নদীর ধারে বসে মুড়িমেলা, মাখা মুড়ির আনন্দে মাতে লক্ষাধিক পরিবার
প্রতিবছর এ যেন এক উৎসব। এলাকার মানুষ সারাবছর অপেক্ষায় থাকেন এখানে একটা দিন নদীর ধারে বসে পরিবার নিয়ে মুড়ি মাখা খাবেন বলে।
এই বাংলায় এমন অনেক কিছু রয়েছে যা যেমন এক পরম্পরা, তেমনই এক আনন্দ উৎসব। শীতকালে আবার মেলার আয়োজন হয় নানা প্রান্তে। মেলা বলতে যা বোঝায় তা তো সকলের জানা। কিন্তু এই বাংলাতেই এমনও একটি স্থান রয়েছে যেখানে মানুষ মুড়ির মেলায় অংশ নেন।
এখানে নদীর ধারে খোলা আকাশের নিচে বসে পরিবারের সকলে মিলে মুড়ি খাওয়াটাই উৎসব। এটাই আসল মেলা। আশপাশ থেকে যেমন পরিবার নিয়ে মানুষ আসেন, তেমন দূরদূরান্ত থেকেও অনেকে হাজির হন।
বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ায় দ্বারকেশ্বর নদের ধারে বসে এই মুড়ির মেলা। প্রতিবছর মকরসংক্রান্তির পর এই মেলার আয়োজন হয়। এই মেলার নামই মুড়ির মেলা। কারণ এখানে পরিবার নিয়ে সকলে হাজির হন মুড়ি খেতে।
বাড়ি থেকে মুড়ি, শসা, আচার, টমেটো, কাঁচা লঙ্কা, তেলেভাজা নিয়ে সকলে চলে আসেন এখানে। তারপর নদীর ধারে বালিয়াড়ির ওপর বসে পড়েন কিছু একটা পেতে। এ মেলায় পরিবারের সঙ্গে অংশগ্রহণ একটা দেখার মত বিষয়।
এখানে কেউ একা নন, পরিবার নিয়ে মুড়ি খাওয়ায় মেতে ওঠেন। মুড়ি মাখা হয় সাধারণভাবে একটি কাগজ বা পাত্রে। সেখান থেকেই মাখা মুড়ি পরিবারের সকলে তুলে তুলে খান। আবার অনেকে মুড়ি দিয়ে তরকারি বা ঘুগনি মেখেও খান এখানে।
এ মেলার বয়স প্রায় ২০০ বছর। প্রতিবছরই এই মুড়িমেলা বসে দ্বারকেশ্বর নদের ধারে বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ায়। অনেকেই এখনও এই মুড়িতে দ্বারকেশ্বর নদের জল ছিটিয়ে তারপর নানা কিছু দিয়ে মেখে নেন।
এখানে মুড়িতে দ্বারকেশ্বরের জল ছেটানোও একটা রীতিই হয়ে গেছে। বাংলার এও এক মেলা। যার আয়োজনে আজও কোনও খামতি নেই। নেই উৎসাহে খামতি।