Mythology

ঈশ্বরের কৃপা পেতে তাঁকে ডাকার সঠিক নিয়ম জানালেন সাধুবাবা

এটুকুই বললেন। এতে বুঝে গেলাম সাধুবাবার যা অবস্থা তাতে স্পর্শদোষটা তাঁকে আর স্পর্শ করে না। এবার পূর্বকথার সূত্র ধরে বললাম,

– একটু আগে বলেছেন নিরামিষ আহার, যোগ আর কঠোর ব্রহ্মচর্যের জন্য আপনার এত বয়েসেও দেহে বয়েসের ছাপ পড়েনি। তাই জানতে ইচ্ছে করছে আপনি কি যোগী?


কথাটা শেষ হতেই সজোরে ঘাড় নাড়িয়ে বললেন,

– না না বেটা, আমি যোগী টোগী নই, আমার গুরুজিও যোগী ছিলেন না। তবে কিছু যোগ জানতেন, আমাকেও দিয়েছিলেন। সেটা খুব কঠিন কিছু নয় অথচ তার ফল অপরিসীম। যে প্রণালীতে মনের স্থিরতা আসে দ্রুত, মনের শক্তি বেড়ে যায় অফুরন্ত, বীর্যধারণের ক্ষমতা বাড়ে, দেহমনের উপর কামের প্রভাব কমে, দেহ ঠিক রেখে ক্ষুধার মাত্রা কমায়, দেহকে রোগমুক্ত রেখে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়, এমন অসংখ্য উপকারে আসে এবং নির্বিঘ্নে সাধনজীবনে চলা যায় যে সব যোগসাধনার দ্বারা, সেগুলিই গুরুজি শিখিয়েছিলেন জ্ঞান হওয়ার পর থেকে, বলতে পারিস ছোটবেলা থেকে।


আমি বললাম,

– বাবা, দয়া করে কয়েকটা যোগ শিখিয়ে দেবেন যেটা জীবনে চলার পথে যেমন কাজে লাগবে, তেমনই যদি কখনও সাধনভজনে মন যায় তখন সেটা ও পথেও খানিক কাজে লাগবে।

কথাটা শোনামাত্র বললেন,

– না না বেটা, ওসব আমি শেখাতে পারব না। নিজে কিছু শিখিনি তোকে শেখাব কেমন করে।

বুঝতে পারলাম সাধুবাবা এড়িয়ে যেতে চাইছেন। আমি একনজর চোখ ঘুরিয়ে চারপাশটা দেখে নিয়ে খপ করে পাৃদুটো ধরে বললাম,

– বাবা, সহজ প্রক্রিয়ার দুএকটা যোগ শিখিয়ে দিন যাতে চলার পথে অনেক কাজে আসে।

আমার এমন আবদারে একটু উত্তেজিত ও খানিকটা বিরক্ত হয়ে বললেন,

– বেটা, পরিপূর্ণ দেহে সন্তানলাভের জন্যে যেমন দিনের পর দিন স্বামীস্ত্রীর মিলনের পর মাতৃগর্ভে সন্তান এলেও আরও দশমাস অপেক্ষা করতে হয়। ঠিক তেমনই হল যোগপ্রক্রিয়া। তুই বললি আর আমি ‘ফটাক্সে’ বলে দিলাম আর ওমনিই সব হয়ে গেল, এ কি তুই ছেলেখেলা মনে করিস?

বলতে বলতে আমার হাতদুটো সরিয়ে দিলেন পা থেকে। মনে মনে ভাবলাম, যোগের সবকিছুই কঠিন এটা কখনও হতে পারে না। ভাবামাত্র আবার পায়ে দুটো হাত রেখে অনুরোধের সুরে বললাম,

– বাবা, সহজ প্রণালীর কয়েকটা যোগ শিখিয়ে দিন যেটা সংসারে কাজে লাগবে, সাধনেও কাজে লাগবে।

