আজীবনের বন্ধু খোঁজার উৎসব, বাংলার প্রাচীন উৎসবে সাদা মালায় বন্ধু বাছেন নারী পুরুষ
ডিজিটাল যুগে বন্ধু খুঁজতে মাঠে জমায়েত করতে হয়না। এ উৎসব তারপরেও বহাল তবিয়তে নিজস্ব মহিমায় অটুট। আজও বাংলার এই বন্ধু খোঁজার উৎসবে নারী পুরুষের ঢল নামে।
ডিজিটাল দুনিয়া সব প্রাচীন ভাবনাকে গিলে খেতে যে পারেনি তার উদাহরণ রয়েছে। তারই একটি উদাহরণ বাঁকুড়ার এক প্রত্যন্ত গ্রামের এই উৎসব। যে উৎসবকে কেন্দ্র করে সাজ সাজ রবে অনেকদিন আগে থেকে মেতে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এখানে মন্দিরে পুজো দিয়ে এ উৎসবের সূচনা হয় একটি মাঠে। বাঁকুড়ার আকুই নামে এক গ্রামের এই উৎসব বাংলার প্রাচীন উৎসবগুলির একটি বলাই যেতে পারে। যে উৎসব গত ১৫০ বছর ধরে এমন এক ভাবনাকে সামনে রেখে চলে আসছে যা বেশ চমক দিতে পারে।
এ উৎসব সই পাতানোর উৎসব। এ উৎসব বন্ধু খোঁজার উৎসব। এ উৎসবের নাম সহেলা উৎসব। আকুই গ্রামের সয়লা মাঠে হাজির হন বহু মানুষ। উৎসব ঘিরে গোটা এলাকাটা উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠে।
নানা বয়সের মানুষ একসঙ্গে জড়ো হন এ মাঠে। তারপর নারীরা অন্য নারীকে খুঁজে নেন বন্ধুত্ব করার জন্য। পুরুষরাও অন্য পুরুষকে খুঁজে নেন বন্ধুত্ব পাতানোর জন্য।
বন্ধুত্বের শর্ত হল তাঁরা আজীবন একে অপরের বন্ধু থাকবেন। সে জীবনে ঝড়ই আসুক বা আনন্দ। দুঃখে, কষ্টে, আনন্দে সবসময় তাঁরা বন্ধু থাকবেন। এই বন্ধুত্ব পাতানোর জন্য পুরুষরা যে বয়সেরই হোন না কেন একে অপরকে একধরনের সাদা মালা পরিয়ে দেন। তৈরি হয় নতুন বন্ধুত্ব।
নারীরাও তাঁদের পছন্দের নারীর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতান এই সাদা মালা বদলের মধ্যে দিয়েই। সঙ্গে থাকে একটি ঝুড়ি। যা একসঙ্গে মাথায় ঠেকিয়ে তাঁরা সই পাতান। এই উৎসবকে ঘিরে বিশাল মেলা বসে এই প্রাঙ্গণে।
প্রতিবছর অবশ্য এই মেলা বসে না। এখন ৫ বছর অন্তর হয় এই মেলার আয়োজন। এবার যেমন এই মেলায় মেতে উঠতে পেরেছেন মানুষজন।