Feature

এক ব্রিটিশ প্রশাসকের ভয়ের জেরে জন্ম নেয় এই বিখ্যাত মানসিক হাসপাতাল

এক ব্রিটিশ শাসকের ভয় যে কোন পর্যায়ে পৌঁছেছিল তার এক জলজ্যান্ত উদাহরণ এই বিখ্যাত মানসিক হাসপাতাল। যা তাঁর কথা মাথায় রেখেই তৈরি।

মানসিক রোগীদের চিকিৎসার জন্য যে কয়েকটি হাসপাতাল ভারতে বিখ্যাত তার একটি এটি। সাধারণ মানুষ একে পাগলাগারদ বলতেন। এটি তৈরির পিছনে অবশ্য জড়িয়ে আছে এক ব্রিটিশ আধিকারিকের ভয়।

তিনি আগ্রা শহরে ১৮৫৩ সালে লেফটেনেন্ট গভর্নর পদাধিকারী হয়ে হাজির হন। পরিবার নিয়ে আগ্রাতেই তিনি তাঁর প্রশাসনিক কাজ সামলাতে শুরু করেন। এদিকে অল্প সময়ের মধ্যেই ১৮৫৭ সালে উত্তরপ্রদেশের মেরঠ ও ঝাঁসিতে ছড়িয়ে পড়ে সিপাহীবিদ্রোহের আগুন।


ভারতীয় সেপাইদের ছড়িয়ে পড়া বিদ্রোহ সে সময় অনেক ব্রিটিশ অফিসারের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল। সেই ভয়ই পেয়ে বসেছিল আগ্রার লেফটেনেন্ট গভর্নর জন রাসেল কেলভিন-কে।

তিনি আতঙ্কে তাঁর পরিবার নিয়ে আগ্রা ফোর্টে আশ্রয় নেন। সে সময় অনেক ব্রিটিশ আধিকারিকই ভয়ে পরিবার নিয়ে আগ্রা দুর্গে লুকিয়েছিলেন। ভারতীয় সেপাইদের বিদ্রোহ তাঁদের শিরদাঁড়া দিয়ে হিমস্রোত বইয়ে দিয়েছিল।


আগ্রা ফোর্টে আশ্রয় নিয়েও কেলভিনের কিন্তু ভয় কাটেনি। তাঁর সারাক্ষণ মনে হতে থাকে আগ্রা ফোর্টে যে সহস্রাধিক ভারতীয় সেপাইরা রয়েছেন তাঁরাও যে কোনও মুহুর্তে বিদ্রোহ করতে পারেন। তখন আর তাঁর পালাবার পথ থাকবেনা।

এই ভয়ের জেরে তিনি ক্রমশ মানসিক সমস্যায় ভুগতে থাকেন। অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সারাক্ষণ তাঁকে অজানা ভয় তাড়া করে বেড়াত। এই আতঙ্কই তাঁর প্রাণ কেড়ে নেয় ১৮৫৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর।

এই ঘটনার পর ব্রিটিশদের মনে হয় আগ্রাতে একটা মানসিক রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল থাকলে হয়তো কেলভিনকে এভাবে আতঙ্কের জেরে প্রাণ দিতে হতনা।

সেকথা মাথায় রেখে ১৮৫৯ সালে আগ্রায় তৈরি হয় একটি মানসিক রোগীদের জন্য হাসপাতাল। ভারতে তার আগে কলকাতা, বম্বে ও মাদ্রাজ শহরে এমন মানসিক রোগীদের হাসপাতাল ছিল। চতুর্থটি তৈরি হয় আগ্রায়।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button