Mythology

সাধুবাবার জন্য খাবার পাঠালেন শ্রীরামচন্দ্র, আনলেন স্বয়ং হনুমান

আশেপাশে কোনও গ্রাম তো দূরের কথা, একটা গাছপালাও নেই। ভরদুপুরে সুমিষ্ট ফল আর পিপাসা মেটাতে ডাব, একথা ভেবে আজও কোনও উত্তর পাইনি।

সারাজীবন ধরে দেখেছি কপালের একটা ব্যাপার আছে। এমন অনেক পুরুষ আছে যাদের কপালে একটার পর একটা সুন্দরী জুটে যায় না চাইলেও। এমন অনেক মেয়েকে দেখেছি তাদের কপালে লাইন দিয়ে লেগে থাকে ছেলে। অনেক ক্ষেত্রে রূপ বা গুণটাও কোনও ব্যাপার না, কপালগুণেই জুটে যায়। সারাজীবন পথ চলার অভিজ্ঞতায় দেখলাম আমার কপালে না জুটেছে কোনও সুন্দরী, না জুটেছে উপকারী কোনও পুরুষ। এটা একটা আমার মনকষ্টের কারণ। সাধুসঙ্গের সময় জিজ্ঞাসা করি, বাবা, আপনার জীবনে এমন কোনও সুখ বা দুঃখের ঘটনা কি আছে যা আপনার আজও স্মরণে আছে? আজ সাধুসঙ্গের সময় কোনও সাধু বা কেউ যদি ঠিক ওই প্রশ্নই ঘুরিয়ে আমাকে করে তাহলে আমার মনকষ্টের কারণ বলব ওটাই। সুখের কথা জিজ্ঞাসা করলে বলব, সারাজীবন আমার কপালে না চাইতেই জুটেছে সাধু আর সাধু, সঙ্গে তাদের ভিক্ষে করে পাওয়া রুটি।

তখন মা আমার বেঁচে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির দুটি সংবাদপত্র গ্রুপে আমার লেখা চলছে। পত্রিকা কিংবা বই লেখার কারণে গেছি হরিদ্বারে। একদিন ভাবলাম, যদি কখনও সাধু হই তাহলে ভিক্ষা করতে বসলে আমাকে কেউ ভিক্ষে দেবে কিনা একবার দেখা যাক। একটা নামাবলী আর হলুদ রঙের গামছা কিনলাম। ‘মিশ্রভবনে’ যেখানে আমি উঠি, সেখানে জামা কাপড় রেখে ঘর বন্ধ করে গামছা পরে গায়ে নামাবলী জড়িয়ে ‘হর কি পেয়ারি’-তে বসে গেলাম ভিখারিদের সঙ্গে। অর্থের সংস্থানের জন্য সামনে একটা স্থানীয় হিন্দি ‘দৈনিক জাগরণ’ বিছিয়ে।


এখানে একটা কথা বলি, আমার চেহারাটা একেবারেই ভিখারিমার্কা। বনেদি ও সম্ভ্রান্ত ঘরে যাদের জন্ম, তারা অত্যন্ত অভাবে থাকলে কিংবা অবস্থা পড়ে গেলেও চেহারায় বনেদিয়ানার রেশটুকু আমি কখনও মিলিয়ে যেতে দেখিনি। ভিখারি পার্টিরা যদি কখনও অর্থবান কিংবা সার্বিক যতই উন্নত পর্যায় যাক না কেন, চেহারায় বনেদিয়ানার ছাপ কিছুতেই আসে না। আসবে আমার মত ভিখারিয়ানার ছাপ। এই সত্যকে অস্বীকার করার কোনও উপায় আছে কিনা আমার অন্তত জানা নেই।

