Feature

এ মেলা ভূতের মেলা, দুর্বল হৃদয়ের মানুষজনের যাওয়া অনুচিত

এটা একটা মেলা। আপাত দৃষ্টিতে মেলা হলেও এ হল ভূতের মেলা। সাধারণ মানুষেরই সেখানে যাতায়াত। তবে দুর্বল হৃদয়ের মানুষজন ভুলেও এ মেলা দেখতে যাবেননা।

এ মেলা দুর্বল হৃদয়ের মানুষজনের জন্য একেবারেই নয়। তাঁদের এ মেলার ত্রিসীমানার মধ্যে না ঘেঁষাই ভাল। এছাড়া যে কেউ ঘুরে আসতে পারেন এ মেলায়। বাংলা ক্যালেন্ডারে ঋতু বিভাজন অনুযায়ী শীতকাল হল পৌষ ও মাঘ মাস। শীত শেষ হয় মাঘ মাসে।

এই মাঘ মাসই বসে মেলাটি। চলে ৩ সপ্তাহ ধরে। ইংরাজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে এই মেলা। সবচেয়ে সরগরম হয়ে ওঠে মাঘী পূর্ণিমার দিন।


এ মেলা ভূতের মেলা। যদিও সাধারণ মানুষই হাজির হন এখানে। তবে এ মেলা ভূতের মেলা হওয়ার কারণ আছে। এখানে শুধু আশপাশ থেকে নয়, দূরদূরান্ত থেকে মানুষ হাজির হন একটাই আশায়।

যদি কেউ মনে করেন বা তাঁর পরিবার পরিজন মনে করেন যে তাঁকে ভূতে ধরেছে তাহলে এ মেলায় এলে সে ভূতের হাত থেকে নিষ্কৃতি মিলবেই বলে বিশ্বাস সকলের। এ মেলায় ভূত ছাড়াতে হাজির হন বহু মানুষ।


যদি তাঁরা মনে করেন যে তাঁদের ভূতে ধরেছে তাঁরা এখানে আসা পুরোহিতদের কাছে হাজির হন। সেই ওঝা বা পুরোহিত তাঁর চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে একটা বিশেষ জায়গায় নিয়ে আসেন। এখানে তৈরি থাকে একটি ঝাঁটা।

সেই ঝাঁটা দিয়ে শুরু হয় বেদম প্রহার। তার সঙ্গে চলতে থাকে জোর গলায় মন্ত্রোচ্চারণ। চারপাশে বহু মানুষ ভিড় করে দেখতে থাকেন এই ভূত তাড়ানোর প্রক্রিয়া।

এসব যেখানে হয় তার কাছেই বটগাছ থাকতে হয়। এ মেলা প্রাঙ্গণে একাধিক এমন বটগাছ আছে যার কাছাকাছি এই ভূত ছাড়ানোর প্রক্রিয়া চলতে থাকে। সেখান থেকে বট গাছ পর্যন্ত একটি পথ তৈরি করা হয়।

সেই পথের ধারেকাছেও কেউ ঘেঁষেন না। বিশ্বাস যে ওই পথেই ভূত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ছেড়ে চলে যাবে বট গাছে। সেখানে পাতায় বাসা বাঁধবে তারা। সেখানেই থেকে যাবে চিরতরে।

এভাবেই প্রতিবছর মধ্যপ্রদেশের মালাজপুর ভূতের মেলায় শত শত মানুষ হাজির হন। তাঁরা বিশ্বাস করেন তাঁদের আর কিছু হয়নি, কেবল ভূতে ধরেছে। তাঁরা আসেন মেলায় ভূত ছাড়াতে। আর বহু মানুষ আসেন সেই ভূত ছাড়ানো দেখতে।

সবাই যে এসব বিশ্বাস করেন তা নয়। তবে যাঁরা করেন তাঁরা এই মেলায় হাজির হওয়ার জন্য সারাবছর দিন গোনেন। ঘুরে আসতে পারেন ভূতের মেলা, তবে দুর্বল হৃদয়ের মানুষজন ভুলেও যাবেননা।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button