কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় যে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন সে জল্পনা অনেক আগে থেকেই রাজনৈতিক মহলে ভেসে বেড়াচ্ছিল। অবশেষে সেই জল্পনা বাস্তব হল। বিজেপিতে যোগ দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁরসঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন তাঁর বন্ধু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। চিরাচরিত অভ্যাস মেনে এদিনও দুজনেই একই রঙের পোশাক পরে দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে পৌঁছন। গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে আসেন হাল্কা সবুজ পোশাকে। শোভনের পরনে ছিল হাল্কা সবুজ পাঞ্জাবী। বৈশাখীর হাল্কা সবুজ শাড়ি। বিজেপি দফতরে তখন হাজির ছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়।
বিকেলে বিজেপির সদর দফতরে আনুষ্ঠানিকভাবে দলে যোগ দেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের দলে বরণ করে নেন মুকুল রায় সহ বিজেপি নেতারা। বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জেপি নাড্ডাও শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দলে স্বাগত জানান। শোভনবাবু জানান, বিজেপি দেশের উন্নতির জন্য কাজ করছে। তা দেখেই বিজেপিতে যোগদান করলেন তিনি। কোনও নেতিবাচক রাজনীতি তিনি করতে চান না বলেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে। অন্যদিকে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি তাঁকে দলে জায়গা দিয়েছে। বিজেপি যে কাজ দেবে তা তিনি করবেন। শোভনবাবু যখন মেয়র পদ ছাড়েন, মন্ত্রী পদ ছাড়েন তখন তিনি জানিয়েছিলেন শোভনবাবুর পাশে তিনি সবসময় থাকবেন। এদিন বিজেপিতে যোগদানও সেই অঙ্গীকারেরই ফল বলে বুঝিয়ে দেন বৈশাখী।
এদিন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বিজেপি সদর দফতরে তখন সেখানে উপস্থিত হন তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়। রীতিমত চমকে যান সকলে। কারণ বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত তৃণমূল ছেড়ে এদিন বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে একটা কানাঘুষো শোনা গেলেও দেবশ্রী রায় নিয়ে কোনও ইঙ্গিত কোথাও ছিলনা। ফলে তাঁকে বিজেপি দফতরে দেখে অবাক হন খোদ সাংবাদিকরাও। খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপিতে আনুষ্ঠানিক যোগদানের যে সময়, যা ছিল বিকেল সাড়ে ৪টে তা পার করে গেলেও যোগদান পিছতে থাকে। কেন পিছচ্ছে বা দেবশ্রী রায় কী এদিন যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে যেই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে। অবশেষে দেখা যায় দেবশ্রী রায় বিজেপিতে এদিন যোগদান করেননি। তাহলে কেন তিনি বিজেপি সদর দফতরে হাজির হলেন তা নিয়ে কিন্তু জল্পনা তুঙ্গে।
শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন একথা মোটামুটি ছড়িয়ে পড়ার পর তিনি যোগ দেওয়ার আগেই বিজেপি সাংসদ তথা দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান পশ্চিমবঙ্গে সরকার গড়তে গেলে, ক্ষমতায় আসতে গেলে যত নেতার দরকার তা তাঁদের দলে নেই। তাই তাঁদের তৃণমূল নেতাদের দলে নিতেই হবে। কারণ দলে নেতার দরকার রয়েছে।