দৃষ্টিদোষ বা স্পর্শদোষ সত্যি না অবাস্তব, এ প্রসঙ্গে সাধুবাক্য
দৃষ্টিদোষ ও স্পর্শদোষ এগুলি অনেকেই কুসংস্কার বলে উড়িয়ে দেন।
দৃষ্টিদোষ ও স্পর্শদোষ এগুলি অনেকেই কুসংস্কার বলে উড়িয়ে দেন। অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ফলন্ত আমগাছ তিনদিনে শুকিয়ে কাঠ হয়েছে, দামি মাছ রান্না করার পর মুখে দেওয়া যায়নি, দুধের গরুর বাঁটে নজর লাগলে দুধ শুকিয়ে যাওয়া, দোকানে নজর লাগলে খদ্দের কমে যাওয়া এমন নানান ধরনের কথা সংসারীদের অনেকের মুখে শোনা যায়।
১৯৮১ সালে গঙ্গোত্রীতে এক বৃদ্ধ সাধুবাবা কথা প্রসঙ্গে বলেছিলেন মানুষের দৃষ্টিতে এমনিই এক তীব্র শক্তি নিহিত আছে, যে শক্তির দ্বারা অত্যন্ত সুন্দরীর রূপ সৌন্দর্য দৃষ্টির দ্বারা চিরতরে নষ্ট করে দেওয়া যায়।
ব্রজবিদেহী মহন্ত স্বামী শ্রীশ্রী রামদাস কাঠিয়া বাবাজী মহারাজ বলেছেন, গুরু তার ভক্ত বা শিষ্যের দুর্ভোগ মুক্ত করেন তিন ভাবে, দৃষ্টির দ্বারা, বাক্যের দ্বারা আর স্পর্শের দ্বারা। সত্ত্বগুণী মানুষের দৃষ্টি সত্ত্বগুণ সম্পন্ন। এ দৃষ্টিতে মানুষের সার্বিক সুখ ও কল্যাণ হয়। তমোগুণীদের দৃষ্টি দোষদুষ্ট। ফলটা বিপরীত হয়ে থাকে। কিন্তু এসব কথা আধুনিক বিজ্ঞানীদের অনেকেই বিশ্বাস করেন না। এক ফুঁয়ে উড়িয়ে দিয়ে থাকেন। এটা যে ভ্রান্ত ধারণা ও কুসংস্কার নয় তা স্বামী সন্তদাস বাবাজী মহারাজের কথাতেই বোঝা যায় –
‘দৃষ্টিদোষ ও স্পর্শদোষ এ সব সত্য সত্যই আছে। তুমি বোঝ না বলেই যে নেই তা তো নয়। এমন লোক আছে যে (সম্মুখস্থ একটি বৃক্ষ দেখিয়ে) ওই গাছটার পানে তাকালে গাছটার পাতাগুলি শুকিয়ে যেতে পারে, গাছটি মরে যেতে পারে। সে যে ইচ্ছে করে কোনও বিদ্যার প্রভাবে গাছটির পাতাগুলো নষ্ট করবে তা নয়, তার দৃষ্টিই এমনি। সে হয়তো ইচ্ছে করে গাছটার কোনও অনিষ্ট করতে চায়, তা নয় কিন্তু তার দৃষ্টির দোষ এমন যে তার প্রভাবে গাছটার অনিষ্ট হবেই। এমনি স্পর্শদোষও আছে। কারও ভিতর খুব বেশি কারও ভিতর খুব কম, কিন্তু অল্পবিস্তর সকলের মধ্যেই আছে। অপরের দৃষ্টির প্রভাবে অপরের স্পর্শের প্রভাবে তোমার ভিতরে মলিনতা আসতে পারে- এ কথা সত্য বলে জানবে। তাই অপরের দৃষ্টিদোষ ও স্পর্শদোষ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা অবশ্যই করা উচিত। এর থেকে অপরকে ঘৃণার কথা আসে না।’