এবার বেশ বিরক্তির ভাব নিয়ে তাকিয়ে রইলেন অন্যদিকে মুখ করে। আমি পা থেকে হাতদুটো সরিয়ে নিলাম। সাধুবাবা এতক্ষণ আমার কথা মন দিয়েই শুনছিলেন, উত্তরও দিচ্ছিলেন। অন্য দিকে তাঁর মন ছিল না। এখন একবার এদিক আর একবার ওদিক করে দেখতে লাগলেন যাত্রীদের আনাগোনা। অকারণ সময় কাটাতে লাগলেন এইভাবে। কেটে গেল প্রায় মিনিটপনেরো। একটা কথাও বললেন না। আমার সঙ্গে কেউ নেই বলে ধৈর্য হারালাম না। সাধুবাবা কথা বলছেন না দেখে বললাম,

– কি বাবা, কি এমন অপরাধ করেছি যে মুখখানা অমন গোমড়া করে ঘুরিয়ে রেখেছেন? আপনার সঙ্গে কি স্বার্থের সম্পর্ক আছে যে আপনি আমার উপর রাগ করছেন? রাগ অভিমান তো বাবা স্বার্থের সম্পর্কে। আপনার মতো নির্লোভ নির্বিকার নির্লিপ্ত সংসারবন্ধনহীন অবধূতকে আপনার গুরুজি কি এই শিক্ষা দিয়েছেন যে কেউ কিছু জানতে চাইলে মুখ ঘুরিয়ে বসে থাকবে?

কথাটা শেষ হতে একেবারে কেউটে সাপের মতো ফণা তুলে ফুঁসলে ওঠার মতো সাধুবাবা বললেন,

– এ্যায় শালে কুত্তে কি বাচ্চে, তু গুরু উঠাকে বাত করতে হ্যায় কিঁউ? ভাগ শালে, যোগ শিখনে আয়া!

সাধুদের ধাত আমার জানা। রাগাতে যখন পেরেছি তখন ঠাণ্ডা হবে আপনা থেকে। আমি জানি, সাধুবাবা জানেন না, আশি বছরের এই বৃদ্ধ বহুকাল আগেই কাম ক্রোধ লোভ সব হজম করে ফেলেছেন। তাই ওসব কথায় পাত্তা না দিয়ে আমি আরও একটু খুঁচিয়ে দিলাম,

– বাবা, এখনও আপনার ভিতরে এত ক্রোধ তো সাধু হলেন কি করে?

একটু তাচ্ছিল্যের সুরে বললাম,

– গুরুজি আপনাকে যোগফোগ সাধনফাদন যা কিছু দিয়েছেন তা সবই দেখছি মিথ্যে। আসলে কি জানেন বাবা, আপনি জন্মের পর থেকে কখনও মাতৃস্নেহ পাননি বলে ওইভাবে গালি দিতে পেরেছেন। যে সন্তান প্রকৃতই মাতৃস্নেহ পেয়েছে তাদের ব্যবহার কখনও ওরকম হতে পারে না বলেই আমার বিশ্বাস।

আগুনে জল পড়ল। মুহুর্তে মুখভাবের আমূল পরিবর্তন হয়ে গেল। সোজাসুজি তাকালেন আমার চোখের দিকে। চোখদুটোয় দেখলাম দয়ার প্লাবন যেন বয়ে চলেছে। উথলে উঠেছে করুণালহরী। প্রশান্ত মধুরকণ্ঠে স্নেহবিগলিত সাধুবাবা মাতৃভাবে বললেন,

– বেটা, গুরুপরম্পরায় আগত এ যোগবিদ্যা চট করে কাউকে দেয়া যায় না। এ শাস্ত্র শিক্ষা বই পড়েও হয় না। তুই আমাকে আঘাত করে কথা বলেছিস শেখার আগ্রহে তাই কিছু মনে করিনি। তবে তোর আগ্রহ দেখে মুগ্ধ হয়েছি। যোগের কয়েকটা সহজ প্রণালী, কিছু মন্ত্র আর কৌশল তোকে শিখিয়ে দিচ্ছি, প্রতিদিন যদি করতে পারিস তাহলে অভীষ্ট কর্মে সিদ্ধিলাভ, সাধনভজনে উন্নতি আর সংসারে চলতে পারবি নির্বিবাদে সহজভাবে। তবে একটা শর্ত আছে। সংসারে থাকাকালীন এ বিদ্যা কাউকে শেখাতে পারবি না। যদি কখনও তুই গৃহত্যাগ করিস তাহলে এমন কাউকে দিবি যে প্রকৃতই সাধুসন্ন্যাসীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভক্তিশীল।

