State

বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযানে ধুন্ধুমার, ১ জন মৃত বলে দাবি বিজেপির

বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ধুন্ধুমার হল শিলিগুড়িতে। ইট বৃষ্টি, অগ্নিসংযোগ করেন বিজেপি কর্মীরা। পাল্টা জল কামান, কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ।

কলকাতা : দক্ষিণের পর এবার উত্তর। হাওড়ার পর এবার শিলিগুড়ি। নবান্নের পর এবার উত্তরকন্যা। বিজেপির অভিযান ঘিরে ফের ধুন্ধুমার পরিস্থিতি সৃষ্টি হল সোমবার।

সোমবার বিজেপির ডাকে ছিল উত্তরকন্যা অভিযান। শিলিগুড়িতে সকাল থেকেই বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ভিড় জমতে থাকে। হাজির হন দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, সায়ন্তন বসু, নিশীথ প্রামাণিকের মত নেতারা।


দুপুর ২টো নাগাদ জলপাই মোড়ের কাছ থেকে মিছিল এগোয় উত্তরকন্যার দিকে। পুলিশও তৈরি ছিল। ৩ ধাপে ব্যারিকেড করা ছিল রাস্তায়।

প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যারিকেড দ্রুত ভেঙে এগিয়ে যেতে থাকেন বিজেপি কর্মীরা। তৃতীয় ধাপে ব্যারিকেড ছিল অনেক বেশি শক্তপোক্ত। ব্যারিকেড তৈরি হয়েছিল বাঁশ, কাঠ, গার্ডরেল দড়ি দিয়ে বেঁধে। তারপর দেওয়া ছিল প্লাইউড। যার গায়ে হড়হড়ে তরল দেওয়া ছিল।


বিজেপি কর্মীদের কয়েকজন প্রথমে সেই ব্যারিকেডে পৌঁছে প্লাইউডগুলি খুলে ফেলে দিতে থাকেন। ব্যারিকেডের অন্যধারে ঢাল ও ব্যাটন নিয়ে তৈরি ছিলেন পুলিশকর্মীরা। রাস্তার ২ ধারের বাড়ির দোতলা, ছাদে ছিলেন কাঁদানে গ্যাসের শেল হাতে পুলিশকর্মীরা। তৈরি ছিল জলকামান।

বিজেপি কর্মীরা ব্যারিকেড ধরে ঠেলতে শুরু করতেই প্রথমে জলকামান ছোঁড়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। তারপর শুরু হয় একের পর এক কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়া। জলকামানের তোড় ও কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় দ্রুত ছত্রভঙ্গ হতে থাকেন বিজেপি কর্মীরা। পিছু হটেন তাঁরা।

কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ফের কয়েক জন মহিলা কর্মী এগিয়ে এসে ব্যারিকেডের দড়ির বাঁধন খুলতে থাকেন। ফের শুরু হয় জলকামান ছোঁড়া ও কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া।

ফের বিজেপি কর্মীরা পিছু হটেন। এরপর পুলিশই ব্যারিকেড পার করে বিজেপি কর্মীদের দিকে এগোতে থাকে। পাল্টা বিজেপি কর্মীরা বৃষ্টির মত ইট ছুঁড়তে থাকেন পুলিশের দিকে। পুলিশও সেই ইট পাল্টা বিজেপি কর্মীদের দিকে ছুঁড়ে দিতে থাকে।

খুব ধীরে হলেও পুলিশ ক্রমশ বিজেপি কর্মীদের জমায়েতের দিকে এগোতে থাকে। কখনও ছুটে তো কখনও ধীর পায়ে হেঁটে এগোয় পুলিশ। এরমধ্যে আশপাশের গলি বা পেট্রোল পাম্পে ঢুকে পড়া বিজেপি কর্মীদের তাড়া করে একদল পুলিশ। কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়।

অন্যদিকে তখন বিজেপি কর্মীরা ইট বৃষ্টি অব্যাহত রেখেছেন। বাড়ির ছাদ থেকেও লুকিয়ে পুলিশের দিকে ইট ছোঁড়া হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যারিকেডের ভাঙা অংশে আগুনও ধরিয়ে দেন তাঁরা।

এভাবে প্রায় সাড়ে ৩টে পর্যন্ত চলার পর আস্তে আস্তে এলাকার দখল নেয় পুলিশ। গোটা এলাকা পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ হয়ে যায়। চালু হয় গাড়ি চলাচল। সাধারণ মানুষও রাস্তায় চলাফেরা শুরু করেন।

এদিকে এদিনের ধুন্ধুমার পরিস্থিতির মধ্যে তাঁদের ১ কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ওই বিজেপি কর্মীর গায়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল লাগে বলে দাবি করা হয়েছে। তাঁকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button