যাইহোক, সারাদিন ধরে ‘ভিক্ষা করব’ এই ব্রত নিয়ে বসে থেকে সন্ধ্যায় যখন ‘হর কি পেয়ারি’ থেকে মিশ্রভবনের পথে, তখন দেখলাম একটা মানুষের ক্ষুন্নিবৃত্তির জন্য যেটুকু প্রয়োজন তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি পেয়েছি। সেদিন আমার একটা বিশ্বাস জন্মাল, ছোটবেলায় খুব অন্ন কষ্ট পেয়েছি, তাই পেটের জন্য চিন্তা একটা ছিল, সেদিন থেকে এই লেখা পর্যন্ত অন্নের চিন্তাটা সাধুদের মতো আমার আর কখনও হয়নি।


ভিক্ষাবৃত্তিতে বসে যে অভিজ্ঞতা হল এবার তা বলি। তীর্থযাত্রীদের মধ্যে আমার পেতে রাখা খবরের কাগজে ভিক্ষারূপ যে টাকা ও খুচরো পয়সা পড়ল তা সবই অবাংলাভাষীদের হাত থেকে। সকাল থেকে সন্ধ্যার খানিক আগে পর্যন্ত একটা বাঙ্গালি তীর্থযাত্রীর একটা পয়সা, না আমার পাতে, না আমার মতো অন্য কোনও ভিখারি কিংবা সাধুদের পাতে পড়ল। আজ বুঝি, সাধুদের কেন খাওয়ার চিন্তা নেই আর কেউ কখনও সাধুজীবনে যে না খেয়ে নেই, ‘বেটা, কুছ না কুছ খানা মিল হি যাতা হ্যায়’ – একথার সত্যতা শিরা উপশিরায় উপলব্ধি করেছি।

ভ্রমণে একা চলায় যেমন সুখ আছে যথেষ্ট, অ-সুখও কিন্তু কম নয়। আমার খেয়েদেয়ে কাজ না থাকলে যেমনটা হয় আর কি! হরিদ্বারে সেবার ছিলাম পনেরো দিন। ঘুম থেকে উঠে গঙ্গার ওপার থেকে ঘুরে ‘হর কি পেয়ারি’ হয়ে ফিরে আসি নিজের ডেরা মিশ্রভবনে। এখানে বিগত ত্রিশবছর ধরে বছরে তিন থেকে চারবার এসে উঠি। এইভাবেই কাটছে আমার দিনগুলো।

একদিনের কথা। নজরে এল এক অতি বৃদ্ধ সাধুবাবা বসে আছেন হর কি পেয়ারিতে। যারা ভোজনরসিক তারা বাজারে ঢুকলেই ঠিক ভালো মাছ বা সবজি টুক করে তুলে নেন নোটের পরোয়া না করে, আমি দেখামাত্র প্রণাম করে সাধুবাবাকে টুক করে গ্রহণ করি অন্তরে। সরাসরি পায়ের কাছে বসে পড়লাম ধুলোয় ভরা অঙ্গনে। হতবাক বৃদ্ধের মুখখানা অপলক হয়ে রইল আমার মুখের দিকে। হাসি হাসি মুখ করে বললাম,

– বাবা, ম্যায় কলকাত্তাসে, আপ কাহা সে?

Haridwar
হরিদ্বারে গঙ্গার ঘাট – সৌজন্যে – উইকিপিডিয়া

এতক্ষণ একইভাবে বসেছিলেন মনে হল। আমার কথায় একটু চনমনিয়ে উঠে বললেন,

– বেটা, গতকাল বদরীনারায়ণ থেকে ফিরেছি। আজ এখানে বসে গঙ্গামাঈয়াকে প্রাণ ভরে দর্শন করছি। হরিদ্বারে থাকব দিন দশেক। পরে এখান থেকে চলে যাব রামেশ্বর দর্শনে।

সাধুবাবার মাথায় গেরুয়া পাগড়ি। সারা গালটায় যেন বকের পালক গোঁজা। টিকালো নাক। পরিধানে গেরুয়ার উপরে হয়তো কোনও ভক্তের দেয়া সাদা সোয়েটার, পায়ে শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে জুতো মোজা। বয়েসের ভারে চোখদুটো বসে বেরিয়ে এসেছে, ঝুনো নারকেলের মতো মুখের হনুদুটো। আমার মতো কুচকুচে নয়, অনেকটা ফরসা। জিজ্ঞাসা করলাম,

– বাবা, আপনি কোন সম্প্রদায়ের সাধু? আপনার ডেরা কথায় আর এখন বয়েসই বা কত হল আপনার?