সাধুবাবার এ শর্তে নির্বিচারে রাজি হয়ে কথা দিলাম নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য। একইসঙ্গে বললাম,

– বাবা, কথায় আপনাকে আঘাত করেছি ঠিকই তবে অন্তর থেকে নয়। তবুও অমন কথা বলার অপরাধ ক্ষমা করে দেবেন।

ডানহাতটা অভয়সূচক করলেন। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে যোগের বিভিন্ন পদ্ধতি ও বিষয় দেখালেন, বোঝালেন যেগুলো অত্যন্ত সহজ। কয়েকটা মন্ত্রও দিলেন। চটপট সমস্ত বিষয়টা দেখে শুনে বুঝে ডায়েরিতে লিখে নিলাম। প্রণাম করলাম পায়ে মাথা ঠেকিয়ে। দক্ষিণা বাবদ দশটা টাকা দিতে গেলাম। কিছুতেই নিলেন না। জোর করে ধরাতে একটা টাকা চেয়ে নিলেন।

এবার বললাম,

– বাবা, আপনার গুরুপ্রদত্ত পরমধন দান করলেন অথচ দক্ষিণা তো কিছুই নিলেন না! অন্তত একবেলার মতো অন্নের পয়সাটা নিলেও আমি খুশি হতাম। যা দিলেন তার মূল্য কোনওভাবে, কোনও অর্থেই পরিশোধ্য নয় তবুও যদি নিতেন তাহলে…

কথাটা শেষ করতে দিলেন না। ডানহাতটা তুলে বাধা দেওয়ার ভঙ্গিতে সাধুবাবা বললেন,

– এই তো বেটা, ষোলোআনা তো নিলাম। ঠিকঠিক মেনে চললে তোর ও বিদ্যায় ষোলোআনাই কাজ হবে। যেটুকু নিলাম সেটুকুতে কাজ চলে যাবে। সংসারে যারা বেশি চায় তাদের ঝক্কি আর বোঝাও বইতে হয় বেশি। আমি সাধু। আমার বেশি দরকার নেই। প্রয়োজনটুকু মিটলেই হল। তুই দানের কথা বললি তো? বেটা, আমার কাছে তোর কোনও সুকৃতিতে যেটুকু প্রাপ্তি ছিল সেটুকুই তুই পেলি। এখানে দানের কোনও প্রশ্ন নেই। তবে কথা যখন উঠল তখন বলি, সাত্ত্বিক, রাজসিক ও তামসিক, দান তিন রকমের হয়, বুঝলি?

হ্যাঁ বা না কিছু বললাম না। হাঁ করে তাকিয়ে রইলাম সাধুবাবার মুখের দিকে। তিনি বললেন,

– অত্যন্ত গোপনে, কোনও কিছু পাওয়ার আশা না নিয়ে অর্থ মন বিদ্যা ধন বা অন্য যেকোনও বিষয় বা বস্তু দেয়াকে বলে সাত্ত্বিক দান।

জানতে চাইলাম,

– অন্য বিষয়গুলো তো বুঝলাম কিন্তু মন দানটা কি?

সাধুবাবা মাথা দোলাতে দোলাতে বললেন,

– অনাড়ম্বর হয়ে লোকচক্ষুর অন্তরালে একান্ত গোপনে গুরু বা ইষ্টের মন দিয়ে ভজন করাকেই মন দান বলে। প্রকৃত মনদানকারী প্রকাশ্যে কখনও ভুল করেও ভগবানের নাম উচ্চারণ করে না, বুঝলি?

কথাটা শেষ হতে বললাম,

– তাহলে বাবা গোপনে কোনও বিবাহিত নারী পরপুরুষকে, কুমারী তার ভাল লাগা মনের মানুষটিকে যদি দেহদান করে, তাহলে কি সেটা দান বলে গ্রাহ্য বা সাত্ত্বিক দান হবে না?

