মধুর প্রতিশোধ, রাস্তা ঝাঁট দিল রোলস-রয়েস
মানুষকে হেয় করার ফল কি হয় তা টের পাইয়েছিলেন ভারতের এক মহারাজা। রোলস-রয়েসের মত গাড়ি কিনে তা দিয়ে রাস্তা ঝাঁট দিইয়েছিলেন তিনি।
কাহিনিটা শুরু হয়েছিল ইংল্যান্ডে। ১৯১০-এর শুরুর দিকে ইংল্যান্ডে বেড়াতে গিয়েছিলেন আলোয়ারের মহারাজা জয় সিং প্রভাকর। সেখানে গিয়ে তিনি সুন্দর সুন্দর গাড়ি দেখে মুগ্ধ হন। রোলস-রয়েস গাড়ির একটি শোরুম সামনে দেখে তিনি ঢুকে পড়েন সেখানে।
রাস্তায় বেড়াতে বেরিয়েছিলেন তিনি। পরনে ছিল সাধারণ পোশাক। দোকানে প্রবেশের পর গাড়ি দেখানো দূরে থাক, কার্যত অপমান করে মহারাজকে রোলস-রয়েসের শোরুম থেকে বার করে দেন কর্মচারীরা।
এই অপমানটা হজম করতে পারেননি মহারাজা। তিনি তখনকার মত হোটেলে ফিরলেও তারপর তাঁর রাজ পোশাকে ফিরে যান সেই শোরুমে। তাঁর সাজপোশাক দেখে তাঁকে খাতির করা শুরু করেন দোকানের কর্মীরা।
যেখানে সেই সময় একটা রোলস-রয়েস কেনাই ধনী মানুষদের কাছে একটা স্বপ্ন ছিল সেখানে সেদিন একসঙ্গে একাধিক রোলস-রয়েস কিনে নেন মহারাজা। তারপর সেগুলি ভারতে নিয়ে আসেন।
ভারতে আনার পর এই রাজকীয় গাড়িতে না চড়ে রোলস-রয়েসগুলিকে তিনি রাস্তা সাফ করার গাড়িতে পরিণত করেন। গাড়িতে ঝাঁটা লাগিয়ে রাস্তা সাফ করানোই নয়, রাস্তার জঞ্জালও ওই গাড়িতে করেই তুলে আনার নির্দেশ দেন তিনি। সে সময় বিশ্বের অন্যতম রাজকীয় গাড়িগুলি পরিণত হয়ে যায় জঞ্জালের গাড়িতে।
এ খবর চাপা থাকেনি। মহারাজা জয় সিং প্রভাকরের সেই প্রতিশোধের খবর রোলস-রয়েস সংস্থার কাছেও পৌঁছয়। কর্মীদের দুর্ব্যবহারের জন্য সংস্থার তরফে মহারাজার কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়।
কেবল পোশাক বা কেমন দেখতে লাগছে তা দেখে কাউকে যে বিচার করে নেওয়া উচিত নয়, মানুষকে এভাবে হেয় জ্ঞান করা যে অন্যায় তা কিন্তু দাপটের সঙ্গে সেদিন ব্রিটিশদের বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মহারাজা জয় সিং প্রভাকর। সেই কাহিনি আজও মুখে মুখে ঘোরে।