মুখ দেখলেই বোঝা যায় সাধুবাবার হৃদয় ও মন প্রসন্নতায় ভরা। শিশুর মত হাসিমাখা মুখে বললেন,

– বেটা, ম্যায় তো গিরি সম্প্রদায়কা সন্ন্যাসী হুঁ। মেরা কহি ডেরা নেহি হ্যায়। বিন্ধ্যাচল পর্বতে মা বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির থেকে আরও খানিকটা এগিয়ে পাহাড়ের গায়ে ছোটো একটা আস্তানা আছে। সেখানেই থাকি পরমানন্দে। আমার একজন সেবক আছে, সেই-ই আমার দেখাশুনা করে। বেটা, এখন আমার বয়স হল অনেক, ১২০ বছর। দেখতে দেখতে ১০৮ বছর হয়ে গেল আমি গৃহ ছাড়া।

না চাইতে সাধুবাবা একটু বেশি কথা বলে ফেলায় বুঝে গেলাম একশো কুড়ি আমার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছেন। মুহুর্ত দেরি না করে বললাম,

– বাবা, কি এমন ঘটনা ঘটল যে ওইটুকু বয়েসে মা বাবা ভাই বোন আত্মীয় পরিজন সকলকে চিরকালের মতো পরিত্যাগ করে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়লেন? এতটুকু কষ্ট হল না আপনার অন্তরে?

আমার এ প্রশ্নে সাধুবাবার মুখখানা পলকে মলিন হয়ে উঠল। হাঁড়িতে ফুটন্ত চাল টিপলে ভাতের অবস্থাটা যেমন মেয়েরা যত ভালো বোঝে, তেমনটা আর কজনা বোঝে! আমি ভাতের কিছু বুঝি না তবে সাধুবিষয়ে কিঞ্চিৎ বুঝি। বুঝে গেলাম ঠিক ঠিক জায়গায় খোঁচাটা দিতে পেরেছি। মুহুর্তে নিজেকে সামলে নিয়ে বৃদ্ধ বললেন,

– বেটা, ওসব আমার ফেলে আসা জীবনের কথা, সন্ন্যাসজীবনে বলাটা অনুচিত। এতে সাধুমন বিচলিত হয়। ভজনে বিঘ্ন ঘটে। এমনি কোনও জিজ্ঞাসা থাকলে বল, উত্তর দিচ্ছি।

আমি ছাড়ার পাত্র নই। ঘর ছাড়ার কারণটা আমাকে জানতেই হবে। আমার উদ্ভাবন করা পদ্ধতিটা প্রয়োগ করলাম। খপ করে পা দুটো ধরে বললাম,

– বলুন না বাবা, কেন গৃহত্যাগ করলেন, বললে তো আপনার ক্ষতি তো কিছু হবে না। দয়া করে বলুন না বাবা!

পা দুটো ধরে সামনে একই ক্যাসেট বাজিয়ে চললাম। সাধুবাবা হাত দিয়ে আমার হাতদুটো সরিয়ে দিয়ে মলিন মুখে বললেন,

– বেটা, আমার বাড়ি ছিল হিমাচলপ্রদেশে। তখনকার দিনে আমাদের গাঁয়ে লেখাপড়ার কেউ ধার ধারতো না। আমার মা বাবা চাইত আমি লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হই। এটা সব বাবা মায়েরাই চায় এখন বুঝি। আমার আবার ওসবে মনমতি ছিল না। ‘লিখাপড়া’ আমার মোটেই ভালো লাগত না। এই না পড়ার জন্য ‘মেরা পিতাজিনে এক রোজ হামকো বহুত মারা’। মার খাওয়ার পর ভাবলাম, আমি না পড়লে তো এমন মার রোজই খেতে হবে। সুতরাং আমার পড়ার দরকার নেই, মার খাওয়ার দরকার নেই। বেড়িয়ে পড়লাম বাড়ি থেকে। তখন আমার বয়স বারো। আর ফিরে যাইনি বাড়িতে।