এ প্রশ্নে সাধুবাবা একটু নড়ে বসলেন। হাসির একটা ভাব ফুটে উঠল মুখে তবে হাসলেন না। বললেন,

– বেটা, বাহ্যত দেহদানটা সাত্ত্বিক দানের মধ্যে পড়ে না। ব্যাপারটা গোপনে হলেও দানকারীর অন্তরে থাকে কামতৃপ্তি পাওয়ার আশা। ‘এ দেহ তোমারই,’ অন্তর নিংড়ে তাঁর চরণে নিবেদন করা দেহকে বলে দেহদান। এ দানই সাত্ত্বিক দান। মানুষ হয়ে মানুষে দেহদান মনক্ষুধার তৃপ্তিবিশেষ এক আনন্দলাভ। এটা দানই নয়, দেহ দিয়ে কিছু লাভ। বেটা, তোদের বাংলার মহাপ্রভু গয়ায় শ্রীবিষ্ণুর পাদপদ্মে মনের সঙ্গে দেহটাও দান করেছিলেন। আর দ্বারকায় তো স্বয়ং দ্বারকাধীশ কৃষ্ণ মীরার নিবেদিত গোটা দেহটাই যে হজম করে ফেলেছিলেন, এটা তো তুই নিজেও জানিস!

মাথাটা নাড়লাম। সাধুবাবা বললেন,

– এটা তো গেল সাত্ত্বিক দানের কথা। রাজসিক দান কি? যে দানের পিছনে নাম যশ খ্যাতি প্রতিপত্তি বা আত্মপ্রতিষ্ঠালাভের কোনও একটা উদ্দেশ্য থাকে তাকে রাজসিক দান বলে। সংসার ও সমাজে দেখবি, কেউ মন্দির নির্মাণকল্পে দান করছে। অথচ পাথরের ফলকে তার নামের পাশেও লেখা টাকার অঙ্কে পাঁচ হাজার এক, কোনও দুঃখী মেয়ের বিয়ে কিংবা রোগগ্রস্তকে অর্থদান করছে সারা দুনিয়া জানিয়ে, এমন হাজারো দানের কথা শুনতে বা দেখতে পাবি চলার পথে। লোক দেখিয়ে কাঁড়ানাকাড়া বাজিয়ে কোনও কিছু দান করাটা রাজসিক দান। আর একটা তামসিক দান।

একটু থামলেন। কাঁচাপাকা দাড়িতে একবার ডানহাতটা বুলিয়ে নিয়ে বললেন,

– অন্তর থেকে আন্তরিকভাবে কোনও ইচ্ছা নেই অথচ চাপে পড়ে বা একান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বে যে দান মানুষ করে, সেটাকে তামসিক দান বলে। অতিমাত্রায় অনেক সময় অনেকের সঙ্গে পড়ে অনিচ্ছাসত্ত্বে আত্মসম্মান রক্ষার্থে দান করাটাও তামসিক দান। অতিমাত্রায় সাধনভজন করাটাকে বলে তামসিক ধর্ম।

প্রশ্ন করলাম,

– সদা সর্বদা ভগবানের নাম যদি কেউ করে তবে তামসিক ধর্ম হবে কেন? আপনাদের মতো সাধুসন্তরা বলছেন, শাস্ত্রকাররাও বলেছেন সবসময় তাঁর স্মরণ মনন ও অনুধ্যান করতে। এটাই যদি সত্য হয় তাহলে তাকে তামসিক ধর্ম বলবেন কেন?

