ফ্রাইডে দ্যা থার্টিনথের রাতেই আজ ভূতচতুর্দশী
একা রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর। এমনই এক প্রবাদ যেন এদিনের জন্য ঠিক ঠাক মিল খায়। একে ফ্রাইডে দ্যা থার্টিনথ, তায় আবার ভূতচতুর্দশী।
ক্যালেন্ডার বলছে আজ ১৩ তারিখ এবং শুক্রবার। পাশ্চাত্যে যা ফ্রাইডে দ্যা থার্টিনথ নামে পরিচিত। অত্যন্ত অপয়া দিন হিসাবেই এই দিনটিকে বিচার করেন অনেকে।
আবার এ রাজ্যে আজ তিথি অনুযায়ী ভূতচতুর্দশী। কালীপুজোর আগের দিন ভূতচতুর্দশী দিয়েই শুরু হত বাঙালির দীপাবলি পালন। চতুর্দশীর সকালে বাড়িতে চোদ্দ রকম শাকের মিশ্রণ আসে বাজার থেকে। তারপর মধ্যাহ্নভোজনের পাতে শুরুতেই পড়ত চোদ্দশাক ভাজা। এর নানা ব্যাখ্যা ছিল।
অনেকে বলেন এদিন নাকি ‘তেনারা’ সন্ধের পর জাগ্রত হন। তাই ‘তাঁদের’ হাত থেকে দূরে থাকতে চোদ্দশাক, চোদ্দ বাতি আবশ্যিক। চতুর্দশী বলে দেওয়া হত ১৪টি বাতি। যে আলো বদআত্মাদের বাড়ি ও পরিবার থেকে দূরে রাখে বলে বিশ্বাস বহু মানুষের।
তাই বাঙালি জীবনে হ্যালোউইন হল এই ভূতচতুর্দশীই। সেই ভূতচতুর্দশী এবার পেয়েছে ত্র্যহস্পর্শ। একে ভূতচতুর্দশী, তায় আবার শুক্রবার এবং ১৩ তারিখ। অর্থাৎ ফ্রাইডে দ্যা থার্টিনথ।
ফ্রাইডে দ্যা থার্টিনথ কিন্তু প্রতি বছরই কোনও না কোনও মাসে পড়ে। যে মাসে পড়ে সেই মাসের শুরু হয় রবিবার দিয়ে। আর সেই ১৩ তারিখে অনেকেই বেড়াতে যাওয়া, কোনও ভাল কাজ করা, কোনও বড় কিছু কেনা যেমন গাড়ি, বাড়ি, দামি গয়না থেকে নিজেকে বিরত রাখেন, হোটেলের ১৩ নম্বর ঘর নেন না।
এমনকি বিয়ের দিন পড়লে ওইদিন বিয়ে করতে অনেকেই রাজি হন না। এমনিতেই ১৩ নম্বরটা নিয়ে মানুষের যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে। যা ভারতের চেয়ে পাশ্চাত্যের মানুষ আরও বেশি বিশ্বাসী।
বহুতলের ১৩ নম্বর ফ্লোর বড় একটা হয়না। সে জায়গায় ওই ফ্লোরের নম্বর হয় ১২ বি বা একেবারেই ১৩ নম্বরটা বাদ দিয়ে যাওয়া হয়। ১৩ তারিখ মানেই আনলাকি। ভাগ্য ওইদিন নাকি সহায় হয়না। এটাই অনেক মানুষের বিশ্বাস। তার সঙ্গে যদি ১৩ তারিখ শুক্রবার পড়ে তাহলে তা হয়ে দাঁড়ায় ফ্রাইডে দ্যা থার্টিনথ। যা ভয়ংকরতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
একাংশের চিন্তাবিদ মনে করেন ফ্রাইডে দ্যা থার্টিনথ এসেছে খ্রিস্টধর্মের শুরুর দিকে। প্রভু যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয় শুক্রবার। আর যে যিশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে সেই জুডাস ছিল সেই ব্যক্তি যে লাস্ট সাপার-এ ১৩ তম অতিথি হয়ে হাজির হয়েছিল।
এই ২ মিলেই তৈরি হয়েছে ফ্রাইডে দ্যা থার্টিনথ-এর মিথ। এই ফ্রাইডে দ্যা থার্টিনথ-এর রাত তাই এখন অনেকের কাছেই আতঙ্কের। ওটা কাটলে বাঁচা যায়। সেই ফ্রাইডে দ্যা থার্টিনথ-এর সঙ্গে এবার তিথি মেনে পড়েছে ভূতচতুর্দশী।