একটু থেমে বৃদ্ধ সাধুবাবা বললেন,

– বেটা, আসলে আমার জীবনপ্রবাহ বইবে গেরুয়া ধারায় তাই পড়াশুনাকে কেন্দ্র করে মারটা একটা উপলক্ষ মাত্র। আমাকে ঘর থেকে যেকোনও ভাবে বের করে আনাটাই ছিল ভগবানের একমাত্র লক্ষ্য। তাঁর উদ্দেশ্য বলতে পারিস সিদ্ধ হয়েছ। আর সংসারে থাকলে হয়ত বেটা অমানুষই হতাম।

কথা-কটা শেষ হতে জিজ্ঞাসা করলাম,

– বাবা, ঠিক যখন ঘর ছাড়লেন তখন মায়ের কথা মনে পড়ল না, ঘর ছাড়ার পরের দিনগুলোতে কি মায়ের কথা কখনও মনে পড়ত?

হর কি পেয়ারিতে সাধুবাবা বসে আছেন গঙ্গার দিকে মুখ করে, আমার মুখটা সাধুবাবার দিকে। এরই মধ্যে দেখলাম চোখদুটো জলে ভরে উঠেছে। সারাজীবন হাজার হাজার সাধুবাবাকে আমি মায়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছি। এমন কোনও সাধু সন্ন্যাসী জীবনে পাইনি মায়ের কথায় যার চোখে জল আসেনি। সন্তানের সঙ্গে মায়ের কি এমন, কোন এমন এক সূক্ষ্ম নাড়ির বন্ধন রয়েছে যে নির্বিকার নির্লিপ্ত গৃহত্যাগী সন্ন্যাসীরা মায়ের কথা ভুলতে পারে না, চোখ ভরে ওঠে জলে। সাধুবাবা এক ঝলক বয়ে যাওয়া গঙ্গার দিকে তাকালেন। পরে জলভরা চোখে বললেন,

– বেটা, ঠিক যে মুহুর্তে আমি বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়লাম নিরুদ্দেশের পথে, ঠিক সেই মুহুর্তে মায়ের কথা এতটুকুও মনে পড়েনি। মাকে মনে পড়লে হয়ত গৃহত্যাগ হত না। তখন বাবার রুদ্রমূর্তি আর সর্বাঙ্গে আঘাতের কথাই মাথার মধ্যে চক্কর খেয়েছে। এই ট্রেন, সেই ট্রেন করে ধাক্কা খেতে খেতে ১০৮ বছর আগে জঙ্গলে ভরা হরিদ্বারে এসে গঙ্গায় স্নান সেরে যখন পাড়ে বসলাম, তখন আমার মায়ের কথা আর মুখখানা প্রথম মনে পড়ল। বেটা, মায়ের কথা মনে পড়বে না, তাই কখনও হয়। কাঁদলাম, মনের দরজা খুলে প্রাণ ভরে কাঁদলাম কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে মনটা আমার কিছুতেই ফিরে যেতে চাইল না ফেলে আসা গ্রামে, মমতাময়ী মায়ের স্নেহভরা কোলে।

এতক্ষণ পর একশো কুড়ির দুচোখ বেয়ে টপটপ করে ঝরে পড়ল গঙ্গার মতো স্ফটিকধারা। ঠিক এই মুহুর্তে একটা ব্রেক নিয়ে চলে গেলাম অন্য প্রসঙ্গে। বললাম,

– বাবা, আপনার জীবনে এমন কোনও স্মরণীয় সুখ আনন্দ বা দুঃখের ঘটনা কি আছে, যা আজ পর্যন্ত স্মৃতি থেকে মুছে যায়নি।

