারও প্ররোচনায় পড়ে এই কাজটি কখনও করতে নেই
জীবনে এমন একটি কাজ, যা কখনও কোনও ভাবেই ও কারও প্ররোচনাতেই করতে নেই।
বছরের পর বছর ধরে একটা প্রচলিত প্রথা আছে, দীক্ষার আগে বাবা-মায়ের, বিবাহিতদের স্বামীর অনুমতি নিতে হয়। তাঁরা অনুমতি না দিলে দীক্ষা দেওয়া যাবে না। অনুমতি ব্যতিরেকে দীক্ষা নিলে সেই দীক্ষায় পারমার্থিক কোনও কল্যাণ হয় না।
দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা এই কথাটা একেবারেই সঠিক নয়। যে কোন নারী বা পুরুষ, বাবা-মা কিংবা স্বামীর অনুমতি ছাড়া দীক্ষা নিতে পারে আত্মোন্নতি বা পারমার্থিক কল্যাণার্থে। এতে কোনও দোষ নেই। এমনকি বাবা মায়ের অনুমতি না নিয়েই গৃহত্যাগ করে মুক্তিকামী সন্ন্যাসজীবনে আত্মনিয়োগ করলেও কোনও দোষ হয় না কারণ, ওই একটাই, লক্ষ্য আত্মিক বা পারমার্থিক উন্নতি।
বাবা-মা স্বামী পারিবারিক জীবনের সকলেই গুরু পদবাচ্য। সেই জন্য অনুমতি চাওয়াটা আর কিছুই নয়, শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। শাস্ত্রে এঁদের অনুমতি ব্যতিরেকে দীক্ষা নেওয়া যাবে না, এমন কথার কোনও উল্লেখ নেই। স্বামী কিংবা স্ত্রী একা দীক্ষা নিতে পারে তাতেও কোনও দোষ নেই।
আরও একটা প্রচলিত কথা স্বামী যে মন্ত্রে দীক্ষিত নিয়েছে, স্ত্রীকেও সেই মন্ত্রে দীক্ষা নিতে হবে কিংবা একই গুরুর কাছ থেকে উভয়কেই দীক্ষা নিতে হবে, এমন কোনও নিয়মের উল্লেখ নেই তন্ত্রশাস্ত্রে। উদারতায় ভরা ভারতীয় তন্ত্রের উদারনীতি হল, যারা যেখানে খুশি, নিজের পছন্দমতো ইষ্ট নির্বাচন করে দীক্ষা নিতে পারে। কোনও বিধিনিষেধ নেই তবে মনের বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিংবা কারও প্ররোচনায় পড়ে কখনও দীক্ষা নিতে নেই। — তথ্য — শিবশংকর ভারতী