মকরসংক্রান্তি স্পেশাল : পাটিসাপটা – রেসিপি
তাওয়ায় ফেলে উল্টে পাল্টে নিতে হয়। মোলায়েম তুলতুলে লম্বা। ভিতরে রসালো পুরের স্বর্গীয় তড়কা। বলুন তো এখানে কার কথা বলা হচ্ছে?
তাওয়ায় ফেলে উল্টে পাল্টে নিতে হয়। মোলায়েম তুলতুলে লম্বা। ভিতরে রসালো পুরের স্বর্গীয় তড়কা। বলুন তো এখানে কার কথা বলা হচ্ছে? ঠিক ধরেছেন, বাঙালির অন্যতম মিঠে ‘ডেজার্ট’ ‘পাটিসাপটা’-র সংক্ষিপ্ত পরিচয় এটাই। মকরসংক্রান্তি বা পৌষ সংক্রান্তি। অর্থাৎ বাঙালির পিঠেপুলি উৎসব। সেই উৎসব অনেকটাই স্বাদহীন ‘পাটিসাপটা’-কে ছাড়া। তাবলে পাটিসাপটা যে শুধুমাত্র পৌষপার্বণেই পাতে দিতে হয় তার কোনও মানে নেই, মন যখন চায় তখনই বাড়িতে বানিয়ে নেওয়া যায় মনপসন্দ পাটিসাপটা। এখানে দেওয়া হল তার রেসিপি।
উপকরণ :
১০০ গ্রাম ময়দা, ৫০ গ্রাম সুজি, ৫০ গ্রাম চালের গুঁড়ো, ১৫০ গ্রাম পাটালির গুড়, ২৫০ মিলিলিটার দুধ, ২৫০ গ্রাম চিনি, গোটা নারকেল ১ টা, ৩-৪ টে মাঝারি আকারের সবুজ এলাচ, ১ চিমটে নুন, পরিমাণমত জল, বেগুনের মুখ থেকে কাটা বোঁটার অংশ
প্রণালী :
১. এলাচ তাওয়া বা চাটুতে অল্প শুকনো ভাজুন, ভাজা এলাচ মিহি করে গুঁড়ো করুন
২. নারকেল কুরে নিন, এরপর তাতে ১৫০ গ্রাম মত চিনি মেশান, হাত দিয়ে নারকেল কোরা ও চিনি ভালো করে চটকে মিশিয়ে নিন, এবারে আগুনে কড়াই বসান, কড়াই ভালমতো গরম হলে তাতে ঐ মিশ্রণ ঢালুন, খুন্তি দিয়ে ভালো করে মিশ্রণটিকে নাড়াচাড়া করুন, কোনোভাবে মিশ্রণ যেন পুড়ে না যায়, তাই নাড়াটা বন্ধ করলে হবে না, কিছুক্ষণ পর মিশ্রণে হাত দিয়ে দেখবেন তা আঠামতো বা চটচটে হয়েছে কিনা, চটচটে লাগলে বুঝবেন পুর তৈরি, মিশ্রণে উপর থেকে এলাচ গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়ে আগুনের আঁচ বন্ধ করে দিন, মিশ্রণটিকে ঠান্ডা হতে দিন
৩. কাঁচা দুধ একটা বড় পাত্রে জ্বাল দিন, দুধ ফুটে উঠলে তা একটু ঠান্ডা হতে দিন, ঈষৎ উষ্ণ দুধে প্রথমে চালের গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে ফেটাতে হবে, যেন গুঁড়োর দানা চেয়ে না থাকে, এরপর দিন সুজি, ভালো করে দুধ-চালের গুঁড়ো-সুজির মিশ্রণ মেশান, ১ চিমটে নুন দিন মিশ্রণে, ১০০ গ্রাম মতো চিনি ও পাটালি গুড় দিন, শেষে ময়দা দিয়ে ভালো করে মিশ্রণটিকে হাত দিয়ে মাখুন বা ফেটান, (কাঁচা মিশ্রণ জিভে দিয়ে স্বাদ দেখে নিতে পারেন, মিষ্টি কম লাগলে চিনি ও গুড় আরও দিতে পারেন)
৪. এবার তাওয়া আগুনের আঁচে গরম করুন ভালো করে, তাতে এক একটা পাটি সাপটার জন্য প্রতিবার ১ চামচ করে সাদা তেল দেবেন, তেল গরম হলে প্রতিবার বেগুনের বোঁটা দিয়ে তেল তাওয়ার চারদিকে লাগিয়ে নেবেন
৫. এবারে ১ হাতা/বড় চামচের ১ চামচ দুধ-চালের গুঁড়ো-সুজির মিষ্টি মিশ্রণ তেলে সাবধানে দিন, আগুনের আঁচ কমিয়ে দিন, নাহলে মিশ্রণের তলা পুড়ে যাবে, চামচ/হাতার উল্টো পিঠ দিয়ে মিশ্রণটিকে গোল করে তাওয়ার চারদিকে ছড়ান, খেয়াল রাখুন গোল অংশ খুব পাতলা হবে না, নচেৎ তা ছিঁড়ে যাবে, এবারে ঐ গোল মিশ্রণের মাঝ বরাবর লম্বা করে পরিমাণমতো নারকেলের পুরটা দিন
৬. খুন্তির মাথা দিয়ে গোল অংশের প্রথমে এক দিক ভাঁজ দিন, তার উপর ভাঁজ দিন ঠিক উল্টো দিকের প্রান্তের, পুর যেন চাপা পড়ে যায় ২ দিকের ঢাকার ভিতরে, আলতো করে সামনের দিক উলটে দিন, খুন্তি দিয়ে পেটের মাঝখানটা হালকা চেপে নামিয়ে নিন একের পর এক গরম নরম ‘পাটিসাপটা’, ব্যস আপনার জিভে জল আনা পাটিসাপটা তৈরি।