এতক্ষণ একটা পোটলার মত কিছুর উপরে বসেছিলেন। ওতে কি আছে তা জানার কৌতূহল হয়নি। ওটার উপর থেকে নেমে নিচে বসলেন বেশ গুছিয়ে। চোখ দুটো বুজলেন। ভুরুটা একটু কোঁচকালেন। চলে গেলেন সুদূর অতীতে। শান্ত চোখে তাকালেন। বললেন,

– বেটা, বহু অলৌকিক ঘটনাই ঘটেছে আমার জীবনে, সেসব কথা বললে তোর বিশ্বাস হবে না। একটা ঘটনার কথা বলি শোন। তখন আমার বয়েস বছর চল্লিশ। মাথায় বেশ লম্বা জটা নেমেছে। গুরুজি দীক্ষার দিন একটা কথা বলেছিলেন, ‘তুই সাধু। সাধুরা কখনও ভিখ মাঙ্গে না। ভিখ মাঙ্গে ভিখারি। সমস্ত কার্যসিদ্ধির প্রধান অন্তরায় বা বাধাস্বরূপ হল অসহিষ্ণুতা। ওটা হবি না, তাহলে জাগতিক ও পারমার্থিক সবকিছুই তোর মিলবে।’ দীক্ষার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনও দিনও ভিক্ষে করিনি। একদিন জলন্ধরে একটা গ্রাম ছেড়ে চলেছি মাঠের মধ্যে দিয়ে। ছাতিফাটা রোদ। তখন বেলা আন্দাজ দুটো আড়াইটে। গ্রাম ছেড়ে চলেছি মাঠের ভিতর দিয়ে। চারিদিকে না আছে একটা মানুষ, না আছে মাইলের পর মাইল একটা গ্রাম। সকাল থেকে একমাত্র ভগবানের নাম ছাড়া এদেহে একটা দানা পড়েনি। দেখলাম মাঠের এক পাশে বেশ বড় একটা অশ্বত্থগাছ। গিয়ে বসে পড়লাম একটু বিশ্রাম নিতে। বসে থাকতে থাকতে একটু ঝিমুনি এল। হঠাৎ আমার সামনে একটা হনুমান আমাকে লক্ষ্য করে কিছু পাকা ফল আর দুটো ডাব ছুঁড়ে দিল। পরে গাছ থেকে নেমে আমার সামনে বসল মিনিটখানেক। তারপর কোথা থেকে কোথায় চলে গেল জানি না।

একটু থামলেন। দেখলাম আনন্দে আবার জলে ভরে উঠেছে বৃদ্ধের চোখদুটো। আমারও আনন্দে চোখদুটো জলে ভরে উঠল এমন ভাগ্যবান সাধুবাবার দর্শন ও স্পর্শ পেয়ে। কত ভাগ্য আমার! প্রণাম করলাম পায়ে মাথা ঠেকিয়ে। সাধুবাবা বললেন,

– বেটা, সে ঘটনার কথা আজও আমি ভুলতে পারিনি। অশ্বত্থগাছে হনুমান এল। আশেপাশে কোনও গ্রাম তো দূরের কথা, একটা গাছপালাও নেই। ভরদুপুরে পাকাপাকা সুমিষ্ট ফল আর পিপাসা মেটাতে দুটো ডাব হনুমানজি নিয়ে এলেন কোথা থেকে, একথা ভেবে আজও কোনও উত্তর পাইনি। ‘বেটা, গুরু কা বচন কভি ঝুট নেহি হোতা হ্যায়।’ অসহিষ্ণু হইনি। রামজি খাবার পাঠিয়ে দিলেন। মেরা বাচ্চা তুই বল, এযুগে এসব কথা কাউকে বললে বিশ্বাস করবে? ক্ষিদের জন্য অসহিষ্ণু হয়ে ভিক্ষা চাইলে খাবার কিছু জুটে যেত, তবে এইভাবে ভগবানের করূণালাভটা হত না।

Hanuman

মনে মনে বললাম, কেউ বিশ্বাস করুক বা না করুক, সাধুবাবা তোমার শিবশংকরের অন্তরে এসব কথায় এক চুল অবিশ্বাসের জায়গা নেই।

Show Full Article

2 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button