উত্তরে সাধুবাবা বললেন,

– ঈশ্বরকে সব সময় অন্তরে ডাকতে হয়, তার জন্য বাহ্যিক আড়ম্বরের দরকার হয় না। অনেক সময় দেখবি খোল করতাল বাজিয়ে একদল লোক বাঁদরের মতো লাফিয়ে নৃত্য করে ভগবানের নাম করে, এটাকে তামসিক ধর্ম বলে। কারও মনে প্রকৃত ঈশ্বরীয় ভাবের উদয় হলে সে স্থির হয়ে যায়। কথা বলে না, বাঁদরের মতো লাফায়ও না। এসব লোক দেখানোর জন্য করে। অনিচ্ছায় ধর্মীয় কোনও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলে তবে তাদের তা তামসিক ধর্ম। অনেকের দেখবি বাপ মা কিংবা কোনও স্বজনবিয়োগে চোখে দুফোঁটা জল খুঁজে পাবি না। এদেরই দেখবি ভাগবতপাঠের আসরে ভাব গদগদ হয়ে ওঠে। চোখ বেয়ে নেমে আসে গঙ্গা গোদাবরী। এগুলোকেই বলে তামসিক ধর্ম। বেটা, ঈশ্বর নিজেই তাঁর সৃষ্ট নিয়মের অধীন, মানুষও তাই। ঈশ্বর যখন স্বয়ং নিয়মের অধীন, মানুষও যখন তাঁর অধীন তখন তাঁকে ডাকাটাও নিয়মের অধীন। তাঁকে ডাকতে হয় নিয়মে। জগৎ সংসারটাই চলছে নিয়মে সুতরাং নিয়মের বাইরে তাঁকে ডাকাটাও ধর্মের একটা তামসিক অঙ্গ।

কথা শেষ হতে জিজ্ঞাসা করলাম,

– বাবা, জপ করব বা ভগবানকে ডাকব, তার জন্যে আবার নিয়মের কি আছে?

এবার একটু উত্তেজিত কণ্ঠে সাধুবাবা শিরদাঁড়াটা টানটান করে বললেন,

– বেটা, সমস্ত ব্যাপারটা সময় বা নিয়মের অধীন না হলে মানুষ তো আর মানুষই থাকত না। কুকুরের মতো দিবালোকে প্রকাশ্যে মৈথুনরত হত। ভগবানকে ডাকলাম আর সঙ্গেসঙ্গে তাঁর কৃপা পেয়ে গেলাম, অত সহজ বস্তু তিনি নন, বুঝলি?

কথাবার্তা শুনে মনে হল এমন কিছু বলতে চাইছেন যা আমি ঠিক ঠিক জানি না বা কথার গূঢ় অর্থ ধরতে পারছি না। বললাম,

– বাবা, আপনার কথাটা ঠিক বুঝতে পারছি না। দয়া করে ভগবানকে ডাকার নিয়মটা একটু বলে দেবেন, কি ভাবে তাঁকে ডাকা উচিত বা ডাকতে হয়?

একথায়, উত্তেজিত ভাবটা মিলিয়ে গেল মুখ দেখে বুঝতে পারলাম। প্রশান্ত-কণ্ঠে বললেন,

– সারাদিন রাতে আমরা যে আহার করি তা নিয়মেই করে থাকি। তুই কি সব সব সময়েই খাস? অসুখ হলে এক শিশি ওষুধ কি একবারে ঢকঢক করে খেয়ে নিস? ওষুধ কিন্তু একটা অথচ ডাক্তারের বলা নিয়মানুসারে সারাদিনে ঠিকঠিক সময়ে নিয়ম করেই খাস, ঠিক কিনা বল? এক শিশি ওষুধ বা এক ডজন ট্যাবলেট একসঙ্গে একবারে খেলে যদি রোগ ভাল হয়ে যেত তাহলে ডাক্তাররা একবারেই খেতে বলত, তা তো বলে না। তাহলে ডাক্তাররা পাগল মনে করিস? তা তো নয়! ঠিক সেই রকম অধ্যাত্মবাদে উন্নতিতে, ভবরোগ দূর করতে প্রাচীন ঋষিরূপী ডাক্তাররা কিছু নিয়ম বেঁধে দিয়েছেন তাঁকে ডাকার জন্য। তার বাইরে গেলে ভবরোগযন্ত্রণা দূর হবে না। ভগবানকে ডাকা শব্দের অর্থ বুঝিস? শিব শিব, রাম রাম, কৃষ্ণ কৃষ্ণ করা নয়। গুরুপ্রদত্ত ইষ্টমন্ত্র নিয়মে জপ করাকেই বলে ভগবানকে ডাকা।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button